কলকাতা, 8 ডিসেম্বর: ডিসেম্বর মাসে ঠান্ডার বদলে টানা বৃষ্টিতে আমজনতার মধ্যে তৈরি হয়েছিল তীব্র বিরক্তি। সোশাল মিডিয়ায় এসব নিয়ে নানা মিমও হয়েছে। কিন্তু এই অকাল বৃষ্টির জেরে একেবারেই নেমে গিয়েছে বায়ু দূষণের চোখ রাঙানি। গাছের পাতা হয়েছে ধুলো মুক্ত সবুজ। বাতাসে বেড়েছে অক্সিজেনের মাত্রাও। হাতে গোনা কটা দিন প্রাণ খুলে শ্বাস নিতে পেরেছেন নগরবাসী।
শীত পড়লেই পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে বায়ু দূষণের প্রভাবও। ভারতের বায়ুদূষণের নিরিখে দিল্লির পর অন্যতম দূষীত শহর হিসেবে নাম উঠে এসেছে কলকাতারও। দূষণের জেরে এই সময় ব্যাপক ভাবে বেড়ে যায় শ্বাস কষ্ট বা ফুসফুসের সংক্রমণও। আরও নানা ধরনের অসুখের বাড়বাড়ন্তও হয় এই সময়। তবে মিলেছে খানিকটা স্বস্তি। রাজ্য দূষণ পর্ষদের প্রযুক্তির তথ্য অনুসারে চলতি মাসের 4 তারিখ রবীন্দ্র সরোবরে বায়ুর গুণমান সূচক ছিল 146, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ছিল 210, বিধাননগর ছিল 159, বালিগঞ্জ ছিল 202। দুপুর-বিকালে সেগুলো আরও উপরের দিকে ওঠে। তবে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণি ঝড় মিগজাউম। আর তার সরাসরি প্রভাব বঙ্গে না থাকলেও পরোক্ষ প্রভাবে নিম্নচাপের বৃষ্টি চলে তিন দিন টানা।
মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার টানা বৃষ্টিতে রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গেই ভিজেছে মহানগর কলকাতাও। যখন শীতে জুবুথুবু হয়ে গায়ে জ্যাকেট মাথায় টুপি পড়ার কথা তখন টানা তিনদিন জ্যাকেট টুপির বদলে নগরবাসীর ভরসা ছিল ছাতা। তবে এই টানা বৃষ্টি যেন দূষণে জেরবার কলকাতার কাছে স্বল্প সময়ের জন্য কার্যত আশীর্বাদ। দূষণ পর্ষদের তথ্য অনুসারে, এদিন সল্টলেক, বেলুড়, বিআইটিএম, ফোর্ট উইলিয়াম, যাদবপুর, রবীন্দ্র ভারতী, রবীন্দ্র সরোবর, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সব জায়গায় বাতাসের গুণমান ছিল যথেষ্ট ভালো। সূচক ছিল 50-এর নীচে।
পরিবেশ বিজ্ঞানী সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ বলেন, "শীতের শহর যখন দূষণে সূচক ঊর্ধবমুখী তখন টানা বৃষ্টির জেরে বাতাসের ধুলীকনা মাটিতে মিশিয়েছে। একদিকে যখন ভাসমান ধুলিকনার পরিমাণ কমেছে অনেকটা তখন আরও একটি বিষয় বেড়েছে, তা হল বৃষ্টির জেরে গাছের সবুজ পাতা ধুয়ে সাফ হয়েছে । ফলে প্রাকৃতিক অক্সিজেনের মাত্রা বেরেছে বাতাসে। অন্যদিন ধুলোর মোটা আস্তরণে ঢেকে থাকত। যার জেরে যেমন কার্বনডাই অক্সাইড শোষণ করতে সঠিক ভাবে পারত না গাছ, তেমনই অক্সিজেন বাতাসের ছাড়তে পারত না। সেটা করতে পাড়ায় বাতাসের মান উন্নত হয়েছে।"
আরও পড়ুন