ETV Bharat / state

নিশ্চিন্তে ট্যাটু করাচ্ছেন? বিপদ ডেকে আনতে পারে হেপাটাইটিস

অসুরক্ষিত জায়গা থেকে ট্যাটু করালে ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস B । ফলে ট্যাটু করানোর সময়ও সতর্ক থাকা দরকার ।

ছবিটি প্রতীকী
author img

By

Published : Jul 29, 2019, 5:00 AM IST

কলকাতা, 29 জুলাই : নিশ্চিন্তে শরীরের কোথাও ট্যাটু করাচ্ছেন? ট্যাটু কিন্তু ডেকে আনতে পারে বিপদ । কেন? কারণ, এর জন্য লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে । শুধুমাত্র তাই নয় । লিভারে ক্যানসার, এমন কী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে । চিকিৎসকরা বলছেন, এধরনের বিভিন্ন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সচেতন হওয়া এখনই দরকার । তবে, শুধুমাত্র ট্যাটু নয় । সেলুনে দাড়ি কাটা, কোনও ইনজেকশন নেওয়া বা অপারেশন । সব ক্ষেত্রেই থেকে যায় এমন বিপদের সম্ভাবনা ।

কী ভাবে ঘটতে পারে এমন বিপদ?

হেপাটাইটিস B-এর সংক্রমণ । রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে হেপাটাইটিস B এবং C-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে । যা সিরোসিস অফ লিভার এবং ক্যানসারের কারণ হতে পারে । এ কথা জানিয়ে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "HIV সংক্রমণের জন্য যতটা রক্তের প্রয়োজন হয়, তার হাজার গুণেরও কম রক্তের প্রয়োজন হয় হেপাটাইটিস B সংক্রমণের জন্য । যত কাছের সম্পর্কই হোক না কেন, একজনের ব্যবহার করা ব্লেড বা সুচ যদি চামড়ার সংস্পর্শে এসে থাকে, অন্য জন যাতে এই ব্লেড বা সুচ ব্যবহার না করেন, তার জন্য সচেতন হতে হবে । তাছাড়াও দাড়ি কাটার সময় চোখে দেখতে না পাওয়া গেলেও অনেক সময় রক্তক্ষরণ হয় । তা থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে । সেই জন্য আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই ।" একই কথা বলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশিস দাসও । তাঁর মতে, "রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে যেহেতু হেপাটাইটিস B এবং C ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য এর ভাইরাস পার্টনার বা ম্যারেড কাপলের একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়াতে পারে । যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়াতে পারে । এছাড়াও কারোর অস্ত্রোপচার জীবাণুমুক্ত পরিবেশে না হলে হেপাটাইটিস B এবং C ছড়াতে পারে । অপারেশনের পাশাপাশি ইনজেকশন নেওয়ার সময় বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ ।"

জল বা খাবারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে হেপাটাইটিস A ও E

হেপাটাইটিস B ও C -র মতোই এই দুই ক্ষেত্রেও সংক্রমণ একই রকম ভাবে হয় । তবে, এই দুই ধরনের হেপাটাইটিস সাধারণত ক্রনিক অবস্থায় পৌঁছায় না । এবিষয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশিস দাস বলেন, "হেপাটাইটিস A ও E জলবাহিত । এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় । "

হেপাটাইটিস B ছড়ানোর আরেক মাধ্যম ট্যাটু । ইনকড্ লিখে সোশাল মিডিয়ায় ছাড়তে ভালো লাগলেও বিষয়টি নিয়ে ভাবনার দরকার বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা । এবিষয়ে দেবাশিসবাবু বলেন, "হেপাটাইটিস B অসুরক্ষিত জায়গা থেকে ট্যাটু করার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে । সেক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেওয়া দরকার ।" ট্যাটু আঁকার সময় পুরানো সুচ বাদ দিয়ে শিল্পীরা নতুন সুচ লাগায় কি না সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন ।

যে কোনও সিভিয়ার হেপাটাইটিসের কারণে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হয় । এক্ষেত্রে ভাইরাস যদি অ্যাকটিভ থাকে, তাহলে বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যে এই হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়তে পারে আক্রান্তের শরীর থেকে ।" এবিষয়ে দেবাশিসবাবু আরও বলেন, "হেপাটাইটিসের জন্য লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে । কারণ হেপাটাইটিস মানেই লিভারে প্রদাহ হচ্ছে । বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়লে হাত, চোখ বা স্কিন দেখে চিকিৎসকরা বলে দিতে পারেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ হয়েছে কি না । হেপাটাইটিসের লক্ষণ জন্ডিস । তবে, জন্ডিস মানেই যে হেপাটাইটিস, তা নয় । কারণ, অন্য কারণেও জন্ডিস হয় । হেপাটাইটিসের উপসর্গ হিসাবে জ্বর হতে পারে, খিদে না থাকতে পারে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে ।"

কী ভাবে বাঁচবেন হেপাটাইটিস B থেকে?

প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "হেপাটাইটিস B-র জন্য টিকা রয়েছে । জন্মের পরে দেওয়া হয় এই টিকা । সকলের এই টিকা নেওয়া দরকার । টিকা নেওয়ার একটা নির্দিষ্ট বয়স থাকে । তবে, যারা এই টিকা নেননি তাঁরা কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে হাই রিস্ক জ়োনে রয়েছেন । তাঁদেরও এই টিকা নেওয়া উচিত । আমি বলব, সকলের নেওয়া উচিত । কারণ, আমাদের এখানে সংক্রমণের হার এত বেশি । কোথা থেকে কী ভাবে সংক্রমণ হবে কিছু বলা যায় না । তবে, বড়দের টিকা নেওয়ার আগে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত তিনি হেপাটাইটিসের ভাইরাস বহন করছেন কি না । কারণ ভাইরাস বহন করলে এই টিকা আর কাজ করবে না ।"

কলকাতা, 29 জুলাই : নিশ্চিন্তে শরীরের কোথাও ট্যাটু করাচ্ছেন? ট্যাটু কিন্তু ডেকে আনতে পারে বিপদ । কেন? কারণ, এর জন্য লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে । শুধুমাত্র তাই নয় । লিভারে ক্যানসার, এমন কী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে । চিকিৎসকরা বলছেন, এধরনের বিভিন্ন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সচেতন হওয়া এখনই দরকার । তবে, শুধুমাত্র ট্যাটু নয় । সেলুনে দাড়ি কাটা, কোনও ইনজেকশন নেওয়া বা অপারেশন । সব ক্ষেত্রেই থেকে যায় এমন বিপদের সম্ভাবনা ।

কী ভাবে ঘটতে পারে এমন বিপদ?

হেপাটাইটিস B-এর সংক্রমণ । রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে হেপাটাইটিস B এবং C-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে । যা সিরোসিস অফ লিভার এবং ক্যানসারের কারণ হতে পারে । এ কথা জানিয়ে নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "HIV সংক্রমণের জন্য যতটা রক্তের প্রয়োজন হয়, তার হাজার গুণেরও কম রক্তের প্রয়োজন হয় হেপাটাইটিস B সংক্রমণের জন্য । যত কাছের সম্পর্কই হোক না কেন, একজনের ব্যবহার করা ব্লেড বা সুচ যদি চামড়ার সংস্পর্শে এসে থাকে, অন্য জন যাতে এই ব্লেড বা সুচ ব্যবহার না করেন, তার জন্য সচেতন হতে হবে । তাছাড়াও দাড়ি কাটার সময় চোখে দেখতে না পাওয়া গেলেও অনেক সময় রক্তক্ষরণ হয় । তা থেকেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে । সেই জন্য আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই ।" একই কথা বলেন কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশিস দাসও । তাঁর মতে, "রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে যেহেতু হেপাটাইটিস B এবং C ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য এর ভাইরাস পার্টনার বা ম্যারেড কাপলের একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়াতে পারে । যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়াতে পারে । এছাড়াও কারোর অস্ত্রোপচার জীবাণুমুক্ত পরিবেশে না হলে হেপাটাইটিস B এবং C ছড়াতে পারে । অপারেশনের পাশাপাশি ইনজেকশন নেওয়ার সময় বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ ।"

জল বা খাবারের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে হেপাটাইটিস A ও E

হেপাটাইটিস B ও C -র মতোই এই দুই ক্ষেত্রেও সংক্রমণ একই রকম ভাবে হয় । তবে, এই দুই ধরনের হেপাটাইটিস সাধারণত ক্রনিক অবস্থায় পৌঁছায় না । এবিষয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশিস দাস বলেন, "হেপাটাইটিস A ও E জলবাহিত । এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় । "

হেপাটাইটিস B ছড়ানোর আরেক মাধ্যম ট্যাটু । ইনকড্ লিখে সোশাল মিডিয়ায় ছাড়তে ভালো লাগলেও বিষয়টি নিয়ে ভাবনার দরকার বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা । এবিষয়ে দেবাশিসবাবু বলেন, "হেপাটাইটিস B অসুরক্ষিত জায়গা থেকে ট্যাটু করার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে । সেক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেওয়া দরকার ।" ট্যাটু আঁকার সময় পুরানো সুচ বাদ দিয়ে শিল্পীরা নতুন সুচ লাগায় কি না সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন ।

যে কোনও সিভিয়ার হেপাটাইটিসের কারণে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হয় । এক্ষেত্রে ভাইরাস যদি অ্যাকটিভ থাকে, তাহলে বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যে এই হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়তে পারে আক্রান্তের শরীর থেকে ।" এবিষয়ে দেবাশিসবাবু আরও বলেন, "হেপাটাইটিসের জন্য লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে । কারণ হেপাটাইটিস মানেই লিভারে প্রদাহ হচ্ছে । বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়লে হাত, চোখ বা স্কিন দেখে চিকিৎসকরা বলে দিতে পারেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ হয়েছে কি না । হেপাটাইটিসের লক্ষণ জন্ডিস । তবে, জন্ডিস মানেই যে হেপাটাইটিস, তা নয় । কারণ, অন্য কারণেও জন্ডিস হয় । হেপাটাইটিসের উপসর্গ হিসাবে জ্বর হতে পারে, খিদে না থাকতে পারে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে ।"

কী ভাবে বাঁচবেন হেপাটাইটিস B থেকে?

প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "হেপাটাইটিস B-র জন্য টিকা রয়েছে । জন্মের পরে দেওয়া হয় এই টিকা । সকলের এই টিকা নেওয়া দরকার । টিকা নেওয়ার একটা নির্দিষ্ট বয়স থাকে । তবে, যারা এই টিকা নেননি তাঁরা কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে হাই রিস্ক জ়োনে রয়েছেন । তাঁদেরও এই টিকা নেওয়া উচিত । আমি বলব, সকলের নেওয়া উচিত । কারণ, আমাদের এখানে সংক্রমণের হার এত বেশি । কোথা থেকে কী ভাবে সংক্রমণ হবে কিছু বলা যায় না । তবে, বড়দের টিকা নেওয়ার আগে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত তিনি হেপাটাইটিসের ভাইরাস বহন করছেন কি না । কারণ ভাইরাস বহন করলে এই টিকা আর কাজ করবে না ।"

