কলকাতা, 24 মার্চ : এই প্রথম প্রথা ভেঙে বসন্ত উৎসব হবে না রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে । এবছর আর দোল উৎসবে ক্যাম্পাসের বাতাসে উড়বে না হরেক রঙা আবির । নেপথ্যে সেই করোনা কাঁটা । করোনার বর্তমান চিত্র দেখেই এবছর বসন্ত উৎসবের আয়োজন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী বলেন, "গত বছর মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাস বন্ধ রয়েছে এবং শিক্ষা সংক্রান্ত সব কাজ অনলাইনে হচ্ছে । আমরা নিশ্চিত নই যে, ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক উপস্থিতিতে আবার করোনা মাথাচাড়া দেবে কি না । তাই আমরা ক্যাম্পাসে জমায়েত এড়াতে বসন্ত উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি ।"
1962 সালে দোল উৎসবের সূচনা হয় রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে । 1976 সালে বিটি রোডের উপর নতুন ক্যাম্পাস তৈরি হওয়ার পর সেখানেই একই রকম উৎসব হয় । যদিও প্রতি বছর জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসেই মূল বসন্ত উৎসবটি হত । কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী তো বটেই, অন্যান্য ইচ্ছুক মানুষরাও জমায়েত করতেন ওইদিন জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে । জোড়াসাঁকো ক্যাম্পাসে মিউজ়িয়াম সংস্কারের কাজ চলায় 2019 সালে ওই উৎসবটি স্থানান্তরিত করা হয় বিটি রোডের ক্যাম্পাসে । 2019 এবং 2020 সালে তাই বিটি রোড ক্যাম্পাসেই উদযাপন করা হয়েছিল দোল উৎসবের ।
আরও পড়ুন : প্রথা ভেঙে অসময়ে বসন্ত উৎসব, নতুন বিতর্কে বিশ্বভারতী
তবে, গত বছর অর্থাৎ 2020 সালের বসন্ত উৎসবের আনন্দ কিছুটা হলেও ম্যাড়ম্যাড়ে হয়ে গিয়েছিল একটি ঘটনায় । দেখা গিয়েছিল, কয়েকজন ছেলে-মেয়ের জামায়, পিঠে আবির দিয়ে আপত্তিকর শব্দ লেখা । সেই ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সোশাল মিডিয়ায় । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের '...চাঁদ উঠেছিল গগনে…' গানটিও বিকৃত করে পিঠে লিখেছিল কয়েকজন মেয়ে । ঘটনাটি নিয়ে নিন্দার ঝড় বয়েছিল শিক্ষা সহ প্রায় কমবেশি সব মহলেই । যদিও ঘটনার পরের দিনই 6 জন ছেলে-মেয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিল । বসন্ত উৎসবে ওই রকম কাণ্ড ঘটানোর জন্য ক্ষমা চেয়েছিল কর্তৃপক্ষের কাছে ।
তারা জানিয়েছিল, তারা হুগলির চন্দননগর কলেজের ছাত্র-ছাত্রী । ওই ঘটনার পরেই বসন্ত উৎসবে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার কথা বিবেচনা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । যদিও করোনা আবহে এবার আর বসন্ত উৎসবই আয়োজন হচ্ছে না ।