কলকাতা, 15 জানুয়ারি: সন্দেশখালির ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শেখ শাহজাহানের এখনও হদিশ পায়নি পুলিশ ৷ তবে আড়ালে থেকেই এ বার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন সন্দেশখালির দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা ৷ ইডির দায়ের করা মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন শেখ শাহজাহান ।
তাঁর বাড়িতে হানা দিতে গিয়েই ইডির আধিকারিকরা আক্রান্ত হয়েছিলেন । সেই ঘটনায় উলটে ইডির আধিকারিকদের বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল । কিন্তু এফআইআরের কপি হাতে না পাওয়ার জন্য হাইকোর্টে অভিযোগ জানিয়েছিল ইডি । সেই মামলায় এ বার যুক্ত হওয়ার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানালেন শেখ শাহজাহান ।
সোমবার ঘটনার কেস ডায়রি না আনায় হাইকোর্টের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে । বিচারপতি বলেন, এমন মামলায় কেস ডায়রি না দেখে কোনও অর্ডার দেওয়া যায় না । পুলিশ এতদিন ধরে কী করেছে সেটা কেস ডায়রি দেখেই বোঝা সম্ভব । আগামিকাল অবশ্যই পুলিশকে কেস ডায়রি আনতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ।
শেখ শাহজাহানের তরফে আইনজীবী আজ আদালতে মামলায় যুক্ত হওয়ার আবেদন জানালে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন, "আপনার মক্কেল কেন ধরা দিচ্ছেন না ? শুনানির সময় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা কেন করছেন ?" বিচারপতি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বলেন, "সৎ ভাবে বিচার পাওয়ার ইচ্ছে থাকলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুন ।"
অন্যদিকে, ইডির তরফে আইনজীবী এসভি রাজু বলেন, শংকর আঢ্য ও শেখ শাহজাহানের নাম পাওয়া যায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সূত্রে । রেশন দুর্নীতির আর্থিক নয়ছয়ের তদন্ত করতে গিয়ে এই দুটি নাম পাওয়া যায় । সেখানে তল্লাশিতে গেলে হামলা হয় ইডি অফিসারদের উপর। উলটে ইডি অফিসারদের বিরুদ্ধেই এফআইআর হয় । এই গোটা ঘটনার তদন্ত সিবিআইকে দেওয়ার আর্জি জানান তিনি । প্রথমে রেশন দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের হয় । পরে সেই তদন্ত হাতে নেয় ইডি । কিন্তু পুলিশ নথি না দিয়ে অসহযোগিতা করে বলে অভিযোগ ।
সন্দেশখালির ঘটনায় মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে এ দিন আদালতে জানান রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল । বিচারপতি জানতে চান, এখন কে তদন্ত করছে ? রাজ্য সরকার জানায়, ডিএসপি-র নেতৃত্বে স্থানীয় পুলিশ তদন্ত করছে । এ কথা শুনে বিস্মিত বিচারপতি বলেন, "তিন হাজার অভিযুক্ত, চারজন গ্রেফতার !" রাজ্যের যুক্তি, "তিন হাজার নয় । আটশো থেকে হাজার লোক অভিযুক্ত । ইডির অভিযোগ অনুযায়ী । ইতিমধ্যে প্রথম দায়ের এফআইআর স্টে করেছে বিচারপতি মানথার আদালত ।"
বিচারপতি জানতে চান, 307 ধারা কেন যোগ হয়নি ? এখনও কেন ন্যাজাট থানার পলিশকে তদন্তে রাখা হয়েছে ? এতদিনেও মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়নি । ইডির অভিযোগ, ঘটনার সময় শাজাহান বাড়িতে ছিলেন । সব ঘটনার পরে পুলিশ কি সেই বাড়িতে ঢুকেছিল ? রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, আহত ইডি অফিসাররা বলেছেন, তাঁদের ধাক্কা দেওয়া হয়েছিল । তাই 307 ধারা দেওয়া হয়নি । আগামিকাল ফের রাজ্যকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ কেস ডায়রি আদালতে হাজির করতে হবে ।
আরও পড়ুন: