ETV Bharat / state

পরীক্ষা ও ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হয়েও মিলছে না প্রাপ্য বেতন

লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও ইন সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা পাচ্ছেন না প্রাপ্য বেতন।

ছবিটি প্রতীকী
author img

By

Published : Apr 30, 2019, 10:54 PM IST

Updated : May 1, 2019, 12:39 AM IST

কলকাতা, ৩০ এপ্রিল : উচ্চপদ বা ঘরের কাছে স্কুলে কাজের সুযোগ পেতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের বহু ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। 2016 সালে SLST পরীক্ষায় বসেন একাদশ-দ্বাদশের এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়ম অনুযায়ী পুরানো স্কুলের চাকরি ছেড়ে নতুন স্কুলে আসার পরই বাধে বিপত্তি। অভিযোগ, তাঁদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশন না দিয়ে ইনিসিয়াল স‍্যালারি দেওয়া হচ্ছে। কারও ক্ষতির পরিমাণ মাসে 17 হাজার, তো কারও 13 হাজার টাকা। যদিও স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইন-সার্ভিসদের বেতন নিয়ে ডাইরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশনে একটি ফাইল তৈরি হয়েছে। সেটি ফাইন্যান্স থেকে পাশ হয়ে গেলে সাত মাসের বকেয়া পেয়ে যাবেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সেপ্টেম্বর মাসে বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুলে যোগ দেন শিক্ষিকা পরমা মাঝি। তিনি বলেন, " আমরা 2016 সালে প্রথম ফর্ম ফিল আপ করি। আমি হায়ার স্কেলের জন্য জয়েন করি। আমার প্রথমে অনার্স ছিল। তারপরে মাস্টার ডিগ্রি করার পরেও হায়ার স্কেল পাইনি। তার জন্য পরীক্ষায় বসি। আগেও অনেকে এভাবে পরীক্ষায় বসেছে। সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন পেয়েছে। সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন পাওয়া যাবে কি না সেবিষয়ে DI-এর কাছে DSC-তে খোঁজখবর নিয়েই জয়েন করেছিলাম। জয়েন করার পর অনুমোদন পেতে দেরি হয়। তার আগে স্কুলের কাছে মেইল আসে যে আমার স‍্যালারি ইনিসিয়াল স্টেজ থেকেই শুরু হবে। ফলে প্রতিমাসে ১৩ হাজার টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে।"

পূর্ব বর্ধমানের সুনীল কুমার ঘোষ বলেন, "আমি পাশ গ্রাজুয়েট হিসাবে কাজ করছি 1999 সাল থেকে। তারপর 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাসে PG (স্নাতকোত্তর) পোস্টে পরীক্ষা দিয়ে আমি জয়েন করি‌ ইলেভেন-টুয়েলভের এডুকেশন বিষয়ে। তারপরে হঠাৎ করেই বলা হল এখন সব ইনিসিয়াল হবে। এখন পে প্রোটেকশন বা সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন কিছু হবে না। ফলে আমার আগে বেসিক বেতন ছিল 51 হাজার 163 টাকা। সেপ্টেম্বরে অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার পর সেটা 35 হাজার সামথিং হয়ে গেল। জানুয়ারিতে যে DA ঘোষণা হল তারপর আমার লসের পরিমাণটা দাড়াচ্ছে প্রতি মাসে 17 হাজার টাকার মতো। এই বছরের জুলাই মাসে আমার 20 বছর সম্পূর্ণ হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী সেক্ষেত্রে আমার দ্বিগুণ ইনক্রিমেন্ট হওয়া উচিত। কিন্তু সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন না হলে ওটাও দেবে না। তখন আমার লসের পরিমাণটা প্রতি মাসে 18 হাজারের মতো হয়ে যাবে। আমরা বিকাশ ভবনে আবেদন করেছি। DI-দের কাছে আবেদন করেছি। কোথাও PF কাটা হচ্ছে। কোথাও PF কাটা হচ্ছে না। কোথাও কোথাও সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুব সমস‍্যার মধ‍্যে আছি। এমন অবস্থা হয়েছে যে ধার করতে হচ্ছে সংসার চালানোর জন্য।"

