কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি: বিধানসভার বর্ধিত বাজেট অধিবেশনে (Extended Budget Session) অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Speaker Biman Banerjee) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসছে বিরোধীরা । অন্যদিকে শুক্রবার রাজ্যের শাসক দলের তরফ থেকে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি পালটা আস্থা দেখিয়ে প্রস্তাব জমা দেওয়া হল (No-confidence motion against Speaker)। অতএব একদিকে বিজেপি যখন দেখাতে চাইছে বিধানসভার অধ্যক্ষের প্রতি তাদের কোনও আস্থা নেই, ঠিক তখনই তৃণমূল কংগ্রেস প্রস্তাব এনে পালটা দেখাতে চাইছে যে তাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে স্পিকারের উপর ।
আগামী সোমবার থেকে রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal Assembly) বর্ধিত বাজেট অধিবেশন রয়েছে । সেই দিনই বিজেপির আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টি উত্থাপিত হবে রাজ্য বিধানসভায় । একই দিনে এ রাজ্যের শাসকদলের তরফ থেকে পালটা যে আস্থা প্রস্তাবনা হয়েছে সেটিও যাতে ওঠে সেই দাবি জানানো হয়েছে অধ্যক্ষের কাছে । শাসক দলের তরফ থেকে আনা প্রস্তাবে যেমন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি পূর্ণ আস্থা দেখানো হচ্ছে, একইভাবে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল যে প্রস্তাব নিয়ে এসেছে তার প্রতিও চরম অনাস্থা দেখানো হচ্ছে ।
প্রসঙ্গত অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টি সোমবার বিধানসভায় উত্থাপিত হওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী বিজেপির 30 জন বিধায়কের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক । তাহলেই এই অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হবে বলে জানা গিয়েছে । আর যদি সোমবার এই অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয়, তাহলে তা পরবর্তী 10 দিনের মধ্যে রাজ্য বিধানসভায় আলোচিত হবে বলে খবর ।
গত 13 ফেব্রুয়ারি বাজেট অধিবেশন চলাকালীন বিধানসভার সচিবালয়ে স্পিকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । এ বার সকলের চোখ ছিল বিরোধীদের আনা এই প্রস্তাব আদৌ গৃহীত হয় কি না । যতদূর জানা যাচ্ছে, 6 তারিখ অর্থাৎ সোমবার এই বিষয়টি বিধানসভায় উঠবে । আজ বিএ কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছে, একই দিনে তৃণমূলের আনা প্রস্তাবটিও বিধানসভায় উত্থাপন করা হবে । ওইদিন এই প্রস্তাব গৃহীত হলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানা গিয়েছে ।
এ দিকে, শুক্রবার তৃণমূলের আনা এই প্রস্তাব প্রসঙ্গে শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, এই মুহূর্তে বিজেপির বলার কিছু নেই । পরিষদীয় রীতিনীতি মেনে বিজেপি বিধানসভাকে ব্যবহার করতেই পারছে না । সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তারা বারবার অধ্যক্ষকে আক্রমণের পথ বেছে নিচ্ছে । তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছে ।
আরও পড়ুন: রাজ্যপালকে বেনজির আক্রমণ ! বিধানসভায় বিরোধীদের নিশানায় বোস
তবে কুণাল ঘোষের মতে, বিজেপির এই পদক্ষেপ হাস্যকর । তারা বাংলার উন্নয়নে নেই । যখন বিধানসভায় রেজোলিউশন হয়, বাংলার ন্যায্য প্রাপ্য বকেয়া আদায়ে সব দল একসঙ্গে দিল্লি গেলে ভালো হয়, বিজেপি সেখান থেকে 10 রকম কথা বলে পালিয়ে যায় । অর্থাৎ মানুষের কাজ, উন্নয়নের কাজ এ সবে নেই ৷ শুধু সস্তার রাজনীতিতে আছে বিজেপি । মূলত এরই পালটা হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস অবস্থান গ্রহণ করছে আর সেই অবস্থানকে প্রতিষ্ঠা করতেই পালটা প্রস্তাব নিয়ে আসছে এই রাজ্যের শাসক দল ।
অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এ প্রসঙ্গে বলেছেন, সাধারণত স্পিকার কোনও রাজনৈতিক দলের হন না । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের স্পিকার এই কারণেই বলা হচ্ছে, কারণ মাঝে মাঝে অধ্যক্ষের আচরণ তৃণমূল কংগ্রেসের বুথ সভাপতির মতো হয়ে যায় । স্পিকার দুদিন আগে একজন বিধায়ককে গ্রেফতার করা নিয়ে এক কথা বলার পর 48 ঘণ্টার মধ্যে ঘুরে গিয়ে 180 ডিগ্রি উলটো অবস্থান নেন ৷ আমার মনে হয় বর্তমান স্পিকারের নিজেরই নিজের উপর আস্থা নেই । তাই যতই তৃণমূল কংগ্রেস তাঁর জন্য আস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসুক, মানুষের অনাস্থা তাঁর এবং তাঁর দলের প্রতি ক্রমেই বাড়ছে ।