কলকাতা, 15 অক্টোবর : আনলক পর্বে পুনরায় কাজ যোগ দেওয়ার অনুমতি, বকেয়া বেতন মিটিয়ে দেওয়া ও আরও কয়েক দফা দাবি নিয়ে বুধবার পশ্চিমবঙ্গ গৃহ সহায়িকা ইউনিয়নের পক্ষ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয় । ঢাকুরিয়া বাস স্ট্যান্ড থেকে গড়িয়াহাট পর্যন্ত মিছিল করা হয় । প্রায় 200 জন মিছিলে যোগ দেন ।
লকডাউনের পর ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও প্রতিদিন কোরোনায় সংক্রমিত হচ্ছেন বহু মানুষ । আনলক প্রক্রিয়ায় অনেক কিছু স্বাভাবিক হয়নি । স্বাভাবিক হয়নি গণপরিবহন । শুরু হয়নি ট্রেন চলাচল। প্রতিদিন কয়েক লাখ মানুষ লোকাল ট্রেনে করে শহরে কাজ করতে আসেন । বেশিরভাগ গৃহ সহায়িকারা লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করেন । ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁরা এখন কাজে যোগ দিতে পারছেন না। আবার যাঁরা কাছাকাছি বা শহরে থাকেন তাঁদের অনেকেরই কাজে যোগ দিতে গৃহকর্তাদের বারণ আছে। আবাসনগুলির তরফে বহু জায়গায় এঁদের কাজে আসতে বারণ করা হয়েছে।
পরিস্থিতি কিছুটা সামলেছে । কিন্তু গত মার্চ মাস থেকে শোচনীয় অবস্থা গৃহ সহায়িকাদের। কারও অর্ধেক বেতন হয়েছে তো কারও বেতন মার্চের পর থেকেই বন্ধ । আবার অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছেন । ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, "সংগঠনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েকে চিঠি দেওয়া হয়েছে যাতে রাজ্য সরকার এই চরম পরিস্থিতির মধ্যে এঁদের জন্য কিছু করেন। শুধু রাজ্য সরকারের কাছেই নয় এঁরা যাঁদের বাড়িতে কাজ করতেন বা করেন সেই গৃহকর্তাদের কাছেও আমাদের আবেদন তাঁরা যেন এঁদের বকেয়া মিটিয়ে দেন ।"
আন্দোলনকারীদের মূল দাবি-দাওয়াগুলি হল- লকডাউন উঠে গেছে। কাজের জায়গাতে যেন কোনও সমস্যা না হয় বিষয়টি সরকার যেন দেখে । বর্তমান সময়ে এই পরিবারগুলির ন্যূনতম চাহিদা মেটানোর জন্য মাসিক সাড়ে সাত হাজার টাকা করে দেওয়া হোক এবং পরিবার পিছু মাসে 35 কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া হোক । অন্যদিকে গৃহকর্তাদের কাছে যে আবেদনগুলি তাঁরা রেখেছেন সেগুলি হল- লকডাউনের সময় বেতন দেওয়ার সুযোগ না থাকলেও এখন পুরো বেতনটা যেন দেওয়া হয় । যারা কাজে আসছেন তাঁঁদের স্বাস্থ্য সচেতনতার দিকে নিশ্চিত করা । অর্থাৎ মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ়়ারের ব্যবস্থা করা । পাশাপাশি প্রতিবছর তাঁদের যেমন বোনাস দেওয়া হয় তেমনই এই বছরেও যেন তাঁদের বোনাস দেওয়া হয় ।
ইন্দ্রজিৎবাবু আরও বলেন, "গত কয়েকদিন আগে কালীঘাট থানা এলাকায় ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রিটের এক বাড়িতে গৃহকর্মী কোরোনা আক্রান্ত হন । ওই বাড়ির সহায়িকা সংক্রমণের ভয়ে কাজ করতে যাননি । এর জেরে বাড়ির মালিক তাঁর সেপ্টেম্বর মাসের বেতন দিতে অস্বীকার করেন। ওই সহায়িকা কালীঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করি। অবিলম্বে তাঁর বেতন ও বোনাস দেওয়া হোক।"