হাওড়া, 14 নভেম্বর: এতকাল ব্যবসায়ী, নেতা-মন্ত্রী বা উচ্চবিত্ত মানুষদের ব্যবসার স্থান সুরক্ষিত রাখতে, কিংবা বাড়িতে নিজেদের সুরক্ষার জন্যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হত । তবে শৌচালয়কে সুরক্ষিত রাখার জন্য বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা । তাও আবার একটা নয়, একেবারে পাঁচটি সিসিটিভি ক্যামেরা (CCTV Cameras) বসানো হয়েছে ৷
হ্যাঁ এমনই অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে বানিপুর এক নম্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত হোগলা পাড়া এলাকায় ৷ যা শুনে সকলকেই অবাক হচ্ছেন তো । কারণ এমন ঘটনা আজ অব্ধি কেউ শুনেছে বলে মনে হয় না । তাহলে খোলসা করে বলা যাক আসল ঘটনাটি ৷
এলাকার মানুষের উপকারের জন্য পঞ্চায়েত থেকে ওই এলাকায় একটি শৌচালয় তৈরি করা হয়েছে । তবে এই শৌচালয় নির্মাণ হওয়ায় এলাকার কয়েকজনের ঠিক পছন্দ হয়নি । তারা এখানে শৌচালয় হোক তাতে খুশি নন । তাই সুযোগ পেলেই শৌচালয়ের দরজা ভেঙে দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি । আর যারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত তাদের হাতেনাতে ধরার জন্য ও শৌচালয়টিকে সুরক্ষিত রাখতে বসানো হয়েছে এই সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি (CCTV cameras installed to protect common toilet) ৷ এমনটাই জানা গিয়েছে পঞ্চায়েত সূত্রে ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য রাজকুমার গুপ্তা বলেন, "এই শৌচালয় পঞ্চায়েত থেকে তৈরি করা হয়েছে স্থানীয় এলাকাবাসীদের সুবিধার জন্য । তবে সকলে এতে সাহায্য করলেও এলাকার কয়েকজন শুরুর দিন থেকেই এর বিরোধীতা করে আসছে । তারাই এই কাজ আটকানোর জন্য অনেক প্রশাসনিক স্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে । যদিও সব বাধাকে উপেক্ষা করে এখানে শৌচালয়টি চালু করেছে পঞ্চায়েত । উদ্বোধনের দিনক্ষণ আগে থেকে জানা সত্ত্বেও ওই দিনেই উদ্বোধনের আগে শৌচালয়ের দেওয়ালে পানের পিক ফেলে নষ্ট করা হয় । এরপর সিসিটিভি ঠিকমতো কাজ করছে না জেনে শৌচালয়ের দরজা ভেঙে দেওয়া হয় ।"
তিনি আরও বলেন, "যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা এলাকার মানুষের সুবিধার কথা ভাবে না । শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য । দরজা ভাঙার ঘটনার পর পুলিশ ও প্রশাসনকে ওই বিরোধীতাকারীদের নাম জানিয়ে দেওয়া হয়েছে । এরপর আইন অনুযায়ী তারা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ৷"
একই বক্তব্য এলাকার বাসিন্দা মুন্না সিংয়ের । তিনি বলেন, "এলাকার মানুষের সুবিধার জন্য এই শৌচালয় তৈরি হলেও, এলাকাতে কিছু অসাধু মানুষ আছে যাদের তা পছন্দ হয়নি । শনিবার রাত্রে অন্ধকারে তারাই ইঁট মেরে দরজা ভেঙেছে । পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে দ্রুত তদন্ত করে অভিযুক্তদের খুঁজে শাস্তি দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি । এর আগেও শৌচালয়ের কল, পাইপ ভেঙে ফেলা হয়েছিল । তারাই এই ঘটনা আগেও ঘটায় ৷"
আরও পড়ুন: 2 কোটিতে বিক্রি হচ্ছে একটা গ্রাম, কিনবেন নাকি!
তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি দীপক ঠাকুর বলেন," থানার আধিকারিকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে । সোমবার পঞ্চায়েতের প্যাডে লিখিত অভিযোগ থানাতে জমা দেওয়া হবে ৷ পুলিশ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে ৷" যদিও এভাবে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে শৌচালয়ের সুরক্ষা করার বিষয়টি বেশ অভিনব বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।