কলকাতা, 2জানুয়ারি: নেতাইয়ে যেতে চান 7 জানুয়ারি, শহিদ দিবসের দিন। কলকাতা হাইকোর্টের কাছে অনুমতি চাইলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অনুষ্ঠানে যোগদান ঘিরে কোনওরকম সমস্যা বা অশান্তি চান না তিনি। এই আবেদন নিয়েই আদালতের দ্বারস্থ বিরোধী নেতা। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, শুভেন্দুর আবেদন মেনে নিয়েই চার তারিখ শুনানির আশ্বাস দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
গত বছর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশে নেতাই গণহত্যায় শহিদদের শ্রাদ্ধার্ঘ প্রদর্শনে গিয়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে আশ্বাস দেওয়ার পরও বিরোধী দলনেতার জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা করেনি পুলিশ বলে অভিযোগ। এবার যাতে সেই ঘটনার পুণরাবৃত্তি না হয়, তাই আগে থেকেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
2011 সালের 7 জানুয়ারি লালগড় ব্লকের নেতাই গ্রামে সাধারণ গ্রামবাসীদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল ৷ সিপিআইএম নেতা রথীন দণ্ডপাটের বাড়ি থেকে গ্রামবাসীদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনায় জখম হন 28 জন। তার মধ্যে মৃত্যু হয় 9 জনের। অনুজ পাণ্ডে, ডালিম পাণ্ডে, ফুল্লরা মণ্ডল, চণ্ডী করণ-সহ একাধিক সিপিএম নেতার নাম জড়ায় গুলি চালানোর ঘটনায় । নেতাই গণহত্যায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় ফেলে দেয় ৷
ঘটনার 3 বছর পর 2014 সালে গ্রেফতার হয় ফুল্লরা মণ্ডল। নেতাই গ্রামের বাসিন্দা ফুল্লরা তৎকালীন সময় সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন। মূলত ফুল্লরার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, জখমদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছিলেন তিনি। প্রথমে মামলার তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে 2013 সালে ঘটনার তদন্ত যায় সিবিআই-এর হাতে। 2014 সালে 20জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে কেন্দ্রের এই তদন্তকারী সংস্থা। 2022 সালে জামিন পান ফুল্লরা মণ্ডল ।
12 বছর আগের ঘটনা, তবে নেতাই বাসীর মনে স্মৃতি আজও দগদগে ৷ 2011 সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর 7 জানুয়ারি নেতাইয়ে শহিদ দিবস পালন করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়। নিয়ম মেনে শহিদ দিবস পালন হলেও নেতাইয়ে এই দিনটি ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে থাকে। বাংলার একসময়ের সবচেয়ে চর্চিত সেই গ্রাম এখনও যে রাজনৈতিক দলগুলির কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ , তা আরও একবার প্রমাণ হল শুভেন্দুর আবেদনে। সামনেই লোকসভা ভোট, পদক্ষেপে কোনওরকম খামতি রাখতে চাইছেন না বিরোধী নেতা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
আরও পড়ুন: