কলকাতা, 5 ডিসেম্বর: স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশন। একাধিক বিষয়ে তথ্য তলব নব গঠিত বেঞ্চের। 9 নভেম্বর শীর্ষ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল সেই নির্দেশ মত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত সমস্ত মামলা আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন মূলত যে বিষয়ে নির্দেশে জানিয়েছে আদালত তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলা শীর্ষ আদালত কেন হাইকোর্টে পাঠাল, তা আগে বুঝতে চায় হাইকোর্টের নবগঠিত ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ জানাচ্ছে এখানে একাধিক মামলা রয়েছে। তার মধ্যে আরও নতুন আবেদন যুক্ত হবে কি না, বা একই ধরনের মামলা থাকলে মামলার সংখ্যা কমিয়ে এনে শুনানি করা হবে তাও দেখবে ডিভিশন বেঞ্চ। রাজ্যের হয়ে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই সমস্ত মামলায় রাজ্যকে পার্টি না করে কার্যত একতরফাভাবে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ফলে এই মামলা আদৌ গ্রহণযোগ্য নয় বলেও সওয়াল করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য অন্য কথা বলছে ৷ সমস্ত প্যানেল যদি বাতিল করা হয়, বেশ কয়েকবছর চাকরি করার পর হঠাৎ করে এই কর্মরতদের বিতাড়িত করা হবে। সুতরাং সমস্তদিক খতিয়ে দেখতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ। কোন আইনের বলে চাকরি বাতিল করা হবে সেটা স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছেও জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট। যদি সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয় তবে অনেক যোগ্য ও ন্যায্য প্রার্থীও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানিয়েছে। সেক্ষেত্রে তাদের ক্ষতিপূরণও দিতে হবে বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট।
এর পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে, জনগণের টাকায় তখন কেন ন্যায্য চাকরিপ্রাপকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে ? কিছু পরীক্ষার্থীর ভুল মানে কি এসএসসি কে ভুলের লাইসেন্স প্রদান করা যায়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে হাইকোর্ট ৷ হাইকোর্টে কমিশন জানিয়েছিল, তারা নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে বেআইনি চাকরি প্রাপকদের সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করেছে ৷ আবার সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছে যে কলকাতা হাইকোর্টের চাপে তারা এ কাজ করেছে। কেন এই ভিন্ন অবস্থান তার ব্যাখ্যাও কমিশনের কাছে চেয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ ৷ স্কুল সার্ভিস কমিশন কোন মিটিংয়ের মাধ্যমে চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার বিস্তারিত তথ্যও তলব করেছে আদালত।
এর আগে এসএসসি সংক্রান্ত সব মামলা সুপ্রিম কোর্ট থেকে কলকাতা হাইকোর্টে ফেরৎ আসে। ছয় মাসের মধ্যে শুনানি শেষ করার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতির দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চও গঠন করেন প্রধান বিচারপতি। আগামিকাল থেকে এই সমস্ত মামলার শুনানি শুরু হচ্ছে।
আরও পড়ুন