কলকাতা, 21 ডিসেম্বর: রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মামলার খরচের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থেকে হিসেবে চেয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ এ বার এই নিয়ে তাদের পালটা চিঠি পাঠাল রাজভবন ৷ এর আগে কখনও উচ্চশিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মতো স্বশাসিত সংস্থার থেকে আর্থিক খরচের হিসেব চেয়েছে কি না, তা চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যে যে মামলা চলছে, রাজ্যপালের হয়ে সেই মামলার খরচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিই দিচ্ছে । এই খবর প্রকাশ পেতেই রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক খরচের হিসাব চেয়েছে । কোন খাতের থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি 60 হাজার টাকা করে রাজ্যপালের মামলার জন্য দিচ্ছে, তার বিস্তারিত তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে । যা নিয়ে মূলত রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যে তীব্র দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে ।
সূত্রের খবর, এ রকম পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাজভবন থেকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নতুন করে চিঠি পৌঁছল । রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আর্থিক হিসাব এর আগে কখনও চেয়েছিল কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছে চিঠিতে ৷ আর যদি চেয়ে থাকে সেই তথ্য বিস্তারিত আকারে রাজভবনকে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । যদি এর আগে রাজ্য উচ্চশিক্ষা দফতর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির থেকে আর্থিক হিসাব না নিয়ে থাকে, তাহলে কেন এই প্রথমবার হিসেব চাওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন জোরালো হচ্ছে । রাজভবন সূত্রের দাবি, এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার পরেই নতুন কোনও বড় পদক্ষেপ করতে পারেন রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস ।
অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যে দ্বন্দ্ব নতুন বিষয় নয় । যদিও দিন কয়েক আগে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেন ৷ দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে 'দ্বন্দ্ব' আছে তা স্বীকার করতে নারাজ ছিলেন তিনি । কিন্তু রাজ্যপালের মামলার খরচ বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দিচ্ছে, এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং উচ্চশিক্ষা দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । শুধু তাই নয়, দিন কয়েক আগে রাজ্যপাল সংবাদমাধ্যমকে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তাঁর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মামলার খরচ জোগাচ্ছে । কিন্তু, তারপরেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির কাছে আর্থিক খরচের হিসাব চেয়েছে উচ্চশিক্ষা দফতর । ফলে রাজ্য সরকার এবং রাজভবনের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব ক্রমশ বাড়ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।
আরও পড়ুন: