কলকাতা, 28 মার্চ: এবার এক ট্রেনেই আরও দ্রুত সরাসরি কলকাতা থেকে পৌঁছে যাওয়া যাবে জম্মু ও কাশ্মীর । সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব । আর এই কাজটি সম্ভব হবে চেনাব সেতুর সৌজন্যে । সবকিছু ঠিকঠাক এগোলে আগামী বছরের শুরুতেই দ্রুত কলকাতা থেকে ট্রেন পৌঁছে যাওয়া যাবে ভূস্বর্গ কাশ্মীরে (Chenab Rail Bridge) ।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, উপত্যকায় এই ব্রিজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । জম্মু শহরের চেনাব নদীর উপরে তৈরি করা হচ্ছে এই ব্রিজ ৷ যার উপর দিয়ে দৌড়বে রেল । বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু এই রেলসেতু । এই সেতুর মোট দৈর্ঘ্য হল 359 মিটার । এই ব্রিজটির কাজ প্রায় শেষের মুখে । সম্প্রতি কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী বারামুলায় গিয়ে এই প্রকল্পের কাজ খতিয়ে দেখেন । তারপর চেনাব ব্রিজের উপর ভূমিপুজো করেন । তিনি জানান, আগামী বছর জানুয়ারি কিংবা ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে চালু হয়ে যাবে হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থিত এই সেতু । আর এই সেতু চালু হয়ে গেল সারাদেশের সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হবে জম্মু ও কাশ্মীর (Kolkata to Kashmir)।
প্রায় 359 মিটার উঁচুতে অবস্থিত এই রেল ব্রিজ, যা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের চেয়েও উঁচু । লম্বায় প্রায় 1.3 কিলোমিটার এই ব্রিজ । এই রেল সেতুর আর্চ নির্মাণে প্রায় 28,000 টন স্টিলের ব্যবহার করা হয়েছে । ব্রিজটির নির্মাণ খরচ প্রায় 25 হাজার কোটি টাকা । মোট 17টি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ব্রিজ । হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে এই সেতু নির্মাণের কাজ খুব একটা সহজ ছিল না । প্রতিপদে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছিল ইঞ্জিনিয়ারদের । পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে টানেলিং এর জন্য বিশেষ এইচটিএম (Himalayan Tunnelling Method) ব্যবহার করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন: রাতের আকাশে 'প্যারেড' পাঁচ গ্রহের ! বিরল মুহূর্তের সাক্ষী থাকুন আপনিও
বেশ কিছুদিন ধরেই চলেছে ট্রায়াল রান । উধমপুর-শ্রীনগর-বারামুল্লা রেল পরিষেবা চালু হয়ে গেলে এই রুটে ছুটবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ৷ এছাড়াও এই রুটে বন্দে মেট্রো চালু হয়ে হলে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে জম্মু থেকে শ্রীনগর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া যাবে । এই রেললাইন তৈরি করেছে ভারতের জিন্দাল গ্রুপ । এই ব্রিজের উপর যে এইচ আকারের বিম বসিয়ে তার উপর ট্র্যাক পাতা হবে সেগুলি গিয়েছে কলকাতা থেকে । প্রায় 1 হাজার 600 মিটার ট্র্যাক পাতার জন্য 2 হাজার 500টি এইচ বিম কলকাতা থেকে গিয়েছে কাশ্মীর । যেহেতু এই ব্রিজ তৈরিতে করার ক্ষেত্রে উন্নততর প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তাই যেকোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা করতে সক্ষম এই রেল সেতু । ঘণ্টায় 100 কিলোমিটার গতিতে এই সেতুর উপর দিয়ে ছুটবে রেল । এমনকি যদি কখনও 8 রিখটার স্কেল তীব্রতায় ভূমিকম্পও হয় তাতেও এই ব্রিজের কোনও ক্ষতি হবে না । এমনটাই দাবি করেছেন রেলমন্ত্রী । অন্তত 120 বছর পর্যন্ত অক্ষতভাবে দাঁড়িয়ে থাকবে এই সেতু ।