কলকাতা, 25 সেপ্টেম্বর: হঠাৎই বিজেপি সদর দফতরের সামনে বিতর্কিত পোস্টার। মুরুলিধর সেন লেনে রাজ্য বিজেপির প্রধান কার্যালয়ের ঠিক সামনেই প্রাক্তন দুই রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা এবং দিলীপ ঘোষের ঘ ভাঙা নিয়ে পড়েছে পোস্টার। যে পোস্টারকে ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনের জন্য 6 নম্বর মুরুলিধর সেন লেন সংস্কার করা হচ্ছে। সেখানে ছোট ছোট কয়েকটি ঘর ভেঙে আইটি সেলের অফিসকে আরও ভালো করে তৈরি করা হচ্ছে বলে খবর। এছাড়াও তৈরি হবে কল সেন্টারও। এই জন্য জায়গার প্রয়োজন। তাই কার্যালয় সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ভেঙে ফেলা হচ্ছে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা এবং দিলীপ ঘোষের ঘরও। ভাঙা পড়েছে বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের ঘরও। তবে দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহার ঘর ভাঙাকে কেন্দ্র করে নিন্দা করা হয়েছে এই পোস্টারে।
পোস্টারে লেখা রয়েছে, "পশ্চিমবঙ্গ বিভাজন কোনও মূল্যেই মানব না। দিলীপ ঘোষ ও রাহুল সিনহার ঘর ভাঙা নিন্দনীয় ৷ এবিএইচএম-এ যুক্ত হয়ে চন্দ্রচূড় গোস্বামীর হাতকে শক্ত করুন। নির্যাতিত অবহেলিত বিজেপি কর্মীরা এবিএইচএমে স্বাগত।" অর্থাৎ এখানে স্পষ্ট করেই লিখে দেওয়া হয়েছে যে, এবিএইচএম বা অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে এই পোস্টারটি দেওয়া হয়েছে ৷ বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মীদের অখিল ভারতীয় হিন্দু মহা পরিষদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বানও করা হয়েছে। এই ধরনের লেখা-সহ একাধিক পোস্টার পড়েছে পুরো জায়গাজুড়েই। সাদর উপরে কালো হরফে লেখা এহেন পোস্টার দেখে স্থানীয় মানুষ এবং বিজেপি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে রীতিমতো চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এই বিষয়ে অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভার রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী বলেন, "আমাদের কিছু অতি উৎসাহী সমর্থক পোস্টার দিয়েছে নাকি বিজেপির যেসব নির্যাতিত ও নিপীড়িত কর্মী-সমর্থকরা রয়েছেন তারা এই কাজটা করেছে সেটা আমাদের জানা প্রয়োজন। কে বলতে পারে হয়তো আগামিদিনে দিলীপ ঘোষ এবং রাহুল সিনহা আমাদের সঙ্গে যোগ দেবেন না ! আর তাই হয়তো একটা যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা চলছে। তবে আমার মনে হয় যে, এই দলে রাহুল সিনহা এবং দিলীপ ঘোষের যে অবদান রয়েছে সেটাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। তারা নিজেরাও জানিয়েছেন যে তারা মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন 'না খায়েঙ্গে না কিসি কো খানে দেঙ্গে'। তাঁর এই গোটা যুক্তিটাই ভোঁতা হয়ে যাচ্ছে। কারণ ইডি, সিবিআই যখন তদন্ত করছে তখন তাঁরা আর শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে পায় না। তাই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি যে আগামিদিনে ভারতীয় জনতা পার্টি কখনও সনাতনী জাতীয়তাবাদী মানুষদের মর্যাদা দেবে না। কে বা কারা পোস্টারিং করেছে জানা নেই। তবে আমরাও দিলীপবাবু ও রাহুলবাবুর ঘটনায় মর্মাহত। আমরা ধিক্কার জানাই শুভেন্দু অধিকারীর মত মানুষকে। পোস্টারে যা লেখা রয়েছে তা সত্যি।"
এই বিষয়ে পালটা বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, "যেসব মিডিয়া দিদির অনুপ্রেরণায় চলে তারা এই মিথ্যে খবরটা করেছে। মুরলীধর সেন লেনে সবার ঘরই ভাঙা হবে কারণ ওই অফিস নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে ৷ শুধু রাহুল সিনহা বা দিলীপ ঘোষের ঘর নয়। আমি জানি না এই অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাসভা কার কিংবা এটা খায় না মাথায় দেয়। তাদেরকে তো পয়লা বৈশাখে মমতার পদলেহন করতে দেখেছিলাম। এরা দালাল। এই দালালরা না অন্য কেউ পোস্টার ফেলে গিয়েছে সেটা আমার জানা নেই।"
আরও পড়ুন: এনডিএ জোটের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল এআইএডিএমকে
তিনি আরও বলেন, "আগামী নির্বাচনে ওনারা কী বোঝাবেন অখিল ভারতীয় হিন্দু মহাপরিষদের সেই বড় নেতা উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থীও হয়েছিল ৷ উনি আমার সঙ্গে দেখাও করতে এসেছিলেন। কটা ভোট পেয়েছে খুঁজে বার করুন।"