কলকাতা, 31 ডিসেম্বর : এই ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকেই কলকাতায় স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে কোরোনার প্রতিষেধক কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল । এর জন্য প্রস্তুতও ছিল স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে । কিন্তু, ডিসেম্বর মাস শেষ হচ্ছে । অথচ, এখনও পর্যন্ত এই ট্রায়ালের জন্য এসটিএম-এ এসে পৌঁছয়নি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর অনুমতি । এই ট্রায়ালের জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি মিলেছে । তবে, আইসিএমআর-এর অনুমতি পাওয়ার জন্য এখনও আরও কতদিন অপেক্ষা করতে হবে, এই বিষয়ে স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন কর্তৃপক্ষ কিছু বুঝতে পারছে না বলেও জানা গিয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কোরোনার বিভিন্ন ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে। কোনও কোনও দেশে জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগের জন্য অনুমোদন-ও দেওয়া হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে কোরোনার ভাইরাস SARS-CoV-2-এর নতুন স্ট্রেইনের সংক্রমণের মধ্যেও কোরোনার ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে । এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে ভারত বায়োটেক এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি)-র যৌথ সহায়তায় তৈরি কোরোনা প্রতিষেধক কোভ্যাকসিন-এর তৃতীয় পর্যায়ের চলছে কলকাতায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এনটেরিক ডিজ়িজ়েস (নাইসেড)-এ । নাইসেড-এ এই ট্রায়াল শুরু হয়েছে দুই ডিসেম্বর । কোরোনার একটি ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি তৈরি হয়েছে রাশিয়ায় । জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পূর্ব ভারত তথা কলকাতার দুটি হাসপাতালে এই ভ্যাকসিনের থার্ড ফেজ়ের ট্রায়াল শুরু করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ।
এদিকে, ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকেই এসটিএম-এ কোরোনার প্রতিষেধক কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল । কোভ্যাকসিন এদেশে তৈরি হলেও, এই কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স) তৈরি হয়েছে অ্যামেরিকাতে । তবে, ডিসেম্বর মাস শেষ হচ্ছে । অথচ, এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য এখনও পর্যন্ত আইসিএমআর-এর অনুমতি এসে পৌঁছয়নি এসটিএম-এ । স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, পরিকল্পনা অনুযায়ী এসটিএম-এ 100 জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর এই কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু হত এই ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকেই । তবে, এর পরে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজ়েশন-এর তরফে সিরাম ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়াকে প্রোটোকলে কিছু পরিবর্তন আনার কথা বলা হয়েছে। এই পরিবর্তনের ফলে হয়ত 100 জনের বেশি স্বেচ্ছাসেবকের উপর এই কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু হবে। তবে, এই বিষয়ে এসআইআই কী করবে, এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য আদৌ এসআইআই আর এগোবে কি না, এই সব বিষয়ে কিছুটা হলেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, এসটিএম কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এই কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু করার জন্য এসআইআই যদি এগোয়, তা হলে তখন এসটিএম-এ শুরু হবে এই ট্রায়াল।
আরও পড়ুন : কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ় নিলেন ফিরহাদ
এসটিএম-এ কোরোনার ভ্যাকসিন কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু করার জন্য আইসিএমআর এবং রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি প্রয়োজন। এসটিএম সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি মিলে গিয়েছে। কিন্তু, আইসিএমআর-এর অনুমতি এখনও পাওয়া যায়নি । আইসিএমআর এবং এসআইআই-এর যৌথ উদ্যোগ এই ট্রায়াল হওয়ার কথা। এই ট্রায়ালের জন্য সিডিএসসিও থেকে ছাড়পত্র পেতে হবে। এর পরে অনুমতি দেবে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অফ ইন্ডিয়া । ধাপে ধাপে এই সব ছাড়পত্র না পাওয়া গেলে এসটিএম-এ কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়াল শুরু হবে না। এদিকে, এই কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়ালের জন্য প্রোটোকলে প্রথমে ছিল অ্যাক্টিভ কন্ট্রোলের বিষয়টি। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, এই প্রোটোকলে পরিবর্তন এনে অ্যাক্টিভ কন্ট্রোলের পরিবর্তে প্যাসিভ কন্ট্রোল করার জন্য এসআইআই-কে বলেছে সিডিএসসিও। প্রোটোকলে এই পরিবর্তনের জন্য এখনও পর্যন্ত সিডিএসসিও-কে এসআইআই কিছু জানিয়েছে কি না, এই বিষয়ে বুঝতে পারছে না এসটিএম কর্তৃপক্ষ। যে কারণে, এসটিএম কর্তৃপক্ষ বুঝতে পারছে না, কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়ালের জন্য আরও কতদিন অপেক্ষা করতে হবে।
এদিকে, সূত্রের খবর, এসটিএম-এ কোরোনার ভ্যাকসিন কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়ালে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে অংশগ্রহণের জন্য ইচ্ছাপ্রকাশ করে ইতিমধ্যে অনেকেই যোগাযোগ করেছেন। তবে, এই ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য এখনও যেহেতু অফিশিয়ালি কোনও অনুমতি মেলেনি আইসিএমআর-এর তরফে, সেই জন্য এসটিএম প্রস্তুত হওয়া সত্ত্বেও, সম্ভাব্য স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ওই আগ্রহীদের নাম নথিভুক্ত করতে পারছে না এসটিএম কর্তৃপক্ষ । তবে, এখনও অপেক্ষা চলছে, কবে মিলবে এই অনুমতি । কারণ, আইসিএমআর-এর ওই অনুমতি পাওয়ার পরেই কোভোভ্যাক্স (নোভাভ্যাক্স)-এর ট্রায়ালের জন্য সম্ভাব্য স্বেচ্ছাসেবকদের নাম নথিভুক্ত করার কাজ শুরু করে দেবে এসটিএম কর্তৃপক্ষ।