কলকাতা, 18 এপ্রিল: রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আগেই নাম জড়িয়েছিল নদিয়ার তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার ৷ এবার তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ দ্রুত এই মামলার যাবতীয় নথিপত্র ও কেস ডায়েরি সিবিআই'কে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । দ্রুত এই তদন্ত শুরু করতে বলা হয়েছে সিবিআই'কে ৷
এই মামলার শুনানিতে এদিন বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, দুর্নীতি দমন শাখার আইও অনুপম দাস যেভাবে তিন অভিযুক্তের জামিন আটকাতে নিম্ন আদালতে যে রিপোর্ট দিয়েছেন সেটা মনে রাখার মতো । যার জেরে জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে । এত ভালো তদন্ত এগোলেও তাঁর হাত কী করে তাপস সাহাতে এসে আটকে যাচ্ছে সেটা দেখে বিস্মিত আদালত !
এদিন বিচারপতি আরও জানান, রাজ্যের প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দেওয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ আছে । জনমনে বিশ্বাস ও ভরসা জোগাতে এমন ক্ষেত্রে রাজ্যের তদন্তের পরিবর্তে, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করানো প্রয়োজন ৷ এছাড়াও যেহেতু নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এখন রাজ্যে সিবিআই তদন্ত করছে, তখন সিবিআই'কে এই মামলার ভারও দেওয়া যেতে পারে ৷
এদিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি মান্থা আরও বলেন,"এখানে বিধায়কের বিরুদ্ধে তদন্তে রাজ্যের পুলিশের উপরে প্রভাব থাকার সম্ভাবনা থাকবে । এই সব বিষয়গুলিকে অস্বীকার করা হচ্ছে না । আদালত মনে করছে, তদন্তকারী অফিসার এই মামলার তদন্ত সাহসের সঙ্গে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন । কিন্তু মূল অভিযুক্তদের ক্ষেত্রে এসে তদন্ত আটকে যাচ্ছে । এটা থেকে ইঙ্গিত স্পষ্ট । অন্য ধৃতদের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট তাপস সাহা মূল অভিযুক্ত । তাই আদালতের সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে রাজ্যের পুলিশের তদন্তের এই ঢিলেমি নিয়ে । তাঁর হাতে যেসব তথ্য প্রমাণ ছিল তার উপর ভিত্তি করেই আইও তাপসকে হেফাজতে নিতে পারতেন । কিন্তু তিনি সেটা করেননি । সেই জন্যই সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে ।"
আরও পড়ুন: কীসের নথি পুড়েছে ভাঙরে ? জানতে সিবিআই তলব তৃণমূল নেতাকে
উল্লেখ্য, দমকল-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে চাকরি দেওয়ার নাম করে তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা-সহ আরও তিনজন মোট 16 কোটি টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ । বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে মামলায় দুর্নীতি দমন শাখা প্রবীর কয়াল, সুনীল মণ্ডল, শ্যামল কয়ালকে গ্রেফতারও করে । তদন্ত এগোয় । কিন্তু রহস্যজনকভাবে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ, নথি থাকার পরেও মূল অভিযুক্ত তাপস সাহাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি । এরপরেই রাজ্য পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল ৷