Intro:কলকাতা, ২৮ জুলাই: নিশ্চিন্তে শরীরের কোথাও ট্যাটু করাচ্ছেন? কিন্তু, নিশ্চিতে থাকার এই কারণ বিপদ ডেকে আনতে পারে। কেন? কারণ, এর জন্য লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শুধুমাত্র তাই নয়। লিভারে ক্যান্সার, এমনকী মৃত্যুও হতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, এমন বিভিন্ন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, এ ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া ছাড়া অন্য আর কোনও উপায় নেই।
Body:তবে শুধুমাত্র ট্যাটু করানোর জন্য নয়। সেলুনে দাড়ি কাটাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রেও যেমন এই ধরনের বিপদ হতে পারে। তেমনই, কোনও ইনজেকশন নেওয়ার সময় অথবা, অপারেশনের ক্ষেত্রেও থেকে যায় এমন বিপদের সম্ভাবনা। কীভাবে ঘটতে পারে এমন বিপদ? কারণ, হেপাটাইটিস বি-এর সংক্রমণ। রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে হেপাটাইটিস বি এবং সি-র সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। এ কথা জানিয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "এইচআইভি সংক্রমণের জন্য যতটা রক্তের প্রয়োজন হয়, তার হাজার গুণেরও কম রক্তের প্রয়োজন হয় হেপাটাইটিস বি সংক্রমনের জন্য।" এই চিকিৎসক বলেন, "যত কাছের সম্পর্কই হোক না কেন, একজনের ব্যবহার করা ব্লেড বা সুচ যদি চামড়ার সংস্পর্শেও এসে থাকে, তা হলেও ‌অন্য জন যাতে এই ব্লেড বা সুচ ব্যবহার না করেন, তার জন্য সচেতন হতে হবে।"

জল বা খাবারের মাধ্যমে হেপাটাইটিস এ, ই ছড়িয়ে পড়ে। এই দুই ধরনের হেপাটাইটিস সাধারনত ক্রনিক অবস্থায় পৌঁছয় না। এই দুই ধরনের হেপাটাইটিস থেকে সিরোসিস অফ লিভার, ক্যান্সার হয় না। কিন্তু হেপাটাইটিস বি কিংবা সি সিরোসিস অব লিভার, ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। এই দুই ক্ষেত্রে সংক্রমণ একই রকম ভাবে হয়। এই জন্য সব সময় নতুন ব্লেড ব্যবহার করা উচিত। এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "দাড়ি কাটার সময় চোখে দেখতে না পাওয়া গেলেও অনেক সময় রক্তক্ষরণ হয়। হেপাটাইটিস বি ভাইরাস সংক্রমণের জন্য শুধুমাত্র অনেক কম রক্তের প্রয়োজন হয়, তা নয়। খুব কম এবং বেশি তাপমাত্রায় এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু, হেপাটাইটিস বি সংক্রমিত রক্ত এভাবে নষ্ট হয় না। অনেক কম পরিমাণ রক্তের মাধ্যমে সংক্রমণ হতে পারে। সেই জন্য আমাদের সচেতন হওয়া ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই।" কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক দেবাশিস দাস বলেন, "রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে যেহেতু হেপাটাইটিস বি এবং সি ছড়িয়ে পড়ে, সেজন্য এর ভাইরাস পার্টনার বা ম্যারেড কাপলের একজনের থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়াতে পারে, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়াতে পারে, জীবাণুমুক্ত পরিবেশে অপারেশন না হলে ছড়াতে পারে, অপারেশনের পাশাপাশি ইনজেকশন নেওয়ার সময় ছড়িয়ে পড়তে পারে।"

