ETV Bharat / state

"মেয়েটা সন্তানসম্ভবা; ওরা বলল, টিভি দেখো, হাসপাতাল খুললে এসো" - opd

NRS-এর মতো আর জি করে বন্ধ OPD পরিষেবা । বিনা চিকিৎসায় ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা ।

আর জি কর
author img

By

Published : Jun 12, 2019, 10:47 PM IST

Updated : Jun 13, 2019, 7:18 AM IST

কলকাতা, 12 জুন : কেউ ন'মাসের সন্তানসম্ভবা, কারও নার্ভের সমস্যা, কেউ আবার কিডনির সমস্যায় ভুগছেন । হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন । চাতক পাখির মতো তাকিয়ে । মনে একটাই প্রশ্ন কবে পাবে চিকিৎসা পরিষেবা ?

রবিবার NRS হাসপাতালে মহম্মদ সৈয়দ নামে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ভরতি হন । সোমবার দুপুরের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার একটি ইনজেকশন দেন । কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় সৈয়দের । মৃতের পরিবারের সঙ্গে বচসা শুরু হয় চিকিৎসকদের । পরে তা হাতাহাতিতে পৌঁছায় । এই ঘটনায় জখম হন পরিবহ মুখার্জি নামে এক জুনিয়র ডাক্তার । এর পরেই চরম উত্তেজনা ছড়ায় NRS চত্বরে । সব ওয়ার্ড থেকে কাজ ফেলে জুনিয়র ডাক্তাররা চলে আসেন । হাসপাতালের গেটের সামনে অবস্থানে বসেন । প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের OPD বন্ধের ডাক দেয় । আর তাতেই সমস্যায় ভুগছেন রোগী ও পরিজনরা ।

একই সমস্যায় ভুগছেন আর জি করের রোগী ও পরিজনরা । আজ সকাল থেকেই সেখানকার আউটডোরের গেট চেন ও তালা দিয়ে বন্ধ । যারাই চিকিৎসার জন্য আসছেন তাদেরই গেটের ওপার থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তাররা । শুধু চালু জরুরি পরিষেবা । কিন্তু সেখান থেকেও রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ।

এক রোগীর স্বামী বলেন, "এমার্জেন্সিতে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলাম । তারা দেখবে না । বলল, এমার্জেন্সিতে কোনও রোগীকে দেখবে না । আমরা গ্রাম থেকে এসেছি । এখন কী করব বলুন ? কোথায় যাব?"

মেয়েকে ডেলিভারি এমার্জেন্সিতে ভরতি করাতে এসেছিলেন এক মহিলা । তিনি বলেন, "আমরা এমার্জেন্সি রোগী নিয়ে এসেছি । ভরতি নিচ্ছে না । এমার্জেন্সি ডেলিভারিতে নিয়ে এসেছিলাম । এবার ফিরে যেতে হচ্ছে । ওরা বলছে, টিভি দেখো, যখন খুলবে তখন এসো ।"

কবে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক হবে ? এবিষয়ে এখনও কেউ স্পষ্টভাবে কিছু বলছে না । তবে, আর জি করের এক জুনিয়র ডাক্তার নীহারেন্দু মাল বলেন, "এটা তো কর্মবিরতি নয় । আমাদের এক বন্ধু অসুস্থ হয়েছে । আমরা তার জন্য শোক পালন করছি । আত্মীয়দের কিছু হলে সবাই তো শোক পালন করে । আমরাও করছি । আমাদের একটাই দাবি, উপযুক্ত নিরাপত্তা । "

নীহারেন্দু বলেন, "আমাদের ডাক্তার না ভেবে একবারের জন্য মানুষ ভেবে দেখুন । তাহলে এই পরিস্থিতির কারণটা বুঝতে পারবেন ।"

কলকাতা, 12 জুন : কেউ ন'মাসের সন্তানসম্ভবা, কারও নার্ভের সমস্যা, কেউ আবার কিডনির সমস্যায় ভুগছেন । হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন । চাতক পাখির মতো তাকিয়ে । মনে একটাই প্রশ্ন কবে পাবে চিকিৎসা পরিষেবা ?

রবিবার NRS হাসপাতালে মহম্মদ সৈয়দ নামে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ভরতি হন । সোমবার দুপুরের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার একটি ইনজেকশন দেন । কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় সৈয়দের । মৃতের পরিবারের সঙ্গে বচসা শুরু হয় চিকিৎসকদের । পরে তা হাতাহাতিতে পৌঁছায় । এই ঘটনায় জখম হন পরিবহ মুখার্জি নামে এক জুনিয়র ডাক্তার । এর পরেই চরম উত্তেজনা ছড়ায় NRS চত্বরে । সব ওয়ার্ড থেকে কাজ ফেলে জুনিয়র ডাক্তাররা চলে আসেন । হাসপাতালের গেটের সামনে অবস্থানে বসেন । প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের OPD বন্ধের ডাক দেয় । আর তাতেই সমস্যায় ভুগছেন রোগী ও পরিজনরা ।

