ETV Bharat / state

বঙ্গবন্ধুর খুনি মাজেদ বিয়ে করেছিল ভারতে, আছে কন্যাসন্তানও

উলুবেড়িয়ার এক যুবতিকে বিয়ে করেছিল আবদুল মাজেদ । কিন্তু বিবি সেলিনা জানত না যে মাজেদ বঙ্গবন্ধুর খুনি । ভারতে মাজেদের নাম ছিল আলি আহমেদ।

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Apr 13, 2020, 9:06 PM IST

কলকাতা, 13 এপ্রিল : একদিন আগেই ফাঁসি হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনে অন্যতম দোষী আবদুল মাজেদের । তারপর থেকে একের পর এক তথ্য আসছে গোয়েন্দাদের কাছে । তথ্যে উঠে এসেছে, নিজের থেকে বছর তিরিশের ছোটো উলুবেড়িয়ার এক যুবতিকে বিয়ে করেছিল মাজেদ। এক মেয়েও ছিল দম্পতির । নানা কায়দায় তৈরি করে নিয়েছিল ভারতের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এমনকি পাসপোর্ট। এদেশে তার নাম ছিল আলি আহমেদ।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর খুনে অন‍্যতম দোষী মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকার গাবতলি এলাকায়। বাংলাদেশ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানা যায়, আত্মগোপনের সময়ে মাজেদ যে ক'টি দেশের নাম বলেছিল তার মধ্যে ভারতের নামও রয়েছে। ঢাকার CMM কোর্টে শুনানি চলাকালীন মাজেদকে সরকারি আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জানতে চান, এতদিন কোথায় ছিল মাজেদ? উত্তরে মাজেদ বলে, কলকাতায়। এরপরই তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে নেমে পড়ে কলকাতার গোয়েন্দারা। কোথায় থাকত মাজেদ? কী নামে আত্মগোপন করেছিল ? শুরু হয় তদন্ত । ভারতের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছিল কি না তাও খতিয়ে দেখে পুলিশ ।

সন্দেহ ছিল, ভারতীয় পাসপোর্টও থাকতে পারে তার কাছে। পুলিশের কাছে আসে লিড। তালতলা এলাকায় এক মহল্লায় ভাড়া থাকত সে। সেখানে বহু মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার । সেই সূত্রে পরিচিতিও বাড়ে। ইংরেজিতে অনেকটাই সাবলীল হওয়ায় গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়ে যায় এলাকায় । নানা পরিচিতের মাধ্যমেই উলুবেড়িয়াতেও তার যাতায়াত চলে । সেটা 2007-08 সাল। সেখান থেকে সেলিনা বেগম নামে প্রায় 30 বছরের ছোটো যুবতির সঙ্গে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। 2011 সালে সেলিনাকে বিয়ে করে সে । বছর দুয়েক পরে তাদের এক কন্যাসন্তান হয়। এদিকে বিয়ে করার পর থেকে তালতলার ভাড়া বাড়ি থেকে পার্কস্ট্রিট এলাকার একটি ফ্ল্যাটে চলে যায় সে । কিন্তু তালতলাতে থাকার সময়ই তাঁর রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি হয়ে যায় । গোয়েন্দারা অবশ্য যে আধার কার্ড পেয়েছেন তাতে পার্ক স্ট্রিটের ঠিকানা রয়েছে ।

1975 সালের 15 অগাস্ট সপরিবারে খুন হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তদন্তে নেমে বাংলাদেশ পুলিশ জানতে পারে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আরও কয়েকজনের সঙ্গে ব্যাঙ্কক হয়ে লিবিয়া চলে যায় এই মাজেদ। সেখান থেকে চলে যায় পাকিস্তানে। পরে জিয়াউর রহমান তাকে সেনেগালের দূতাবাসে চাকরি দেয়। 1980 সালে সে বাংলাদেশে ফেরে। তারপর থেকে দীর্ঘ 16 বছর বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ছিল । চাকাটা ঘুরে যায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামি লিগ সরকার গঠন হওয়ার পর। ফের গা ঢাকা দেয় মাজেদ। সেই সময়ই সে প্রথমবার ভারতে আসে।

তবে প্রথম থেকে ভারতে থাকেনি মাজেদ । আবারও লিবিয়া চলে যায় মাজেদ। সেখান থেকে পাকিস্তান। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে আবার ভারতে ঢোকে মাজেদ । এদেশের বেশ কয়েকটি শহর ঘুরে অবশেষে কলকাতায় এসে থিতু হয় সে। তারপর থেকে এই শহরে ছিল। তার বিবি সেলিনা অবশ্য বুঝতেই পারেনি মাজেদ বঙ্গবন্ধুর খুনি। পিছনের ইতিহাস বিবির কাছে বেমালুম চেপে গিয়েছিল মাজেদ । গোয়েন্দাদের এমনটাই জানিয়েছে সেলিনা। বাংলাদেশ গ্রেপ্তার হওয়ার পরও প্রথমে জানা যায়নি। পরে জানতে পারে পুরো বিষয়টা। শনিবার রাতে তার ফাঁসির কথা শুনতে পরদিন সকালে তা জানতে পারে সেলিনা । তবে তদন্তের জন্য এখনও পর্যন্ত গোয়েন্দাদের সহযোগিতা করে চলেছে সে ।

