কলকাতা, 14 নভেম্বর: পরিবেশ কর্মীদের আশঙ্কাই সত্যি হল । চলতি বছরে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বাজির শব্দমাত্রা বাড়িয়েছে । আর তাতেই শব্দদানবের তাণ্ডব আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন পরিবেশবিদরা ৷ সেই আশঙ্কাই সত্যি হল ৷ কালীপুজো ও তার পরের দিন ঘটল তেমনটাই । সাইলেন্স জোনেই ফাটল দেদার শব্দ বাজি । বিকট শব্দের তাণ্ডব চলল লাগামহীন। শব্দ তাণ্ডব রুখতে কার্যত দেখা পাওয়া যায়নি পুলিশের । এমনটাই অভিযোগ পরিবেশ কর্মীদের। শুধু তাই নয়, পরিবেশ কর্মীদের একটা অংশের অভিযোগ, কলকাতার কয়েকটি হাসপাতালের ভিতরেও বাজি ফাটানো হয়েছে।
গত বছরের তুলনায় সামান্য কম ছিল এবারের কালীপুজোর দু'দিনের বায়ু দূষণ । তবে তা সবুজ বাজির কারণে নয় । পরিবেশ বিজ্ঞানী সোমেন্দ্র মোহন ঘোষের কথায়, গতবার দু'দিন ধরে বাজি ফাটানোর প্রভাব ছিল পরবর্তী দিন চারেক । কারণ ঠাণ্ডা । এবার ঠাণ্ডা কম ও রোদ উঠেছে। ফলে এবারের বাতাসের সূক্ষ ধুলিকণার পরিমাণ গতবারের সঙ্গে তুলনা করলে কম খানিকটা। আগামী বৃহস্পতি ও শুক্রবার বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে ফলে দূষণে অনেকটাই লাগাম পড়বে। গোটাটাই প্রাকৃতিক কারণে । কিন্তু শীত পড়তেই যে দূষণ বাড়তে থাকে সেটা লাগাম দিতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয় না। এই ব্যাপারে তৎপর হওয়া বেশি জরুরি ছিল।
তবে বাতাসে গতবারের তুলনায় দূষণ মাত্রা কিছুটা কমলেও, হলেও এবার নজির তৈরি হয়েছে শব্দবাজির তাণ্ডবে। পরিবেশ সংগঠনগুলির প্রতিনিধিরা গত দু'দিন কলকাতা ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছেন । কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালের ভিতরে কর্মীরা শব্দ বাজি ফাটিয়েছেন বলে তাঁদের অভিযোগ । আশপাশের সাইলেন্স জোনের কেউ তোয়াক্কা করেনি। আর সেই শব্দ দাপট ঠেকাতে কোনও পুলিশকে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ পরিবেশ কর্মীদের। তাদের কথায়, পুলিশ শুধু বেআইনি কিছু বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে। আর মাত্র কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে। সার্বিকভাবে মূল পরিবেশ বাঁচাতে যে কর্মকাণ্ড প্রয়োজন সেটা হয়নি ।
এই মুহূর্তে বিশ্বের বায়ু দূষণের নিরিখে দূষিত প্রথম ১০ শহরের তালিকায় কলকাতার নাম আছে । ফলে এখনই স্পষ্ট বলা যাচ্ছে না সবুজ বাজির ইতিবাচক প্রভাব ঠিক কতটা! বা তার জেরে দূষণ কতটা কমেছে । যদিও অনেকেই দাবি করছেন, সবুজ বাজির পাশাপাশি চোরাপথে দেদার চকলেট বোম, কালী পটকা, দোদমা এই ধরনের নিষিদ্ধ বাজিও ব্যাপক বিক্রি হয়েছে। সামনে ছট পুজোয় কী অবস্থা হয়, এখন সেদিকেই নজর পরিবেশ কর্মীদের।
আরও পড়ুন:
দূষণে চতুর্থ শহর কলকাতা! রাজধানী নিয়ে বাড়ছে চিন্তা
সবুজবাজির আড়ালে শব্দবাজি ফাটালে কী ব্যবস্থা? ধন্দে খোদ লালবাজার