স্কুল সার্ভিস কমিশনের গেজেট অনুযায়ী লোয়ার থেকে হায়ার স্কেলে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ‍্যে আবেদন করা যাবে। তবে, সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বা পে প্রোটেকশন SSC-র আওতায় না থাকায় সেবিষয়ে কিছু বলা নেই গেজেটে। ইন-সার্ভিসদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশনের বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ROPA-90-র সময় 1995 সালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেশন দেওয়ার বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ছিল। সেই অনুযায়ী ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই সুবিধা ভোগ করতে পারতেন। কিন্তু, ROPA-2009-এ এই ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি এখনও পর্যন্ত জারি করা হয়নি। তাই ২০১৬ সালের SLST-তে নতুন স্কুলে নিযুক্ত ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যদি কোথাও সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বা পে প্রোটেক্টশন দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে তা আইন বহির্ভূত। তবে, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা যদি দপ্তরের প্রতিটি নিয়ম মেনে পরীক্ষায় বসে নতুন স্কুলে জয়েন করে থাকেন তাহলে তাঁদের প্রাপ‍্য তাঁরা পাবেন। শুধু তার জন্য অর্থ দপ্তরের সম্মতির প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স‍্যালারি নিয়ে ডাইরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশনে একটি ফাইল তৈরি হয়েছে। ফাইলটি ইতিমধ্যেই অর্থ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

কলকাতা, ৩০ এপ্রিল : উচ্চপদ বা ঘরের কাছে স্কুলে কাজের সুযোগ পেতে গিয়ে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে রাজ্যের বহু ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। 2016 সালে SLST পরীক্ষায় বসেন একাদশ-দ্বাদশের এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউতে উত্তীর্ণ হয়ে নিয়ম অনুযায়ী পুরানো স্কুলের চাকরি ছেড়ে নতুন স্কুলে আসার পরই বাধে বিপত্তি। অভিযোগ, তাঁদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশন না দিয়ে ইনিসিয়াল স‍্যালারি দেওয়া হচ্ছে। কারও ক্ষতির পরিমাণ মাসে 17 হাজার, তো কারও 13 হাজার টাকা। যদিও স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইন-সার্ভিসদের বেতন নিয়ে ডাইরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশনে একটি ফাইল তৈরি হয়েছে। সেটি ফাইন্যান্স থেকে পাশ হয়ে গেলে সাত মাসের বকেয়া পেয়ে যাবেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

সেপ্টেম্বর মাসে বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুলে যোগ দেন শিক্ষিকা পরমা মাঝি। তিনি বলেন, " আমরা 2016 সালে প্রথম ফর্ম ফিল আপ করি। আমি হায়ার স্কেলের জন্য জয়েন করি। আমার প্রথমে অনার্স ছিল। তারপরে মাস্টার ডিগ্রি করার পরেও হায়ার স্কেল পাইনি। তার জন্য পরীক্ষায় বসি। আগেও অনেকে এভাবে পরীক্ষায় বসেছে। সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন পেয়েছে। সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন পাওয়া যাবে কি না সেবিষয়ে DI-এর কাছে DSC-তে খোঁজখবর নিয়েই জয়েন করেছিলাম। জয়েন করার পর অনুমোদন পেতে দেরি হয়। তার আগে স্কুলের কাছে মেইল আসে যে আমার স‍্যালারি ইনিসিয়াল স্টেজ থেকেই শুরু হবে। ফলে প্রতিমাসে ১৩ হাজার টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে।"

