কলকাতা, 6 ফেব্রুয়ারি: শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতি মামলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে ফের সিবিআই-কে ভর্ৎসনা করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ সিবিআই-কে তদন্তে গতি আনতে নির্দেশ দিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Calcutta HC Criticises CBI on SSC Investigation Process) ৷ নবম-দশমের নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে একথা বলেন বিচারপতি ৷ পাশাপাশি, এও জানান তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়ায় শূন্যপদে নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ তাই সিবিআই-কে দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ৷
নবম-দশমের নিয়োগ সংক্রান্ত ওই মামলায় সিবিআই এর আইনজীবীকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, "চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ? যাঁরা টাকা দিয়েছেন এবং নিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ?’’ এরপরেই বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আদালত বারবার আপনাদের বলছে, কেন এই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি ? কেন ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি ?’’
এদিন সিবিআই এর তদন্ত প্রক্রিয়া এবং তার গতিপ্রকৃতি নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ৷ সিবিআই-কে ভর্ৎসনা করে তাঁর মন্তব্য, "যারা ওএমআর উত্তরপত্র বিকৃত করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্য়বস্থা নিয়েছেন আপনারা ? কেমন করে সিবিআই তদন্ত করবে, সেটার উপদেশ কেন আদালতকে বারবার বলে দিতে হবে ! এটা ভালো দেখায় না যে, বারবার আদালতকে বলে দিতে হচ্ছে সিবিআই ও কমিশন কীভাবে কাজ করবে ৷’’
পাশাপাশি, যারা টাকা দিয়েছেন এবং যারা টাকা নিয়েছেন, এই দু'পক্ষের প্রতি সিবিআই'য়ের মনোভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আদালত ৷ এমনকী দুর্নীতিতে জড়িতদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও কেন বাছবিচার চলছে ? সেই প্রশ্ন তুলেছে আদালত ৷ বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর প্রশ্ন, "যে বা যাঁরা টাকা পেয়েছেন তাঁদের ক্ষেত্রে সিবিআই এর এই ঢিলেঢালা মনোভাব কেন ? এই 6 বছরে (2016 সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া) অনেক টাকা পাচার করে দিয়েছে ৷ তাঁদের হেফাজতে নিয়ে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করছেন না ?"
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতারি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "কিছু সুবিধাভোগীকে গ্রেফতার করছেন ৷ চার্জশিট পেশ করছেন ৷ বাকি সুবিধাভোগীদের ছেড়ে রেখেছেন ৷ এরকম কেন ? তদন্ত তাড়াতাড়ি শেষ করুন ৷ মামলা ঝুলে থাকলে এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে না ৷ শূন্যপদ থেকে যাবে ৷"
আরও পড়ুন: সিবিআই যা করেছে সেটা অন্যায়, কেন তদন্তে দেরি ? ক্ষোভ প্রকাশ হাইকোর্টের
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে বেশ কিছু ওএমআর উত্তরপত্র বিকৃত করা নিয়ে সিবিআই এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ৷ কিন্তু, সেই তথ্য দেওয়ার ব্যাপারে সিবিআইয়ের ভুলভ্রান্তি নিয়ে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি ৷ এদিন ফের সিবিআই এর কাছে বিচারপতি জানতে চান, কতদিনের মধ্যে বিকৃত ওএমআর সংক্রান্ত তদন্ত শেষ করে, চাকরি বাতিল করতে পারবে তদন্তকারী সংস্থা ? সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, এটা একটা বৃহত্তর দুর্নীতি, তদন্ত করতে সময় লাগছে ৷ কোনও একজন বা দু’জন সুবিধা পেয়েছেন এমন নয় ৷ বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে আদালতে জানান তদন্তকারীরা ৷