একই সমস্যায় ভুগছেন আর জি করের রোগী ও পরিজনরা । আজ সকাল থেকেই সেখানকার আউটডোরের গেট চেন ও তালা দিয়ে বন্ধ । যারাই চিকিৎসার জন্য আসছেন তাদেরই গেটের ওপার থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তাররা । শুধু চালু জরুরি পরিষেবা । কিন্তু সেখান থেকেও রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ।

এক রোগীর স্বামী বলেন, "এমার্জেন্সিতে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলাম । তারা দেখবে না । বলল, এমার্জেন্সিতে কোনও রোগীকে দেখবে না । আমরা গ্রাম থেকে এসেছি । এখন কী করব বলুন ? কোথায় যাব?"

মেয়েকে ডেলিভারি এমার্জেন্সিতে ভরতি করাতে এসেছিলেন এক মহিলা । তিনি বলেন, "আমরা এমার্জেন্সি রোগী নিয়ে এসেছি । ভরতি নিচ্ছে না । এমার্জেন্সি ডেলিভারিতে নিয়ে এসেছিলাম । এবার ফিরে যেতে হচ্ছে । ওরা বলছে, টিভি দেখো, যখন খুলবে তখন এসো ।"

কবে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক হবে ? এবিষয়ে এখনও কেউ স্পষ্টভাবে কিছু বলছে না । তবে, আর জি করের এক জুনিয়র ডাক্তার নীহারেন্দু মাল বলেন, "এটা তো কর্মবিরতি নয় । আমাদের এক বন্ধু অসুস্থ হয়েছে । আমরা তার জন্য শোক পালন করছি । আত্মীয়দের কিছু হলে সবাই তো শোক পালন করে । আমরাও করছি । আমাদের একটাই দাবি, উপযুক্ত নিরাপত্তা । "

নীহারেন্দু বলেন, "আমাদের ডাক্তার না ভেবে একবারের জন্য মানুষ ভেবে দেখুন । তাহলে এই পরিস্থিতির কারণটা বুঝতে পারবেন ।"

Intro:কলকাতা, 12 জুন: নীলরতন সরকার কলেজে জুনিয়র চিকিৎসকের উপর আক্রমণের ঘটনার প্রতিবাদে অন‍্যান‍্য সরকারি মেডিক্যাল কলেজের মতোই শ‍্যামবাজার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আজ সকাল থেকেই আউটডোর পরিষেবা বন্ধ। গতকাল বিকেল থেকেই কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। সবমিলিয়ে আজ চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না আরজি কর হাসপাতালে। সকাল থেকেই ফিরে যাচ্ছেন বহু রোগী। কেউ 9 মাসের সন্তানসম্ভাবা, কেউ নার্ভের সমস‍্যা, কেউ কিডনির সমস‍্যা নিয়ে চিকিৎসা না পেয়েই ফিরে যাচ্ছেন। এমার্জেন্সি পরিষেবা চালু থাকলেও বাইরে দাঁড়ানো নিরাপত্তারক্ষীলেরই রোগীদের স্ক্রিনিং করতে দেখা গেল। ক্রিটিক্যাল রোগীরা পরিষেবা পেলেও, নিরাপত্তারক্ষীদের স্ক্রিনিংয়ে পাশ না করে ফিরে যেতে হচ্ছে এমার্জেন্সিতে আসা বহু রোগীকে।




Body:আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে যাওয়ার গেটটা চেন ও তালা দিয়ে বন্ধ। সেই গেটে আসা রোগীদের গ্রিলের ওপার থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ভিতরে আউটডোরের সামনে তাঁরা জমায়েত করে রয়েছেন। তবে, এটা কর্মবিরতি নয়, শোকপালন। এমনই বললেন এক জুনিয়র চিকিৎসক। তিনি বলেন, "আমরা কর্মবিরতি বলে আলাদা কিছু ভেবে দেখিনি। আমরা শুধু আমাদের এক বন্ধুর অসুস্থতা হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা এটার তীব্র নিন্দা করে শুধু একটু শোকপালন করছি। আমরা আমাদের দাবি জানিয়ে দিয়েছি। আমরা এখানে আলাদা করে বসেছি মানে এই নয় যে এন আর এস আলাদা করছে, আর আমরা আলাদা। আমরা সবাই একসাথে। ওখানে সম্মিলিত দাবি পেশ করা হয়ে গেছে, সেগুলোই আমাদের দাবি। দোষীদের শাস্তি চাই। আমাদের নির্দিষ্ট একটা প্রপার সিকিউরিটি দরকার। নাহলে আমরা কী করে এইভাবে সার্ভ করব? আমরা তো ডাক্তার, আমরা অবশ্যই পেশেন্ট দেখব। কিন্তু, আমরাও তো মানুষ। আমাদের মানুষ হিসাবে ভাবুন।"

