কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর : একাধিক দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল বাম যুব ও ছাত্র সংগঠন ৷ সেই মিছিলকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার বাধল হাওড়ার বঙ্গবাসী মোড়ে ৷ দফায় দফায় পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে ৷ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ৷ পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি হয় ৷ বিক্ষোভকারীদের হঠাতে চালানো হয় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস । জখম হয়েছেন কয়েকজন বামকর্মী ও পুলিশ ৷ মারধর করা হয় স্থানীয় বাসিন্দা ও সাংবাদিকদেরও ৷ তিনটে বোমা ও দুটি স্মোক বোমা পড়েছে ৷ আপাতত অবরোধের উদ্দেশ্যে হাওড়া ব্রিজের দিকে যাচ্ছেন বামকর্মীরা ৷ ঘটনাস্থানে আসছেন CPI(M) নেতা মহম্মদ সেলিম ৷
কম খরচে পড়াশোনা, কর্মসংস্থান, সবার জন্য কাজ, বেকার ভাতার দাবিতে গতকাল সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অভিযানের ডাক দেয় SFI ও DYFI ৷ প্রথম দিনে সিঙ্গুর থেকে ডানকুনি পর্যন্ত এসেছিল মিছিল ৷ এরপর আজ সকাল থেকেই হাওড়া স্টেশনে হাওড়ার রেল মিউজ়িয়ামের জমায়েত শুরু হয় ৷ সেজন্য কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয় ৷ হাজারখানেক পুলিশ মোতায়েন করা হয় ৷ পুলিশ কমিশনারের বাংলোর কাছে মিছিলটি আটকে দেওয়া হবে বলে পরিকল্পনা ছিল পুলিশের ৷ যে কোনও সংঘর্ষ বা অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে পর্যাপ্ত সংখ্যক RAF ও লাঠিধারী পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল ৷ জল কামানও তৈরি রাখা হয়েছিল ৷
কিন্তু, তা সত্ত্বেও এড়ানো যায়নি অশান্তি ৷ দুপুর দুটো নাগাদ মিছিল কিছুটা এগোতেই মল্লিক ফটকের কাছে তা আটকায় পুলিশ ৷ প্রাথমিকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করলেও পিছু হটতে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা ৷ তাঁদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয় ৷ মিছিলকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে ৷ পালটা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি হয় ৷ এরপর জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানোর পর মল্লিক ফটকের লাগোয়া গলিতে ঢুকে পড়েন ৷ বামকর্মীদের অভিযোগ, সেই সময় পার্শ্ববর্তী বাড়ির ছাদ থেকে ইট ছুড়তে থাকেন তৃণমূলকর্মী ও পুলিশ ৷ এরপর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি ৷ গলির মধ্যে ঢুকে দোকানে ভাঙচুর চালায় বামকর্মীরা ৷ বহিরাগত সন্দেহে মারধর করা হয় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ৷ মাথা ফেটে যায় স্থানীয়দের ৷ পুলিশের অভিযোগ, এরপরই ছাদের উপর থেকে বামকর্মীরা ইট ছুড়তে থাকেন ৷ বামকর্মীদের দিক থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ফ্ল্যাগে আগুন লাগিয়ে ছোড়া হয় ৷ জখম হন কয়েকজন বিক্ষোভকারী ও পুলিশকর্মী ৷ কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৷
প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, প্রাথমিকভাগে যুব নেতারা সামনে থাকলেও পুলিশের লাঠিচার্জের পর তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান ৷ এর ফলে, সাধারণ কর্মীদের উপর রাশ আলগা হয়ে যায় নেতৃত্বদের ৷ তার জেরে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে ৷ মারমুখী হয়ে ওঠেন বামকর্মীরা ৷ একটি অংশ শান্ত করার চেষ্টা করলেও কোনও কাজ হয়নি ৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাম নেতৃত্ব ৷ তাঁদের বক্তব্য, বিনা প্ররোচনায় শান্তিপূর্ণ মিছিলের আক্রমণ করেছে পুলিশ ৷ তার জেরেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন বামকর্মীরা ৷ উলটে 10-12 জনের বামকর্মীর মাথা ফেটে গেছে ৷