ETV Bharat / state

ট্যাবলেট খেলেই নামবে বিষ, সর্পদংশনে প্রাণ বাঁচাতে নয়া দিশা দেখাতে পারে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ - avs

ট্যাবলেট খেলেই কি নামবে বিষ, বাঁচবে সাপে কাটা রোগীর প্রাণ? এই ট্যাবলেট আর অ্যান্টি ভেনমের মেলবন্ধনেই কি সর্পদংশনের চিকিৎসায় খুলে যাবে নয়া দিগন্ত? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক ট্যাবলেটের ট্রায়াল শুরুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

ট্যাবলেট খেলেই নামবে বিষ, সর্পদংশনে বাঁচবে প্রাণ
ট্যাবলেট খেলেই নামবে বিষ, সর্পদংশনে বাঁচবে প্রাণ
author img

By

Published : Mar 25, 2021, 12:36 PM IST

কলকাতা, 24 মার্চ : সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় নয়া দিশা দেখাতে পারে ট্যাবলেট । ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এথিক্যাল কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর সেখানেই ট্রায়াল শুরু হতে পারে এই ট্যাবলেটের।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয় হাসপাতালে না পৌঁছনোয় অথবা দেরিতে পৌঁছনোর কারণে। সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন অ্যান্টি- ভেনম ইনঞ্জেকশন। একমাত্র হাসপাতালেই পাওয়া যায় এই অ্যান্টি ভেনম । এখন সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় ‘ভ্যারেসপ্ল্যাডিব’ নামের এক ট্যাবলেটের কথা বলা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য সহায়ক হতে পারে এই ট্যাবলেট। তবে বিষয়টি এমন নয় যে, অ্যান্টি ভেনমের প্রয়োজন নেই ৷ শুধুমাত্র এই ট্যাবলেট খেলেই সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচবে।

ওই ট্যাবলেটের ট্রায়াল শুরু করার জন্য কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে , তার মুখ্য গবেষক চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "প্রথমে এই ট্রায়ালে দেখা হবে, অ্যান্টি ভেনমের সঙ্গে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার করা হলে সেটা কতটা কাজ করছে। শুধুমাত্র অ্যান্টি ভেনম ব্যবহার করলে যতটা কাজ হয় , ট্যাবলেট আর অ্যান্টি ভেনম একসঙ্গে দেওয়া কি তার থেকে বেশি কাজ হচ্ছে ? যদি বেশি হয়, তা হলে বুঝতে হবে এই ট্যাবলেট কাজ করছে‌।"

আরও পড়ুন : সাপের ছোবলে বাড়ছে মৃত্যু, কোথায় দাঁড়িয়ে দেশ

এখন একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় অ্যান্টি ভেনম দিলেও রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, অন্য রাজ্য থেকে আসা যে অ্যান্টি ভেনম এখানে দেওয়া হচ্ছে, তাতে ওই রাজ্যের সাপের বিষের যে প্রোটিন সিকোয়েন্স, সেটা আমাদের রাজ্যের সাপের বিষের প্রোটিন সিকোয়েন্সের সঙ্গে মিলছে না। এ বিষয়ে চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই সমস্যা যদি এই ট্যাবলেটের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা যায়, তা হলে ভাল হবে।" তিনি আরও বলেন, "অনেক সময় সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে অনেক দেরি হয়। সেক্ষেত্রে বাড়িতে এই ট্যাবলেট থাকলে , যদি সেটা খাইয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং তারপর অ্যান্টি ভেনম দেওয়া হয়। তখন যদি দেখা যায়, হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হলেও ওই ট্যাবলেট খাওয়ানোর জন্য সাপের বিষের ক্ষতিকর প্রভাব কিছুটা কমানো সম্ভব হয়েছে, তাহলেও সেটা একটা ভাল দিক হবে।"

কোনও কোনও দেশে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল হয়েছে। অ্যান্টি-স্নেক ভেনমের সঙ্গে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার হয়েছে ওই ট্রায়ালে। তবে, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল শুরু করতে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এথিক্যাল কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন।

আরও পড়ুন : সাপে কাটলে কী করবেন ?

মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, COVID-19-এর সেকেন্ড ওয়েভের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কবে এথিক্যাল কমিটির বৈঠক হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অধীন সর্পাঘাত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রধান, চিকিৎসক দয়ালবন্ধু মজুমদার বলেন, "চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে রক্ত তঞ্চনের যে সমস্যা হয়, একমাত্র সেখানে অ্যান্টি ভেনমের সঙ্গে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার করা হলে কিছুটা কাছ করছে বলে আশা দেখা দিয়েছে । যদিও এখনও পর্যন্ত এই ট্যাবলেটের হিউম্যান ট্রায়াল কোথাও হয়নি।" একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যদি ট্রায়ালে দেখা যায় এই ট্যাবলেটের কার্যকারিতা বেশ ভাল, তা হলে অনেক সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হতে পারে।

এই ট্রায়ালের ফেসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার বলেন, "পূর্বাঞ্চলে এটাই একমাত্র কেন্দ্র যেখানে সাপের কামড়ের উপর এই ট্রায়াল হতে চলেছে। সব কিছু ঠিক চললে, আমাদের রাজ্যের এবং গোটা দেশের ক্ষেতে-খামারে খেটে-খাওয়া মানুষ এই ট্যাবলেটটি তাঁদের ঘরে রাখতে পারবেন, যেটাতে তাঁরা নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পাবেন।"

কলকাতা, 24 মার্চ : সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় নয়া দিশা দেখাতে পারে ট্যাবলেট । ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এথিক্যাল কমিটির অনুমোদন পাওয়ার পর সেখানেই ট্রায়াল শুরু হতে পারে এই ট্যাবলেটের।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু হয় হাসপাতালে না পৌঁছনোয় অথবা দেরিতে পৌঁছনোর কারণে। সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজন অ্যান্টি- ভেনম ইনঞ্জেকশন। একমাত্র হাসপাতালেই পাওয়া যায় এই অ্যান্টি ভেনম । এখন সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় ‘ভ্যারেসপ্ল্যাডিব’ নামের এক ট্যাবলেটের কথা বলা হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য সহায়ক হতে পারে এই ট্যাবলেট। তবে বিষয়টি এমন নয় যে, অ্যান্টি ভেনমের প্রয়োজন নেই ৷ শুধুমাত্র এই ট্যাবলেট খেলেই সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচবে।

ওই ট্যাবলেটের ট্রায়াল শুরু করার জন্য কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে , তার মুখ্য গবেষক চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "প্রথমে এই ট্রায়ালে দেখা হবে, অ্যান্টি ভেনমের সঙ্গে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার করা হলে সেটা কতটা কাজ করছে। শুধুমাত্র অ্যান্টি ভেনম ব্যবহার করলে যতটা কাজ হয় , ট্যাবলেট আর অ্যান্টি ভেনম একসঙ্গে দেওয়া কি তার থেকে বেশি কাজ হচ্ছে ? যদি বেশি হয়, তা হলে বুঝতে হবে এই ট্যাবলেট কাজ করছে‌।"

আরও পড়ুন : সাপের ছোবলে বাড়ছে মৃত্যু, কোথায় দাঁড়িয়ে দেশ

এখন একটা সমস্যা হচ্ছে, অনেক সময় অ্যান্টি ভেনম দিলেও রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, অন্য রাজ্য থেকে আসা যে অ্যান্টি ভেনম এখানে দেওয়া হচ্ছে, তাতে ওই রাজ্যের সাপের বিষের যে প্রোটিন সিকোয়েন্স, সেটা আমাদের রাজ্যের সাপের বিষের প্রোটিন সিকোয়েন্সের সঙ্গে মিলছে না। এ বিষয়ে চিকিৎসক পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় বলেন, "এই সমস্যা যদি এই ট্যাবলেটের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা যায়, তা হলে ভাল হবে।" তিনি আরও বলেন, "অনেক সময় সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে অনেক দেরি হয়। সেক্ষেত্রে বাড়িতে এই ট্যাবলেট থাকলে , যদি সেটা খাইয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় এবং তারপর অ্যান্টি ভেনম দেওয়া হয়। তখন যদি দেখা যায়, হাসপাতালে পৌঁছতে দেরি হলেও ওই ট্যাবলেট খাওয়ানোর জন্য সাপের বিষের ক্ষতিকর প্রভাব কিছুটা কমানো সম্ভব হয়েছে, তাহলেও সেটা একটা ভাল দিক হবে।"

কোনও কোনও দেশে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল হয়েছে। অ্যান্টি-স্নেক ভেনমের সঙ্গে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার হয়েছে ওই ট্রায়ালে। তবে, ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল শুরু করতে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এথিক্যাল কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন।

আরও পড়ুন : সাপে কাটলে কী করবেন ?

মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সূত্রে খবর, এখন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, COVID-19-এর সেকেন্ড ওয়েভের আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতির মধ্যে এই ট্যাবলেটের ট্রায়াল সংক্রান্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কবে এথিক্যাল কমিটির বৈঠক হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের অধীন সর্পাঘাত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রধান, চিকিৎসক দয়ালবন্ধু মজুমদার বলেন, "চন্দ্রবোড়া সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে রক্ত তঞ্চনের যে সমস্যা হয়, একমাত্র সেখানে অ্যান্টি ভেনমের সঙ্গে এই ট্যাবলেটের ব্যবহার করা হলে কিছুটা কাছ করছে বলে আশা দেখা দিয়েছে । যদিও এখনও পর্যন্ত এই ট্যাবলেটের হিউম্যান ট্রায়াল কোথাও হয়নি।" একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, যদি ট্রায়ালে দেখা যায় এই ট্যাবলেটের কার্যকারিতা বেশ ভাল, তা হলে অনেক সাপে কাটা রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হতে পারে।

এই ট্রায়ালের ফেসিলিটেটর স্নেহেন্দু কোনার বলেন, "পূর্বাঞ্চলে এটাই একমাত্র কেন্দ্র যেখানে সাপের কামড়ের উপর এই ট্রায়াল হতে চলেছে। সব কিছু ঠিক চললে, আমাদের রাজ্যের এবং গোটা দেশের ক্ষেতে-খামারে খেটে-খাওয়া মানুষ এই ট্যাবলেটটি তাঁদের ঘরে রাখতে পারবেন, যেটাতে তাঁরা নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রেহাই পাবেন।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.