কলকাতা, 13 এপ্রিল : একদিন আগেই ফাঁসি হয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনে অন্যতম দোষী আবদুল মাজেদের । তারপর থেকে একের পর এক তথ্য আসছে গোয়েন্দাদের কাছে । তথ্যে উঠে এসেছে, নিজের থেকে বছর তিরিশের ছোটো উলুবেড়িয়ার এক যুবতিকে বিয়ে করেছিল মাজেদ। এক মেয়েও ছিল দম্পতির । নানা কায়দায় তৈরি করে নিয়েছিল ভারতের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এমনকি পাসপোর্ট। এদেশে তার নাম ছিল আলি আহমেদ।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর খুনে অন‍্যতম দোষী মাজেদকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকার গাবতলি এলাকায়। বাংলাদেশ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানা যায়, আত্মগোপনের সময়ে মাজেদ যে ক'টি দেশের নাম বলেছিল তার মধ্যে ভারতের নামও রয়েছে। ঢাকার CMM কোর্টে শুনানি চলাকালীন মাজেদকে সরকারি আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জানতে চান, এতদিন কোথায় ছিল মাজেদ? উত্তরে মাজেদ বলে, কলকাতায়। এরপরই তার বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিতে নেমে পড়ে কলকাতার গোয়েন্দারা। কোথায় থাকত মাজেদ? কী নামে আত্মগোপন করেছিল ? শুরু হয় তদন্ত । ভারতের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছিল কি না তাও খতিয়ে দেখে পুলিশ ।

সন্দেহ ছিল, ভারতীয় পাসপোর্টও থাকতে পারে তার কাছে। পুলিশের কাছে আসে লিড। তালতলা এলাকায় এক মহল্লায় ভাড়া থাকত সে। সেখানে বহু মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার । সেই সূত্রে পরিচিতিও বাড়ে। ইংরেজিতে অনেকটাই সাবলীল হওয়ায় গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়ে যায় এলাকায় । নানা পরিচিতের মাধ্যমেই উলুবেড়িয়াতেও তার যাতায়াত চলে । সেটা 2007-08 সাল। সেখান থেকে সেলিনা বেগম নামে প্রায় 30 বছরের ছোটো যুবতির সঙ্গে তৈরি হয় প্রেমের সম্পর্ক। 2011 সালে সেলিনাকে বিয়ে করে সে । বছর দুয়েক পরে তাদের এক কন্যাসন্তান হয়। এদিকে বিয়ে করার পর থেকে তালতলার ভাড়া বাড়ি থেকে পার্কস্ট্রিট এলাকার একটি ফ্ল্যাটে চলে যায় সে । কিন্তু তালতলাতে থাকার সময়ই তাঁর রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড তৈরি হয়ে যায় । গোয়েন্দারা অবশ্য যে আধার কার্ড পেয়েছেন তাতে পার্ক স্ট্রিটের ঠিকানা রয়েছে ।

1975 সালের 15 অগাস্ট সপরিবারে খুন হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তদন্তে নেমে বাংলাদেশ পুলিশ জানতে পারে, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আরও কয়েকজনের সঙ্গে ব্যাঙ্কক হয়ে লিবিয়া চলে যায় এই মাজেদ। সেখান থেকে চলে যায় পাকিস্তানে। পরে জিয়াউর রহমান তাকে সেনেগালের দূতাবাসে চাকরি দেয়। 1980 সালে সে বাংলাদেশে ফেরে। তারপর থেকে দীর্ঘ 16 বছর বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ছিল । চাকাটা ঘুরে যায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামি লিগ সরকার গঠন হওয়ার পর। ফের গা ঢাকা দেয় মাজেদ। সেই সময়ই সে প্রথমবার ভারতে আসে।

তবে প্রথম থেকে ভারতে থাকেনি মাজেদ । আবারও লিবিয়া চলে যায় মাজেদ। সেখান থেকে পাকিস্তান। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে আবার ভারতে ঢোকে মাজেদ । এদেশের বেশ কয়েকটি শহর ঘুরে অবশেষে কলকাতায় এসে থিতু হয় সে। তারপর থেকে এই শহরে ছিল। তার বিবি সেলিনা অবশ্য বুঝতেই পারেনি মাজেদ বঙ্গবন্ধুর খুনি। পিছনের ইতিহাস বিবির কাছে বেমালুম চেপে গিয়েছিল মাজেদ । গোয়েন্দাদের এমনটাই জানিয়েছে সেলিনা। বাংলাদেশ গ্রেপ্তার হওয়ার পরও প্রথমে জানা যায়নি। পরে জানতে পারে পুরো বিষয়টা। শনিবার রাতে তার ফাঁসির কথা শুনতে পরদিন সকালে তা জানতে পারে সেলিনা । তবে তদন্তের জন্য এখনও পর্যন্ত গোয়েন্দাদের সহযোগিতা করে চলেছে সে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.