কলকাতা, 18 এপ্রিল : কয়েকদিন আগে ক্যানসার-আক্রান্ত নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের হবু শিক্ষিকা সোমা দাসকে কলকাতা হাইকোর্টে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Calcutta High Court on SSC Candidate Soma Das's Employment) । অন্য কোনও চাকরি তিনি নিতে চান কি না জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি । কিন্তু সোমা দাস স্পষ্ট জানান, তিনি শিক্ষিকা হতে চান ।
আজ, সোমবার নবম-দশমের অন্য একটি মামলায় সোমা দাসের বিষয়টি শিক্ষা দফতরকে মানবিকতার দৃষ্টিতে বিবেচনা করার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় । স্কুল সার্ভিস কমিশন ও শিক্ষা দফতরের সচিবকে বিচারপতি অনুরোধ করেছেন শূন্যপদের নিরিখে বাংলা বিষয়ে সহকারি শিক্ষিকা হিসাবে সোমাকে নিয়োগ করা যায় কি না, তাঁর সমস্ত নথিপত্র খতিয়ে দেখে সেই বিষয়টি বিবেচনা করতে ।
বিচারপতির নির্দেশে আরও বলেন, প্রায় 15 লক্ষ টাকা তাঁর চিকিৎসার খরচ ৷ যদি তিনি চাকরি না পান, তাহলে তাঁর পক্ষে এই খরচ চালানো সম্ভব নয় ৷ তাঁর সমস্ত মেডিক্যাল চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র সাত দিনের মধ্যে শিক্ষা দফতরের সচিবকে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি (Justice Avijit Ganguly)।
মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিচারপতির সামনে তুলে ধরেন, বাংলা বিষয়ে মেধা তালিকা ও ওয়েটিং লিস্টে 186তে নাম ছিল সোমা দাসের ৷ বাকি তিনজন আজাদ আলি মির্জা, জুঁই দাস ও রেশমা খাতুন নামে যারা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের নাম ছিল না, তা সত্ত্বেও কী করে তাঁরা চাকরি পেল ? সেই ব্যাপারে স্কুল সার্ভিস কমিশন ও স্কুল শিক্ষা দফতরের সেক্রেটারিকে দুই সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ।
সোমা দাস-সহ আরও তিন চাকরিপ্রার্থী এই বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন । সোমা দাস জানান, 2019 সালের 27 মার্চ তাঁরা যে সমস্ত ওয়েটিং লিস্টে থাকা চাকরিপ্রার্থীরা কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করছিলেন, তাঁদেরকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে প্রতিশ্রুতি দেন চাকরি দেওয়ার ৷ কিন্তু পরবর্তীকালে আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে 5 জনকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল । কমিটিতে ছিল রাজ্য সরকারের তরফে পাঁচজন ও আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের তরফে পাঁচজন । পরবর্তী কমিটিতে থাকা আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদেরকে বিভিন্ন স্কুলের নিয়োগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সোমা দাস ।
পাশাপাশি আজাদ আলি মির্জা, জুঁই দাস ও রেশমা খাতুন নামে তিন প্রার্থীকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সোমা । এই ব্যাপারেই রাজ্যের কাছে হলফনামাও তলব করেছেন বিচারপতি ।