ETV Bharat / state

সংক্রমণ এড়াতে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত, মধ্যবিত্তের কাঁধে নতুন বোঝা - financial crisis

খরচা বাড়লেও বাড়েনি আয় । অনেকের আবার আয় কমেছে । বেতন ছাঁটছে কর্তৃপক্ষ । ফলে যাতায়াত খরচা বাড়ায় রীতিমতো টান পড়ছে সংসারে ।

File Photo
ফাইল ফোটো
author img

By

Published : Aug 17, 2020, 3:56 PM IST

হাওড়া, 16 অগাস্ট : কোরোনার জেরে দু'মাস লকডাউনে বন্ধ ছিল যাত্রী পরিবহন । জুনের শুরুতে দেশজুড়ে আনলক চালু হওয়ায় তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে । কোরোনার একাধিক নির্দেশিকা মেনে পথে নামে বাস, ট্যাক্সি বা অটো । যাত্রী পরিবহন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও সংক্রমণের ভয়ে এসব এড়িয়েই চলছে মানুষজন । বদলে ব্যবহার করছে ব্যক্তিগত গাড়ি । যার জেরে রাস্তায় যেমন যানজট বাড়ছে তেমনই বাড়ছে মধ্যবিত্তের খরচা । বাইক বা ছোটো গাড়ি ব্যবহারের ফলে যাতায়াতের খরচা অনেকটাই বাড়ছে বলে জানাচ্ছে নিত্যযাত্রীরা ।

কোরোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও জুনের শুরুতে আনলকের পরপরই অফিস খুলতে শুরু করে বেসরকারি সংস্থাগুলি । একই পথে হাঁটে সরকারি দপ্তরগুলিও । উপস্থিতিও কার্যত বেঁধে দেওয়া হয় । যার ফলে বাধ্য হয়েই বেশিরভাগ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার শুরু করেন । কিন্তু বাস, ট্যাক্সি বা অটোর সমস্যা থাকায় নাকাল হতে হয়েছে নিত্য যাত্রীদের । কখনও লম্বা লাইনের জেরে ভোগান্তি তো কখনও বাসে সিট না থাকায় জোর করে ঝুলতে ঝুলতে যাওয়ার ভোগান্তি । এই সবের জন্যই অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন । পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতেও ব্যক্তিগত গাড়িকেই বেছে নেয় তারা । যার ফলে রাস্তায় বের হলেই বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বাইক বা ছোটো গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই বেশি ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে ভাড়ার জেরে ধাক্কা খাচ্ছে বাস বা অটো পরিষেবা, তারউপর যাত্রী কম মেলায় ভোগান্তি আরও বাড়ছে । শুধু পরিবহন পরিষেবাতেই সমস্যা হচ্ছে তা নয় । মধ্যবিত্তের পকেটেও টান পড়ছে যাতায়াত খরচা বাড়ার ফলে । নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, লকডাউনের পর থেকে যাতায়াত খরচা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা । চাকরি করতে গেলে যেতেও হবে অফিস । তাই বাসে যাওয়ার থেকে বাইকে যাওয়াই ভালো । ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেকটা রাস্তাই যাতায়াত করতে হচ্ছে ফলে দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ছে খরচা ।

সংক্রমণ এড়াতে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত, মধ্যবিত্তের কাঁধে নতুন বোঝা

হাওড়া ব্রিজ, যা হাওড়া এবং কলকাতা শহরের যোগাযোগ রক্ষা করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । হাওড়া, হুগলি, বর্ধমানের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ অফিস যাতায়াত করেন এই ব্রিজের উপর দিয়ে । বর্তমানে হাওড়া ব্রিজে সকাল থেকেই বাইক এবং ছোটো গাড়ির ভিড় দেখা যাচ্ছে । কোরোনার মাঝে ছোটো গাড়ি এবং বাইকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করছেন হাওড়ার রিজিওনাল ট্র্যাফিক অফিসার সৌমিত্র বিশ্বাসও । তাঁর কথায়, "কত গাড়ি বেড়েছে তা নিয়ে সার্ভে করা না হলেও প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেকটাই বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা । বাইক ও ছোটো গাড়ি শহরের রাস্তায় নজরে পড়ছে প্রচুর । ফলে ট্রাফিক জ্যামও হচ্ছে অনেক জায়গাতেই । মানুষ গণপরিবহনকে এড়িয়ে চলতে চাইছেন সংক্রমণের ভয়ে ।"