এই জন্য যে কোনও অপারেশন করানোর আগে হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া হয়। এ কথা জানিয়ে কলকাতা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এই চিকিৎসক বলেন, "হেপাটাইটিস বি ট্যাটু করার মাধ্যমেও ছড়াতে পারে, দাড়ি কাটার সময় ব্লেডের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।" তিনি বলেন, "যে কোনও সিভিয়ার হেপাটাইটিসের কারণে অনেক সময় রোগীর মৃত্যুও হতে পারে। হেপাটাইটিস বি কিছু ক্ষেত্রে ক্রনিক হেপাটাইটিস হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ভাইরাস যদি অ্যাকটিভ থাকে, তা হলে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে এই হেপাটাইটিস ছড়িয়ে পড়তে পারে আক্রান্তের শরীর থেকে।" এই চিকিৎসক বলেন, "হেপাটাইটিসের জন্য লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে। হেপাটাইটিস মানে লিভারে প্রদাহ হচ্ছে। এর ফলে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।বিলিরুবিনের মাত্রা বাড়লে হাত, চোখ বা স্কিন দেখে চিকিৎসকরা বলে দিতে পারেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ হয়েছে কি না। হেপাটাইটিসের লক্ষণ জন্ডিস। তবে, জন্ডিস মানেই যে হেপাটাইটিস, তা নয়। কারণ, অন্য কারণে জন্ডিস হয়। হেপাটাইটিসের উপসর্গ হিসাবে জ্বর হতে পারে, খিদে না থাকতে পারে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।"
Conclusion:রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে হেপাটাইটিস নির্ণয় করা হয়। এ কথা জানিয়ে চিকিৎসক দেবাশিস দাস বলেন, "হেপাটাইটিসের চিকিৎসার জন্য সেই অর্থে কোনও ওষুধ নেই। লিভারের জন্য কিছু ওষুধ রয়েছে। খাবারের কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এবং, রোগীকে বিশ্রামে থাকার কথা বলা হয়।" চিকিৎসক প্রান্তর চক্রবর্তী বলেন, "হেপাটাইটিস বি-র জন্য টিকা রয়েছে। জন্মের পরে দেওয়া হয় এই টিকা। যাঁরা বড়রা রয়েছেন, যাঁদের ছোটবেলায় এই টিকা নেওয়া হয়নি এবং, যাঁরা চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে হাই রিস্ক জোনে রয়েছেন, তাঁদের সকলের এই টিকা নেওয়া উচিত। আমি বলব, সকলের নেওয়া উচিত। কারণ, আমাদের এখানে সংক্রমণের হার এত বেশি যে কোথা থেকে কীভাবে সংক্রমণ ওই যাবে সেই বিষয়ে কিছু বলা যায় না।" তবে, বড়দের টিকা নেওয়ার আগে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত তিনি হেপাটাইটিসের ভাইরাস বহন করছেন কি না জানার জন্য। কারণ ভাইরাস বহন করলে এই টিকা আর কাজ করবে না বলেও জানিয়েছেন এই তিনি।

চিকিৎসক দেবাশিস দাস বলেন, "হেপাটাইটিস এ, ই জলবাহিত। হেপাটাইটিস বি, সি ছড়িয়ে পড়ে রক্ত এবং বডি ফ্লুইডের মাধ্যমে। হেপাটাইটিস ডি, যাকে ডেল্টা হেপাটাইটিস বলা হয়, এটা এখনও পর্যন্ত খুব বেশি সমস্যা তৈরি করে না। হেপাটাইটিস এ, বি এবং সি চিকিৎসকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। হেপাটাইটিস এ জল বাহিত হওয়ায় সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। তা ছাড়া এখন হেপাটাইটিস এ জনস্বাস্থ্যের সমস্যা নয়।" একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বিলিরুবিন তৈরি করে লিভার। প্রতিনিয়ত রক্তের লোহিত রক্তকণিকা নষ্ট হতে থাকে। এই রক্তকণিকায় যে হিমোগ্লোবিন থাকে, সেই হিমোগ্লোবিন থেকে বিলিরুবিন তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে লিভার। যদি কোনও কারণে লিভারের সমস্যা হয়, তা হলে এটা সেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তখন মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হওয়ার পরিবর্তে রক্তে মিশে যেতে থাকে বিলিরুবিন। বিলিরুবিনের মাত্রা বেড়ে গেলে বলা হয় জন্ডিস। আসলে হেপাটাইটিসের একটি লক্ষণ হচ্ছে জন্ডিস। তবে হেপাটাইটিস মানেই যে সব সময় জন্ডিস হবে, তাও নয়। আবার, অন্য কারণেও জন্ডিস হতে পারে। যেমন, ম্যালেরিয়ার জন্য রক্ত কণিকা ভেঙে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রেও জন্ডিস হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
________
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.