কর্মবিরতি বা শোকপালন, এই সময় কোনও মুমূর্ষ রোগী এলে কি তাকে ফিরেয়ে দেওয়া হবে? কতদিন চলবে এই কর্মবিরতি? উত্তরে ওই জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, "যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের দাবি মিটছে ততক্ষণ। আমরা তো আমাদের একটা ছোট্ট দাবি রেখেছি। আমাদেরকে এখন শুধু মানুষ হিসাবে ভাবুন। কেন এখন ডাক্তার হিসাবে আলাদা দায়বদ্ধতা নিতে বলছেন? আমাদের যদি কোনও নিকট আত্মীয়ের কিছু হয় তখন আমরা বলি। আমাদেরও একজন নিকট আত্মীয় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়েছেন, যেটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না।"

অন‍্যদিকে, সকাল থেকেই ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা। আউটডোরের একদিকের গেট তালাবন্ধ, অন‍্যদিকে ব‍্যারিকেড করে অবস্থানে জুনিয়র চিকিৎসকরা। যে কেউ আউটডোরে যেতে চাইছেন তাঁদের সবাইকেই আউটডোর বন্ধ, যবে খুলবে তবে আসবেন বলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা রোগীদের। শুধু আউটডোর নয়। বন্ধ এমার্জেন্সি ছাড়া অন‍্য বাকি পরিষেবাও। রিপোর্ট নেওয়া, অপারেশন, ডেলিভারি এমার্জেন্সিতে ভর্তি সহ বহু পরিষেবা বন্ধ। শুধুমাত্র যাঁরা ইতিমধ্যেই ভরতি আছেন তাঁদের চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

এক বৃদ্ধা মিনতি সরকার বলেন, "আমার ছেলের বৌয়ের পা ভেঙেছে। গতকাল হাবরা হাসপাতাল থেকে এখানে রেফার করে। বিকেলে নিয়ে এসেছি। এখানে বলল যে, বন্ধ। এখনও পর্যন্ত চিকিৎসা হয়নি। কী করব? ডাক্তার ছাড়া তো হবে না। আমরা গরীব মানুষ, আমাদের পয়সা নেই।" রাজারহাটের কাঞ্জিলা বিবি বলেন, "আমি থ‍্যালাসেমিয়ার রিপোর্ট নেব বলে এসেছিলাম। বলছে আজকে হবে না। বন্ধ আছে। বলছে তো হবে না। বাড়ি যেতে হবে, আবার শনিবারে আসতে হবে।" ভাঙর থেকে আসা এক বয়স্কা মহিলা বলেন, "আমি নার্ভের ডাক্তার দেখাই। তারপরে প্রেসার, সুগার, থাইরয়েড দেখাই। এবার নার্ভের অসুবিধে হবে।"

এমার্জেন্সির বাইরে নিরাপত্তারক্ষাদের স্ক্রিনিংয়ে ফেরত আসা এক রোগীর স্বামী বলেন, "এমার্জেন্সিতে নিয়ে এসেছিলাম। তারা দেখবে না। বলল, কোনও এমার্জেন্সি পেশেন্ট দেখবে না। প্রচণ্ড বমি, কাশি। যা খাচ্ছে বমি হয়ে পড়ে যাচ্ছে। আমরা গ্রাম থেকে এসেছি। এখন কী করব বলুন। দেখি এখন ভেবেচিন্তে কী করি, কোথায় যাব?" এক 9 মাসের সন্তানসম্ভবা জানান, তিনি তাঁর মাসিক চেক আপের জন্য আউটডোরে দেখাতে এসেছিলেন। কিন্তু, আউটডোর বন্ধ থাকায় তাঁর চেক আপ হয়নি। তিনি আবার পরের সপ্তাই আসবেন‌। মেয়েকে ডেলিভারি এমার্জেন্সিতে ভর্তি করাতে আসা এক মহিলা বলেন, "আমরা এমার্জেন্সি রোগী নিয়ে এসেছি। ভর্তি নিচ্ছে না। এমার্জেন্সি ডেলিভারিতে নিয়ে এসেছিলাম। এবার ফিরে যেতে হচ্ছে। ভর্তি তো নিচ্ছে না এখানে। ওরা বলছে, টিভি দেখ, যখন খুলবে তখন এসো।"


Conclusion:এই ভাবেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আসা রোগীদের। কেউ কেউ রাত থেকে এসে বসে রয়েছেন, কেউ সকাল থেকে অপেক্ষা করছে। কিন্তু মিলছেনা চিকিৎসা পরিষেবা। বন্ধু বিভিন্ন ধরনের টেস্ট করানোর পরিষেবাও। ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে চিকিৎসা না পাওয়া রোগীদের মনে। কেউ কেউ আবার মন্তব্য করছেন, একজনের জন্য কেন এত লোকের শাস্তি হবে?
Last Updated : Jun 13, 2019, 7:18 AM IST

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.