কলকাতা, 12 জুন : কেউ ন'মাসের সন্তানসম্ভবা, কারও নার্ভের সমস্যা, কেউ আবার কিডনির সমস্যায় ভুগছেন । হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন । চাতক পাখির মতো তাকিয়ে । মনে একটাই প্রশ্ন কবে পাবে চিকিৎসা পরিষেবা ?
রবিবার NRS হাসপাতালে মহম্মদ সৈয়দ নামে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তি ভরতি হন । সোমবার দুপুরের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ডাক্তার একটি ইনজেকশন দেন । কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয় সৈয়দের । মৃতের পরিবারের সঙ্গে বচসা শুরু হয় চিকিৎসকদের । পরে তা হাতাহাতিতে পৌঁছায় । এই ঘটনায় জখম হন পরিবহ মুখার্জি নামে এক জুনিয়র ডাক্তার । এর পরেই চরম উত্তেজনা ছড়ায় NRS চত্বরে । সব ওয়ার্ড থেকে কাজ ফেলে জুনিয়র ডাক্তাররা চলে আসেন । হাসপাতালের গেটের সামনে অবস্থানে বসেন । প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের OPD বন্ধের ডাক দেয় । আর তাতেই সমস্যায় ভুগছেন রোগী ও পরিজনরা ।
একই সমস্যায় ভুগছেন আর জি করের রোগী ও পরিজনরা । আজ সকাল থেকেই সেখানকার আউটডোরের গেট চেন ও তালা দিয়ে বন্ধ । যারাই চিকিৎসার জন্য আসছেন তাদেরই গেটের ওপার থেকে ফিরিয়ে দিচ্ছেন কর্মবিরতিতে থাকা ডাক্তাররা । শুধু চালু জরুরি পরিষেবা । কিন্তু সেখান থেকেও রোগীদের ফিরে যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ।
এক রোগীর স্বামী বলেন, "এমার্জেন্সিতে স্ত্রীকে নিয়ে এসেছিলাম । তারা দেখবে না । বলল, এমার্জেন্সিতে কোনও রোগীকে দেখবে না । আমরা গ্রাম থেকে এসেছি । এখন কী করব বলুন ? কোথায় যাব?"
মেয়েকে ডেলিভারি এমার্জেন্সিতে ভরতি করাতে এসেছিলেন এক মহিলা । তিনি বলেন, "আমরা এমার্জেন্সি রোগী নিয়ে এসেছি । ভরতি নিচ্ছে না । এমার্জেন্সি ডেলিভারিতে নিয়ে এসেছিলাম । এবার ফিরে যেতে হচ্ছে । ওরা বলছে, টিভি দেখো, যখন খুলবে তখন এসো ।"
কবে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক হবে ? এবিষয়ে এখনও কেউ স্পষ্টভাবে কিছু বলছে না । তবে, আর জি করের এক জুনিয়র ডাক্তার নীহারেন্দু মাল বলেন, "এটা তো কর্মবিরতি নয় । আমাদের এক বন্ধু অসুস্থ হয়েছে । আমরা তার জন্য শোক পালন করছি । আত্মীয়দের কিছু হলে সবাই তো শোক পালন করে । আমরাও করছি । আমাদের একটাই দাবি, উপযুক্ত নিরাপত্তা । "
নীহারেন্দু বলেন, "আমাদের ডাক্তার না ভেবে একবারের জন্য মানুষ ভেবে দেখুন । তাহলে এই পরিস্থিতির কারণটা বুঝতে পারবেন ।"