কলকাতা, 13 জুলাই : বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে কনট্য়াক্ট ট্রেসিং না হওয়ার ফলে একসঙ্গে অনেক চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী COVID-19-এ আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন । এর ফলে, সাময়িক হলেও বন্ধ হয়ে যেতে পারে ওই সব হাসপাতালের পরিষেবা । এই আশঙ্কার কথা জানালেন এই রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একাংশ । রাজ্যে প্রতিদিন এখন রেকর্ড সংখ্যক COVID-19 আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে । এই অবস্থায়, এভাবে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কায় রয়েছেন চিকিৎসকরা।
কনট্যাক্ট ট্রেসিং অর্থাৎ, কোনও COVID-19 আক্রান্তের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের খুঁজে বের করতে হবে ও তাঁদের কোয়ারানটিনে রাখতে হবে। তাঁদের COVID-19 টেস্ট করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ কথা জানিয়ে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "COVID-19 প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কনট্যাক্ট ট্রেসিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় । অথচ, দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল এবং বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এমনকী স্বাস্থ্যভবনেও কনট্যাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে না।" তিনি বলেন, "COVID-19 -এর সংক্রমণ এখন দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এখন আরও বেশি সংখ্যক হাসপাতাল, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন । অথচ, এই কনট্যাক্ট ট্রেসিং না হওয়ার ফলে এক সঙ্গে বসে যেতে পারেন অনেক চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী । এর ফলে অনেক হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। দেখা দিতে পারে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।"
সরকারি চিকিৎসকদের এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, কোনও COVID-19 রোগীর সংস্পর্শে আসছেন যে সব চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী, নিয়ম অনুযায়ী তাঁদেরও কোয়ারানটিনে রাখার কথা । তাঁদের COVID-19 টেস্ট করিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা । একই রকমভাবে যে সব চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী COVID-19-এ আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের সংস্পর্শে যাঁরা আসছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও এই কনট্য়াক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে না । চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল এবং বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে একের পর এক COVID-19 রোগী ভৃরতি হওয়া সত্ত্বেও, ওই সব COVID-19 রোগীর সংস্পর্শে আসা চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়ারানটিনে না পাঠিয়ে, COVID-19 টেস্ট না করিয়ে তাঁদের দিয়ে টানা ডিউটি করানো হচ্ছে।" তিনি বলেন, "কোনও চিকিৎসক অথবা, নার্স কিংবা, স্বাস্থ্যকর্মী COVID-19-এ আক্রান্ত হলে এক্ষেত্রে আক্রান্তের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও একই রকম করা হচ্ছে, তাঁদের কোয়ারান্টাইনে রাখা হচ্ছে না, টেস্ট করানো হচ্ছে না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ এই ধরনের বিষয়কে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।"
এই কনট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের বিষয়ে সরকারকে তাঁরা আগেও জানিয়েছেন। কনট্যাক্ট ট্রেসিং না হওয়ার ফলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানিয়েছে সার্ভিস ডক্টর ফোরাম। এক্ষেত্রে সরকার যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তার জন্য রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের এই সংগঠনের তরফে দাবি জানানো হয়েছে। এই বিষয়টি সরকারি এই চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য দপ্তরে আবার পেশ করবেন বলে জানানো হয়েছে।