পূর্ব বর্ধমানের সুনীল কুমার ঘোষ বলেন, "আমি পাশ গ্রাজুয়েট হিসাবে কাজ করছি 1999 সাল থেকে। তারপর 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাসে PG (স্নাতকোত্তর) পোস্টে পরীক্ষা দিয়ে আমি জয়েন করি‌ ইলেভেন-টুয়েলভের এডুকেশন বিষয়ে। তারপরে হঠাৎ করেই বলা হল এখন সব ইনিসিয়াল হবে। এখন পে প্রোটেকশন বা সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন কিছু হবে না। ফলে আমার আগে বেসিক বেতন ছিল 51 হাজার 163 টাকা। সেপ্টেম্বরে অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার পর সেটা 35 হাজার সামথিং হয়ে গেল। জানুয়ারিতে যে DA ঘোষণা হল তারপর আমার লসের পরিমাণটা দাড়াচ্ছে প্রতি মাসে 17 হাজার টাকার মতো। এই বছরের জুলাই মাসে আমার 20 বছর সম্পূর্ণ হচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী সেক্ষেত্রে আমার দ্বিগুণ ইনক্রিমেন্ট হওয়া উচিত। কিন্তু সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন না হলে ওটাও দেবে না। তখন আমার লসের পরিমাণটা প্রতি মাসে 18 হাজারের মতো হয়ে যাবে। আমরা বিকাশ ভবনে আবেদন করেছি। DI-দের কাছে আবেদন করেছি। কোথাও PF কাটা হচ্ছে। কোথাও PF কাটা হচ্ছে না। কোথাও কোথাও সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুব সমস‍্যার মধ‍্যে আছি। এমন অবস্থা হয়েছে যে ধার করতে হচ্ছে সংসার চালানোর জন্য।"

স্কুল সার্ভিস কমিশনের গেজেট অনুযায়ী লোয়ার থেকে হায়ার স্কেলে যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ‍্যে আবেদন করা যাবে। তবে, সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বা পে প্রোটেকশন SSC-র আওতায় না থাকায় সেবিষয়ে কিছু বলা নেই গেজেটে। ইন-সার্ভিসদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশনের বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ROPA-90-র সময় 1995 সালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেশন দেওয়ার বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ছিল। সেই অনুযায়ী ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই সুবিধা ভোগ করতে পারতেন। কিন্তু, ROPA-2009-এ এই ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি এখনও পর্যন্ত জারি করা হয়নি। তাই ২০১৬ সালের SLST-তে নতুন স্কুলে নিযুক্ত ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যদি কোথাও সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বা পে প্রোটেক্টশন দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে তা আইন বহির্ভূত। তবে, স্কুল শিক্ষা দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা যদি দপ্তরের প্রতিটি নিয়ম মেনে পরীক্ষায় বসে নতুন স্কুলে জয়েন করে থাকেন তাহলে তাঁদের প্রাপ‍্য তাঁরা পাবেন। শুধু তার জন্য অর্থ দপ্তরের সম্মতির প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স‍্যালারি নিয়ে ডাইরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশনে একটি ফাইল তৈরি হয়েছে। ফাইলটি ইতিমধ্যেই অর্থ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

Intro:কলকাতা, 30 এপ্রিল: কারও শিক্ষকতার 10 বছর সম্পূর্ণ হতে যায়, তো কারো 20 বছর। শিক্ষকতা নিযুক্ত হওয়ার পর তাঁরা শিক্ষাগত যোগ্যতার বাড়িয়েছেন। সেই যোগ্যতার ভিত্তিতেই 2016 সালে SLST পরীক্ষায় বসেন একাদশ-দ্বাদশের এই শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কারও উদ্দেশ‍্য ছিল উচ্চপদ পাওয়া, কারও উদ্দেশ্য নিজের এলাকার কাছাকাছি স্কুলে আসা। লিখিত পরীক্ষা ও ইন্টারভিউয়ে উত্তীর্ণ হয়ে পুরনো স্কুলে পদত্যাগ করে নতুন স্কুলে আসার পরই বাঁধে বিপত্তি। উচ্চ পদ বা ঘরের কাছে স্কুল পেতে গিয়ে বহু টাকার ক্ষতি হচ্ছে রাজ্য জুড়ে বহু ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। কারো ক্ষতির পরিমাণ মাসে 17 হাজার, তো কারও ১৩ হাজার টাকা। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে নতুন স্কুলে জয়েন করার পর থেকে ক্ষতির পরিমাণটা কারও কারও ক্ষেত্রে এক লক্ষ টাকার বেশি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশন না দিয়ে ইনিসিয়াল স‍্যালারি দেওয়া হয়েছে। যদিও স্কুল শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইন-সার্ভিসদের বেতন নিয়ে ডাইরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশনে একটি ফাইল তৈরি হয়েছ। সেটি ফাইন্যান্স থেকে পাশ হয়ে গেলে সাত মাসের বকেয়া পেয়ে যাবেন ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।