এরকমই এক বাইক আরোহীর কথায়, "আগে বাসে ট্রেনে যাতায়াত করতাম । কিন্তু বর্তমানে লোকাল ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ । সেইসঙ্গে বাসে সামাজিক দূরত্ব সবসময় মেনে চলা সম্ভব হয় না । সংক্রমনের একটা তো ভয় থেকেই যায় । বাসগুলি স্যানিটেশন হয় কি না তাও জানি না । বাড়িতে বৃদ্ধ এবং কম বয়সী অনেকেই রয়েছেন যারা সংক্রমিত হতে পারেন যদি আমি সংক্রমিত হই । তাই বাধ্য হয়েই বাইকে যাতায়াত করছি । যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায় । কিন্তু এই ভাবে যাতায়াত করার জন্য যে খরচা তা অনেকটাই বেড়ে গেছে । আগে যেখানে 1500 থেকে 2000 টাকায় যাতায়াত হয়ে যেত, এখন পেট্রল খরচাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় 4000 টাকার কাছাকাছি । ফলে মধ্যবিত্ত সংসারে টান পড়ছে ।"

খরচা বাড়লেও বাড়েনি আয় । অনেকের আবার আয় কমেছে । বেতন ছাঁটছে কর্তৃপক্ষ । ফলে যাতায়াত খরচাই এতোটা বেড়ে যাচ্ছে, তাতে রীতিমতো টান পড়ছে সংসারে । নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, এই খরচা বাড়ার পাশাপাশি তো কোরোনার জেরে বেড়ে স্যানিটাইজ়েশনের খরচাও । যার জেরে ভোগান্তি হচ্ছে ।

হাওড়া, 16 অগাস্ট : কোরোনার জেরে দু'মাস লকডাউনে বন্ধ ছিল যাত্রী পরিবহন । জুনের শুরুতে দেশজুড়ে আনলক চালু হওয়ায় তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে । কোরোনার একাধিক নির্দেশিকা মেনে পথে নামে বাস, ট্যাক্সি বা অটো । যাত্রী পরিবহন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও সংক্রমণের ভয়ে এসব এড়িয়েই চলছে মানুষজন । বদলে ব্যবহার করছে ব্যক্তিগত গাড়ি । যার জেরে রাস্তায় যেমন যানজট বাড়ছে তেমনই বাড়ছে মধ্যবিত্তের খরচা । বাইক বা ছোটো গাড়ি ব্যবহারের ফলে যাতায়াতের খরচা অনেকটাই বাড়ছে বলে জানাচ্ছে নিত্যযাত্রীরা ।

কোরোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও জুনের শুরুতে আনলকের পরপরই অফিস খুলতে শুরু করে বেসরকারি সংস্থাগুলি । একই পথে হাঁটে সরকারি দপ্তরগুলিও । উপস্থিতিও কার্যত বেঁধে দেওয়া হয় । যার ফলে বাধ্য হয়েই বেশিরভাগ মানুষ গণপরিবহন ব্যবহার শুরু করেন । কিন্তু বাস, ট্যাক্সি বা অটোর সমস্যা থাকায় নাকাল হতে হয়েছে নিত্য যাত্রীদের । কখনও লম্বা লাইনের জেরে ভোগান্তি তো কখনও বাসে সিট না থাকায় জোর করে ঝুলতে ঝুলতে যাওয়ার ভোগান্তি । এই সবের জন্যই অনেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন । পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতেও ব্যক্তিগত গাড়িকেই বেছে নেয় তারা । যার ফলে রাস্তায় বের হলেই বর্তমানে দেখা যাচ্ছে বাইক বা ছোটো গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই বেশি ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিকে ভাড়ার জেরে ধাক্কা খাচ্ছে বাস বা অটো পরিষেবা, তারউপর যাত্রী কম মেলায় ভোগান্তি আরও বাড়ছে । শুধু পরিবহন পরিষেবাতেই সমস্যা হচ্ছে তা নয় । মধ্যবিত্তের পকেটেও টান পড়ছে যাতায়াত খরচা বাড়ার ফলে । নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, লকডাউনের পর থেকে যাতায়াত খরচা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা । চাকরি করতে গেলে যেতেও হবে অফিস । তাই বাসে যাওয়ার থেকে বাইকে যাওয়াই ভালো । ট্রেন বন্ধ থাকায় অনেকটা রাস্তাই যাতায়াত করতে হচ্ছে ফলে দ্বিগুণেরও বেশি বাড়ছে খরচা ।

