কলকাতা, 17 জুলাই: রাজনৈতিক মামলার পাহাড় জমছে হাইকোর্টে ৷ আর তাতেই বিরক্ত খোদ কলকাতা হাইকোর্টের বিচেরপতি ৷ এত রাজনৈতিক মামলা শোনার জন্য সময় দেওয়া সম্ভব নয়, বলেও জানিয়ে দিলেন বিচারপতি। আদালতে আরও হাজার মামলা রয়েছে, বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর।
এমনিতেই হাইকোর্টে রাজনৈতিক মামলা জমছে রোজই ৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সেই মামলা অগুনতি হয়েছে ৷ প্রায় একই বিষয় নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হচ্ছে প্রায় রোজই ৷ আর সেই রাজনৈতিক মামলা নিয়েই এবার উষ্মা প্রকাশ করলেন বিচারপতি ৷ সোমবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, "এইসব মামলা আমি রিলিজ করে দেব। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর 27 থেকে 28টা মামলা। তার উপরে এইরকম আরও 10 টা মামলা এখনই আছে!" এরপরই বিরক্ত হয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত মন্তব্য করেন, "শুধু রাজনৈতিক মামলাই শুনে যাবো বা না কি?"
রাজ্যকে বিচারপতির প্রশ্ন, "যখন ভোটের আগে এত এত রক্ষাকবচ কোর্ট দিয়েছিল তখন কেন রাজ্য ডিভিশন বেঞ্চে বা সুপ্রিম কোর্ট যায়নি?" আদালত জানায়, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগেও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর যে স্ট্যাটাস ছিল, ভোটের পরও তাই আছে। এরপরই বিচারপতি সেনগুপ্ত প্রশ্ন তোলেন, তখন যদি এই ভাবে রক্ষাকবচ দেওয়ায় রাজ্য সমর্থন করে, তাহলে এখন তাদের আপত্তি কেন? রাজ্যের উদ্দেশে এমনই একের পর এক কড়া মন্তব্য করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর।
এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের 10 জন আবেদনকারী তাদের রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছিল বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে। সেই মামলার শুনানি করতে গিয়ে এদিন বিরক্ত বিচারপতি সেনগুপ্ত রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দিলেন। অবশ্য শেষ পর্যন্ত আদালত রাজ্যকে হলফনামা দেওয়ার জন্য দু'সপ্তাহের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। আদালত এদিন নির্দেশ দিয়ে জানিয়েছে, বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা যখন 15 জুলাই পর্যন্ত সব অভিযুক্তকে রক্ষাকবচ দিয়েছিল, তখনই রাজ্যের উচিত ছিল আপত্তি করা। বা ডিভিশন বেঞ্চে সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করা।
আরও পড়ুন: অভিষেকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে হাইকোর্টের দ্বারস্থ আইনজীবীরা
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় পুলিশি হেনস্থা থেকে বাঁচতে বিরোধী রাজনৈতিক দলের কয়েক'শো সদস্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই সময় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা পুলিশ নিষ্ক্রিয়তা ও সক্রিয়তার সমস্ত মামলার শুনানি করতেন। সম্প্রতি বিচারপতির বেঞ্চ পরিবর্তন করে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তকে দেওয়া হয়েছে পুলিশ সংক্রান্ত সমস্ত মামলার দায়িত্ব। এদিন বিচারপতি সেই সমস্ত মামলার নির্দেশ দেখেই বিরক্তি প্রকাশ করেন।