কলকাতা, 9 নভেম্বর : হরিদেবপুর ডাকাতির ঘটনায় আরও 2জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ ৷ মামাবাড়িতে ডাকাতির সোনা এই দুই ব্যক্তিকেই বিক্রি করেছিল ঐন্দ্রিলা ৷ বৃহস্পতিবারই ঘটনার কিনারা করে ফেলে পুলিশ ৷ গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত ভাগ্নি ঐন্দ্রিলা রায়, তার দুই সাগরেদ পবিত্র দেবনাথ ও রূপম সমাদ্দারকে ৷
জামাতে লেগে থাকা বোনের রক্তের দাগ তাকে ফাঁসিয়ে দিতে পারে ৷ তাই ডাকাতির পর সাগরেদদের সঙ্গে ঐন্দ্রিলা চলে যায় বাইপাসের ধারে একটি শপিং মলে ৷ নতুন পোশাক কিনে পুরোনো পোশাকটি প্যাকেটে ভরে ফেলে সে ৷ সেখান থেকে গড়িয়া গিয়ে একটি ডাস্টবিনে ওই প্যাকেট ফেলে দেয় তারা ৷ ওই প্যাকেটটিও ইতিমধ্যে উদ্ধার করেছে পুলিশ ৷
ডাকাতির সোনা নিজেদের কাছে রাখা যাবে না ৷ সেগুলি বিক্রি করে দিতে হবে ৷ যেমন ভাবা, তেমন কাজ ৷ বোড়ালের সমরেশ দাস ও নেতাজিনগরের অঙ্কুশ অতুন্ডের সঙ্গে যোগোযোগ করে ঐন্দ্রিলা ৷ তাদের কাছে সোনা বিক্রি করে দেয় সে ৷ তদন্ত থেকে উঠে আসা তথ্যের উপর ভিত্তি করেই গতকাল সমরেশ ও অঙ্কুশকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷
ঐন্দ্রিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, ছোটো থেকেই পড়াশোনায় খুব ভালো সে ৷ দমদমের একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশের পর সোজা লরেটো ৷ তবে তারপর পড়াশোনা আর এগোয়নি ৷ বাবা হঠাৎই প্যারালাইজ়ড হয়ে পড়ায় ইতি টানতে হয় পড়াশোনায় ৷ তারপর বিয়ে করে নেয় সে ৷ কিন্তু বৈবাহিক জীবনও সুখের ছিল না তার ৷ কিছুদিনের মধ্যেই ছাড়াছাড়ি ৷ তারপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাজের জন্য ঘুরে বেড়িয়েছে ঐন্দ্রিলা ৷ এমনকি, এসকর্ট সার্ভিসেও কলগার্ল হিসেবে কাজ করেছে সে ৷
নিজের জীবনকে নতুন করে গুছিয়ে নিতে পাকাপাকিভাবে কানাডায় চলে যেতে চেয়েছিল ঐন্দ্রিলা । তার বাড়ি চম্পাহাটির সাহেবপুর ইস্টে । কিন্তু কানাডায় যাওয়ার জন্য প্রয়োজন 19 লাখ টাকা । তখনই মাথায় আসে পেশায় চিকিৎসক মামা অরূপ দাসের কথা । কয়েক দিন আগে হরিদেবপুরের ডায়মন্ড পার্কের আবাসনে মামার বাড়িতে যায় ঐন্দ্রিলা । মামাকে নিজের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে 19 লাখ টাকা চায় । কিন্তু অরূপবাবু জানিয়ে দেন, এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় । এরপরই পবিত্র ও রূপমকে নিয়ে মামাবাড়িতে ডাকাতির ছক কষে বছর চৌত্রিশের ঐন্দ্রিলা ।