সংক্রমণ এড়াতে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাতায়াত, মধ্যবিত্তের কাঁধে নতুন বোঝা

হাওড়া ব্রিজ, যা হাওড়া এবং কলকাতা শহরের যোগাযোগ রক্ষা করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । হাওড়া, হুগলি, বর্ধমানের মতো বিভিন্ন জায়গা থেকে বহু মানুষ অফিস যাতায়াত করেন এই ব্রিজের উপর দিয়ে । বর্তমানে হাওড়া ব্রিজে সকাল থেকেই বাইক এবং ছোটো গাড়ির ভিড় দেখা যাচ্ছে । কোরোনার মাঝে ছোটো গাড়ি এবং বাইকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করছেন হাওড়ার রিজিওনাল ট্র্যাফিক অফিসার সৌমিত্র বিশ্বাসও । তাঁর কথায়, "কত গাড়ি বেড়েছে তা নিয়ে সার্ভে করা না হলেও প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, অনেকটাই বেড়েছে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা । বাইক ও ছোটো গাড়ি শহরের রাস্তায় নজরে পড়ছে প্রচুর । ফলে ট্রাফিক জ্যামও হচ্ছে অনেক জায়গাতেই । মানুষ গণপরিবহনকে এড়িয়ে চলতে চাইছেন সংক্রমণের ভয়ে ।"

এরকমই এক বাইক আরোহীর কথায়, "আগে বাসে ট্রেনে যাতায়াত করতাম । কিন্তু বর্তমানে লোকাল ট্রেন পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ । সেইসঙ্গে বাসে সামাজিক দূরত্ব সবসময় মেনে চলা সম্ভব হয় না । সংক্রমনের একটা তো ভয় থেকেই যায় । বাসগুলি স্যানিটেশন হয় কি না তাও জানি না । বাড়িতে বৃদ্ধ এবং কম বয়সী অনেকেই রয়েছেন যারা সংক্রমিত হতে পারেন যদি আমি সংক্রমিত হই । তাই বাধ্য হয়েই বাইকে যাতায়াত করছি । যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যায় । কিন্তু এই ভাবে যাতায়াত করার জন্য যে খরচা তা অনেকটাই বেড়ে গেছে । আগে যেখানে 1500 থেকে 2000 টাকায় যাতায়াত হয়ে যেত, এখন পেট্রল খরচাই বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় 4000 টাকার কাছাকাছি । ফলে মধ্যবিত্ত সংসারে টান পড়ছে ।"

খরচা বাড়লেও বাড়েনি আয় । অনেকের আবার আয় কমেছে । বেতন ছাঁটছে কর্তৃপক্ষ । ফলে যাতায়াত খরচাই এতোটা বেড়ে যাচ্ছে, তাতে রীতিমতো টান পড়ছে সংসারে । নিত্যযাত্রীদের অনেকেই বলছেন, এই খরচা বাড়ার পাশাপাশি তো কোরোনার জেরে বেড়ে স্যানিটাইজ়েশনের খরচাও । যার জেরে ভোগান্তি হচ্ছে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.