কলকাতা, 13 এপ্রিল : কোরোনা মোকাবিলায় দিনরাত এক করে কাজ করছেন পুলিশকর্মীরা । জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত মানুষকে সচেতন করে চলেছেন । লকডাউন যাতে সফল হয় সেদিকে নজর রাখছেন । অথচ তাঁদের শরীর-স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখার কেউ নেই । তাঁদের সুরক্ষার কথা ভেবে এগিয়ে এলেন মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভরা । কলকাতা পুলিশের হাতে তুলে দিল সুরক্ষা সামগ্রী । মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে পুলিশ ।
লড়াইটা অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে । অবুঝ কিছু মানুষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার বিরুদ্ধে । এই লড়াইয়ে জিততে হলে পৌঁছাতে হবে সমাজের প্রান্তিক মানুষগুলির কাছেও । সেই দায়িত্ব তুলে নিয়েছে কলকাতা পুলিশ । কঠিন এই সময়ে বুক চিতিয়ে লড়ে যাচ্ছেন উর্দিধারীরা । শুধু কলকাতা কেন, গোটা রাজ্যের পুলিশ পরিবার ভুলে পড়ে রয়েছেন পথে । তাঁরা অবাধ্য জনতাকে বোঝাচ্ছেন । প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করছেন । আবার দরিদ্র সম্প্রদায়ের হাতে তুলে দিচ্ছেন বাঁচার রসদ । কখনও আবার লকডাউনে বাড়িতে থেকে ক্লান্ত মানুষজনের জন্য গান গেয়ে তুলে দিচ্ছেন এক মুঠো খুশি । অথচ এই মানুষগুলির নিজের সুরক্ষার তেমন আয়োজন নেই । খোদ মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা পুলিশের হেড কোয়ার্টার লালবাজারে গিয়ে বলেছিলেন, "আপনাদের মাস্কগুলি তেমন ভালো নয় ।"
![Medical Representatives of Beleghata and Phoolbagan area](https://etvbharatimages.akamaized.net/etvbharat/prod-images/wb-kol-03-medicalrepresentativeshelpedkolkatapolicetofightagainstcorona-7201045_13042020134558_1304f_1586765758_818.jpg)
উন্নতমানের মাস্কের আকালে সবার প্রথম ব্যবস্থা করতে হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য । তারপর অন্যদের ভাবনা । তাই পুলিশের সুরক্ষার ঘাটতি কিছুটা হলেও থেকেই যাচ্ছে । পুলিশের সুরক্ষার অভাবের বিষয়টা টের পেয়েছিলেন মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভরা । তাই বেলেঘাটা ফুলবাগান অঞ্চলে কাজ করা মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভরা এগিয়ে এলেন পুলিশের সুরক্ষায় ।
ফুলবাগান অঞ্চলে মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভ হিসেবে কাজ করেন রাহুল রায় । তিনি বলেন, "মহামারী রুখতে যেমন স্বাস্থ্যকর্মীরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন, ঠিক তেমনভাবে নিজেদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত কাজ করে চলেছে দেশের প্রশাসন । সমাজের এই খারাপ পরিস্থিতির সময় উচিত সবার এগিয়ে আসা । একজোট হয়ে বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলা করা । যদিও আমরা প্রত্যক্ষভাবে হয়ত কিছুই করতে পারব না । কিন্তু যাঁরা নিজেদের প্রাণের কথা, পরিবারের কথা চিন্তা না করে মোকাবিলা করে যাচ্ছেন, তাঁদের হাত শক্ত করতে হবে । আর তাই আমরা যাঁরা বেলেঘাটা ও ফুলবাগানে কর্মরত, তাঁরা এই সময়ে ঘরে বসে না থেকে কিছু হ্যান্ডগ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার এই এলাকায় কর্মরত সমস্ত ট্র্যাফিক গার্ড ও পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি । যাতে তাঁদের হাত আমরা আরও একটু শক্ত করতে পারি ।" শুধু তাই নয়, এই মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভরা বেলেঘাটা ID-র স্বাস্থ্যকর্মীদেরও গ্লাভস, স্যানিটাইজ়ার ও মাস্ক তুলে দিয়েছেন । বেলেঘাটা ও ফুলবাগানের এই মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন সবাই ।