Body:গত সাত মাস ধরে কী সমস‍্যায় ভুগছেন ইলেভেন-টুয়েলভের ইন-সার্ভিস শিক্ষক শিক্ষিকারা? সেপ্টেম্বর মাসে বাগবাজার মাল্টিপারপাস স্কুলে যোগদানকারী শিক্ষিকা সরলা মাঝি বলেন, " আমরা 2016 সালে প্রথম ফর্ম ফিলাপ করি। আমি বিশেষত হায়ার স্কেলের জন্য জয়েন করি। আমার প্রথমে অনার্স ছিল, তারপরে মাস্টার ডিগ্রি করার পরেও হায়ার স্কেল পাই না। তার জন্য পরীক্ষায় বসি। আগেও অনেকছ এভাবে পরীক্ষায় বসেছে, সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন পেয়েছে। তারপর যথারীতি খোঁজখবর নিয়ে জয়েন করি যে, সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন পাওয়া যাবে কিনা। আমরা DI-এর কাছে, DSC-তে খোঁজখবর নিয়েই জয়েন করেছিলাম। জয়েন করার পর আমার অ্যাপ্রুভালটা হতে একটু দেরিই হয়। তার আগে স্কুলের কাছে মেল আসে যে আমার স‍্যালারি ইনিসিয়াল স্টেজ থেকেই শুরু হবে। আমার এই বছরের অক্টোবর মাসে 10 বছর সম্পূর্ণ হবে। কিন্তু, আমার ইনিসিয়াল থেকে স‍্যালারি শুরু হয় যেখানে আমার প্রতি মাসে ১৩ হাজার টাকা করে লস হচ্ছে।"

এমনই সমস্যায় ভুক্তভোগী রাজ্যের বহু ইন সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কেউ পাস থেকে অনার্স বা পাশ থেকে PG স্তরে যাওয়ার জন্য নতুন স্কুলে জয়েন করেছেন। পূর্ব বর্ধমানের সুনীল কুমার ঘোষ বলেন, "আমি পাশ গ্রাজুয়েট হিসাবে কাজ করছি 1999 সাল থেকে। তারপর 2018 সালের সেপ্টেম্বর মাসে PG (স্নাতকোত্তর) পোস্টে পরীক্ষা দিয়ে আমি জয়েন করি‌ ইলেভেন-টুয়েলভের এজ়ুকেশন বিষয়ে। তারপরে হঠাৎ করেই বলা হল এখন সব ইনিসিয়াল হবে। এখন পে প্রোটেকশন বা সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন কিছু হবে না। আমাদের যখন DI অ্যাপ্রুভাল দিলেন তখন আমাদেরটা ইনিসিয়াল করে দিলেন। এর ফলে, আমার আগে বেসিক বেতন ছিল 51 হাজার 163 টাকা। সেপ্টেম্বরে অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার পর সেটা 35 হাজার সামথিং হয়ে গেল। জানুয়ারিতে যে DA ঘোষণা হল তারপর আমার লসের পরিমাণটা দাড়াচ্ছে প্রতি মাসে 17 হাজার টাকার মতো। এই বছরের জুলাই মাসে আমার 20 বছর সম্পূর্ণ হচ্ছে। সেখানে ডাবল ইনক্রিমেন্ট থাকে শিক্ষকদের। সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন না হলে ওটাও দেবে না। তখন আমার লসের পরিমাণটা প্রতি মাসে 18 হাজারের মতো হয়ে যাবে।"

স্কুল সার্ভিস কমিশনের গেজেটে লেখা ছিল, লোয়ার থেকে হায়ার স্কেলে যারা যেতে চান তাঁরা নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ‍্যে আবেদন করতে পারবেন। তবে, সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বা পে প্রোটেকশন কোনওটাই SSC-র আওতায় না থাকায় সেই বিষয়ে কিছু বলা ছিল না। সুনীল কুমার ঘোষ বলেন, "আমরা যখন পরীক্ষা দিয়েছি তখন পাশ গ্রাজুয়েটরা পরীক্ষা দিতে পারবে সেটাই নোটিফিকেশনে বলা ছিল। সেখানে বলা হয়েছিল সেম স্কেলে যারা তারা পরীক্ষা দিতে পারবে না। সিম স্কেলে যারা ছিল তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করে। হাইকোর্ট বলেছিল, এরা পরীক্ষা দিতে পারবে। সেম স্কেলে পরীক্ষা দিয়ে অনেকে কিন্তু জয়েন করে গেছে। এখন তাদেরকে বলা হচ্ছে না আপনাদের কেসটা ফয়সালা হয়নি, আপনারা ইনিসিয়াল পাবেন। কিন্তু, আমাদের তো কোনও কেস ছিল না। আমরা বিকাশ ভবনে আবেদন করেছি, DI-দের কাছে আবেদন করেছি। কোথাও পিএফ কাটা হচ্ছে, কোথাও পিএফ কাটা হচ্ছে না। কোথাও কোথাও সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি জানি দু-তিনটে জেলায় দিয়েছে। যদি, আমাকে ফ্রেশার হিসাবে ট্রিট করা হয়, তাহলে কিন্তু আমি চাকরি পাই না। কারণ, আমার বয়স পেরিয়ে গেছে। তাহলে আমি অ্যাপ্লাই করতে পারতাম না যদি আমার ইন-সার্ভিসটাকে ধরা না হত। খুব সমস‍্যার মধ‍্যে আছি। এমন অবস্থা দাঁড়িয়ে গেছে যে ধার করতে হচ্ছে সংসার চালানোর জন্য।"





Conclusion:ইন-সার্ভিসদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেকশনের বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গেছে, ROPA-90-র সময় 1995 সালে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও পে প্রোটেশন দেওয়ার বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি ছিল। সেই অনুযায়ী ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকারা এই সুবিধা উপভোগ করতে পারতেন। কিন্তু, ROPA-98-এর পর বর্তমানে ROPA-2009 চলছে। ROPA-2009-এ এই ধরনের কোনও বিজ্ঞপ্তি এখনও পর্যন্ত জারি করা হয়নি। তাই ২০১৬ সালের SLST-তে নতুন স্কুলে নিযুক্ত ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যদি কোথাও সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন বা পে প্রোটেক্টশন দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে তা আইনবহির্ভূত। সেটা যেমন সেম স্কেলের জন‍্য প্রযোজ্য, তেমনি লোয়ার থেকে হায়ার স্কেলের জন‍্যেও প্রযোজ্য। তাহলে কি এই ধরনের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বঞ্চিত হবেন? স্কুল শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, না। তাঁরা যদি দপ্তরের প্রতিটি নিয়ম মেনে পরীক্ষায় বসে নতুন স্কুলে জয়েন করে থাকেন তাহলে তাঁরা তাঁদের প্রাপ‍্য পাবেন। তার জন্য দরকার অর্থ দপ্তরের সম্মতি। ইতিমধ্যেই ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স‍্যালারি নিয়ে ডাইরেক্টরেট অফ স্কুল এজ়ুকেশনে একটি ফাইল তৈরি হয়েছে। যেখানে, কোর্ট কেস চলার কারণে সেম স্কেল ও হায়ার থেকে লোয়ার স্কেলে যাচ্ছেন এমন ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন নিয়ে বলা হয়েছে, আদালত যখন যে রকম নির্দেশ দেবে, সেই রকম ব‍্যবস্থা নেওয়া হবে। আর হায়ার থেকে লোয়ার স্কেলের জন‍্য 1995 সালের বিজ্ঞপ্তির মতো একই রকম বিজ্ঞপ্তি করতে বলা হয়েছে। সূত্রের খবর, ফাইলটি ইতিমধ্যেই অর্থ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তবে, কিছু তথ্য চেয়ে ফাইলটি আবার DSE-তে পাঠানো হয়েছে অর্থ দপ্তর থেকে। কিন্তু, সেই তথ‍্য দিয়ে ফাইলটি এখনও অর্থ দপ্তরে পাঠানো হয়নি। সেটি পাঠানোর পর অর্থ দপ্তর সম্মতি দিলেই প্রপার চ‍্যানেলে হায়ার থেকে লোয়ার স্কেলে যাওয়া ইন-সার্ভিস শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সার্ভিস কন্টিনিউয়েশন ও স‍্যালারি সমস‍্যার সমাধান হবে বলে জানাচ্ছেন DSE-র এক আধিকারিক।
Last Updated : May 1, 2019, 12:39 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.