কলকাতা, 2 নভেম্বর: গুজরাতে যেভাবে নাগরিকত্ব (Gujarat Citizenship Issue) দেওয়া হয়েছে, তাতে সমর্থন নেই মমতার । তিনি মনে করেন, যাঁরা ভারতবর্ষে বসবাস করেন, তাঁরা সকলেই ভারতীয় নাগরিক । তিনি বলেন, ‘‘এ রাজ্যে কোনোভাবেই সিএএ (CAA) লাগু হতে দেবেন না ।’’
মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘গুজরাতে নাগরিকত্ব প্রদান আসলে ভোট রাজনীতি । সেখানে নির্বাচনের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।’’ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, এই রাজ্যে এই ধরনের ভোটের রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না । চেন্নাই যাওয়ার আগে গুজরাতে নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) ।
প্রসঙ্গত, গতকালই গুজরাতের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় প্রতিবেশী তিন রাজ্য থেকে আসা সেখানকার সংখ্যালঘু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ঘোষণা করা হয় । তারপর থেকেই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে । বিশেষ করে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) জানিয়ে দেন, দেশে সিএএ লাগুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । গুজরাতে যখন উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হচ্ছে, বাংলাতেও দেওয়া হবে । কারণ এক যাত্রায় পৃথক ফল হয় না ।
যদিও কেন্দ্রীয় বিজ্ঞপ্তি অনুসারে জানা যায়, গুজরাটের দুই জেলা মেহসানা ও আনন্দে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে । তবে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সংখ্যালঘু অর্থাৎ হিন্দু, শিখ, জৈন, খৃষ্টান, পার্সি ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদেরই এই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে । এবং এই নাগরিকত্ব দেওয়া হবে 2019 সালে তৈরি আইন সিএএ-এর ভিত্তিতে নয় । তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে 1955 সালের সিটিজেনস অ্যাক্ট অনুযায়ী । সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে গুজরাটের ওই দুই জেলার জেলাশাসকদের দ্রুত এই বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় ।
প্রসঙ্গত, এই ইস্যুতে বরাবরই তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) এবং এই মমতার সরকার এই আইন লাগু হওয়ার বিরুদ্ধে । এক্ষেত্রে তৃণমূলের বক্তব্য, এই রাজ্যে বসবাসকারী সমস্ত নাগরিক ভারতবাসী । যাদের ভোটার কার্ড রয়েছে, যারা ভোট দিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্বাচিত করেন, তাদের নতুন করে নাগরিকত্বের প্রয়োজন নেই । দলীয় অবস্থানের সঙ্গে সাজুজ্য রেখেই এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, এই রাজ্যে এই ধরনের ভোটের রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না । কারণ এরাজ্যে বসবাসকারী মানুষ সকলেই এ রাজ্যের নাগরিক ।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে, মন্ত্রিসভায় আশঙ্কা প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর