কলকাতা, 17 জুন: "বর্তমানে ভয়ঙ্কর অপসংস্কৃতির মুখোমুখি আমরা", পিতৃদিবস উপলক্ষে বাবাকে স্মরণ করে তাঁর শিক্ষার কথা তুলে ধরলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁর একের পর এক রায় সাড়া ফেলেছে রাজ্য-রাজনীতির পাশাপাশি আমজনতার মধ্যে। কারও কাছে তিনি ঈশ্বর, কেউ মানেন অভিভাবক বলে। অনেকের মতে, আইনে নিরপেক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার পিতৃদিবসের আগে নিজের শিক্ষাগুরুকে স্মরণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের এই বিচারপতি।
18 জুন অর্থাৎ রবিবার পিতৃদিবস। সেই উপলক্ষ্যে শনিবার সন্ধ্যায় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিচারপতি তাঁর বাবার শিক্ষা ও পরিচয় নিয়ে মুখ খোলেন। তিনি বলেন, "বাবা একজন রাজনৈতিক ব্যাক্তি ছিলেন। আজকে যখন আমরা ভয়ঙ্কর অপসংস্কৃতির মুখোমুখি হয়েছি তখন বুঝতে পারি উনি হয়তো ওনার রাজনৈতিক দৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন, এমন একটা দিন আসবে যখন সুস্থ সংস্কৃতি ও অপসংস্কৃতির মধ্যে ফারাকটা বিচার করে, সুস্থ সংস্কৃতিকে বেছে নিতে হবে। তা নেওয়ার ট্রেনিংও দিতেন।"
তিনি আরও বলেন, "বাবা একেবারে আমাদের বাছাই করে দিতেন, কী বই আমরা পড়ব, কোন সিনেমা আমরা দেখব, কী গান আমরা শুনব এই রকম ৷ যদি কখনও ভুল করে এমন কোনও গান শুনে ফেলতাম আর সেটা তিনি জানতে পারলেন, তাহলে ভয়ঙ্কররকম একটা শাসন আমরা পেতাম ৷ 16 বছর পর্যন্ত আমি সেই শিক্ষা পেয়েছিলাম। আজও প্রতিদিন আমি ওনাকে স্মরণ করি এবং বুঝতে পারি আজকের দিনে তাঁর কথাগুলো কতটা প্রাসঙ্গিক।"
এদিনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়। শোনা যায়, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিবার যুক্ত ছিলেন বামপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে। তার নিরিখে শাসক শিবিরে থেকে একাধিকবার কটাক্ষ করা হয়েছে বিচারপতিকেও। তবে এই কোনও বিষয়ে কোনও দিনও মুখ খোলেননি বিচারপতি।
আরও পড়ুন: বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে 10 বছর পর চাকরি পাচ্ছেন টেট প্রার্থী আমনা পারভিন
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অসঙ্গতি, অনিয়ম বা দুর্নীতির প্রকোপ যে কতটা গুরুতর, তা ইতিমধ্যে সর্বজনবিদিত। এই বিষয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিচারকদের ভূমিকাও নিঃসন্দেহে নাগরিকের শ্রদ্ধা এবং অভিবাদন কুড়িয়ে নিয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