কলকাতা, 13 নভেম্বর: একদিকে যখন রাষ্ট্রপতিকে শাসকদলের মন্ত্রীর অবমাননাকর মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি, ঠিক তখন জঙ্গলমহল (Mamata Jhargram Visit) সফরে যাচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। 15 নভেম্বর বিরসা মুন্ডার জন্মদিন (Birsa Munda Birthday)। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে তিনি ঈশ্বরস্বরূপ । মুক্তিকামী মানুষের কাছে তিনি শ্রদ্ধেয় । তাই ওই দিন জঙ্গলমহলে উপস্থিত হয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী । ওইদিন জঙ্গলমহল-সহ মোট পাঁচ জায়গায় বিরসা মুন্ডার মূর্তির উদ্বোধন করবেন তিনি । এই পাঁচটি মূর্তির মধ্যে একটি মূর্তি রয়েছে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের । ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী ।
এমনিতে এ বার জঙ্গলমহল সফর এই সময়ে তৃণমূল কংগ্রেস তথা রাজ্য সরকারের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । কারণ একদিকে শিয়রে পঞ্চায়েত নির্বাচন । আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে ক্রমেই নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করছে গেরুয়া শিবির । এই অবস্থায় বিজেপিকে আটকাতে তৎপর তৃণমূল সুপ্রিমো সাংগঠনিকভাবে যেমন দলকে এই সফরে উৎসাহিত করবেন, একইভাবে প্রশাসনিক অনুষ্ঠান থেকে এই সরকার কীভাবে আদিবাসী তথা সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির পাশে রয়েছে সেই বার্তাও দেবেন ।
2020 সালের 5 নভেম্বর জঙ্গলমহলের বাঁকুড়ায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ । সেই সময় তিনি বিরসা মুন্ডার নাম করে স্থানীয় এক শিকারির মূর্তিতে মালা পরিয়েছিলেন । এই ঘটনায় তুমুল বিতর্ক শুরু হয় । স্বয়ং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ হেন ভুল আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত দিয়েছে বলে দাবি করে তৃণমূল কংগ্রেস শিবির । পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাই আদিবাসীদের মন পেতে জঙ্গলমহলের পাঁচটি জায়গায় বিরসা মুন্ডার মূর্তি বসিয়ে তাঁকে সম্মান জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার । একইসঙ্গে আদিবাসীদের এই সরকার কতটা গুরুত্ব দেয় তা বোঝাতে 2020 সাল থেকে বিরসা মুন্ডার জন্মদিনকে ছুটি দিয়েছে রাজ্য সরকার । আর এ বার তাঁর জন্মদিনে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিত থাকা পঞ্চায়েত ভোটে দলকে বাড়তি সুবিধা করে দিতে পারে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য অখিলের ! প্রতিবাদে পথে বিজেপি যুব মোর্চা
তবে এর উলটো চিত্রও রয়েছে । গতকাল থেকে যেভাবে রাজ্যের এক মন্ত্রীর মন্তব্যকে কেন্দ্র করে গেরুয়া শিবির তৃণমূলকে আদিবাসী বিরোধী দেখানোর চেষ্টা করছে, তাতে কিছুটা হলেও অস্বস্তিতে ঘাসফুল শিবির । এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জঙ্গলমহল সফরের মাধ্যমে আদিবাসীদের কী বার্তা দেন, সেদিকে নজর সকলের । অখিল গিরির মন্তব্যের পর বিজেপি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে আদিবাসী বিরোধী হিসাবে তুলে ধরতে মরিয়া । তাই দেখার, ঝাড়গ্রামের এই অনুষ্ঠান থেকে পালটা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য কোনও ঘোষণা করেন কি না ।