কলকাতা, 27 সেপ্টেম্বর: সাধারণত জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ধৃতরা আদালতে দাঁড়িয়ে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করে । কিন্তু, রীতিমতো ব্যতিক্রমী স্বীকারোক্তি শোনা গেল জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার আমের ইজ়াজ় আহমেদের মুখে ৷ ব্যাঙ্কশাল আদালতের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে সে বলে, "২০১৬-র পর ওদের সঙ্গে যোগাযোগ নেই।" অর্থাৎ জঙ্গিযোগের কথা কার্যত স্বীকার করে সে।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : ইজ়াজ়কে ছিনিয়ে নেওয়ার ছক? কড়া নিরাপত্তা ব্যাঙ্কশাল আদালতে
আজ রীতিমতো কড়া নিরাপত্তায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হয় ইজ়াজ়কে । দুপুর পৌনে তিনটে নাগাদ ইজ়াজ়ের পুলিশ হেপাজতের জন্য সওয়াল করেন সরকারি আইনজীবী । তিনি আদালতে দাঁড়িয়ে বলেন,“জামাতুল মুজাহিদিনের প্রতিষ্ঠাতা চিফ কওসরকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার ছক কষা হয়েছিল । সেই অভিযোগে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে কয়েকজনকে । সেই মামলায় যে ক'জনের নাম পাওয়া গিয়েছিল তাদের একজন ইজ়াজ় । সেই বিষয়ে যে FIR দায়ের হয় তার ৬ নম্বর অভিযুক্ত হিসেবে নাম রয়েছে ইজ়াজ়ের । তাকে আমরা গয়া থেকে গ্রেপ্তার করেছি। এই ইজ়াজ় জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার চিফ হিসেবে কাজ করছিল।"
এই সংক্রান্ত আরও খবর : জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়ার শীর্ষনেতা ইজ়াজ় গ্রেপ্তার
এদিকে স্পেশাল টাস্কফোর্স সূত্রে খবর, তার কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি ল্যাপটপ, একটি ট্যাব, ছটি মোবাইল এবং জাল ভোটার কার্ড । যে ভোটার কার্ডটিতে ছবি আছে ইজ়াজ়ের, কিন্তু নাম অন্য । ঠিকানা আরেকটি । অর্থাৎ জাল ভোটার কার্ড বানিয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দিতে চেয়েছিল । সেটি ব্যবহার করেই ভারতের পূর্ব থেকে পশ্চিম উত্তর থেকে দক্ষিণ ঘুরে বেড়াচ্ছিল সে । তৈরি করছিল জঙ্গি নেটওয়ার্ক । কওসরের কথায়, তাকে আমের নির্বাচিত করার পর, রিক্রুটমেন্ট ছাড়াও আরও বেশ কিছু কাজ দেখছিল সে । তাকে না জানিয়ে কোনও কাজই করত না জামাত-উল-মুজাহিদিন ইন্ডিয়া ।
এমনিতে ছাপোষা চেহারা । গায়ে টেরিকটের সস্তা জামা । ক্লিন সেভড । রোগা চেহারার ইজ়াজ়কে দেখলে কে বলবে, সে জঙ্গিগোষ্ঠীর ভারত শাখার প্রধান! সরকারি আইনজীবীর সওয়ালের সময় মাঝেমধ্যে মাথা নাড়ছিল সে । বোঝানোর চেষ্টা করছিল কওসরকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার কোনও প্ল্যান সে করেনি । কিন্তু ইতিমধ্যেই STF-এর হাতে থাকা জঙ্গিদের জেরা করে সেই তথ্য উঠে এসেছে । STF-এর দাবি কওসরকে ছাড়ানোর ছক কষেছিল ইজ়াজ় । জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছে STF। আর তাই আদালতের কাছে তার পুলিশ হেপাজত চাওয়া হয় । আদালত তা মঞ্জুর করে । 10 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইজ়াজ়ের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।