ETV Bharat / state

First Barwari Puja: বাংলার প্রথম বারোয়ারি আজও পায়নি হেরিটেজের স্বীকৃতি - First Barwari puja

বিন্ধ্যবাসিনীর জগদ্ধাত্রীই (Jagadhatri Puja 2022) হল বাংলার প্রথম বারোয়ারি পুজো (Bengal First Barwari puja)৷ এ বছর এই পুজোর 263তম বর্ষ ৷ তবে আজও মেলেনি হেরিটেজের স্বীকৃতি ৷

jagadhatri-puja-2022-bengal-first-barwari-puja-organised-at-hooghly
বাংলার প্রথম বারোয়ারি আজও পায়নি হেরিটেজের স্বীকৃতি
author img

By

Published : Oct 28, 2022, 8:07 PM IST

হুগলি, 28 অক্টোবর: অবিভক্ত বাংলার প্রথম বারোয়ারি (Bengal First Barwari puja) আজ জৌলুস হারিয়েছে । দুর্গা পুজোকে ইউনেস্কো হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছে । কিন্তু রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রথম বারোয়ারি হিসাবে স্বীকৃতি পায়নি গুপ্তিপাড়ার বিন্ধ্যবাসিনীর জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja 2022)। স্থানীয় মানুষের দাবি, প্রথম বারোয়ারি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক এই পুজোকে । বেঙ্গল গেজেটে নথিভূক্ত থাকা প্রাচীন বারোয়ারি হিসেবে কেউই স্বীকৃতি পায়নি । বিন্ধ্যবাসিনীর জগদ্ধাত্রীর বারোয়ারির কোনও উন্নতি নেই । দেখভাল ও সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আদি বারোয়ারির অস্তিত্ব ।

কী করে সৃষ্টি হল এই প্রথম বারোয়ারি ?

রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে নানা জায়গায় বারোয়ারি পুজোর প্রচলন রয়েছে । কিন্তু এই বারোয়ারি ও মূর্তি প্রথম প্রচলন হয় হুগলি জেলাতেই । অতীতে গুপ্তিপাড়ায় দুর্গাপুজোর সময় এক জমিদার বাড়িতে অপমানিত হন গ্রামবাসীরা । ক্ষুব্ধ হয়ে পুজো থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা । পরে 12 জন ইয়ার বন্ধু মিলে বিন্ধ্যবাসিনী বারোয়ারীর পুজো শুরু করেন । এখানেই মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করা হয় । রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রথম ঘট পুজো করেন বিন্ধ্যবাসিনীরূপী জগদ্ধাত্রীর । গুপ্তিপাড়ার (Hooghly news) এক ইতিহাসবিদ সুজিত মুখোপাধ্যায় বিদ্যারত্ন সূত্রে এ কথা জানা গিয়েছে ।

দক্ষিণ ভারতে বিন্ধ্যবাসিনীর পুজো হয় । তা বাংলার জগদ্ধাত্রী রূপ । সেই রূপকে প্রথম ঘটে পুজো করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র । প্রথম বারোয়ারী মূর্তি পূজিত হয় গুপ্তিপাড়ায় । মতান্তর থাকলেও জানা যায়, 1166 বঙ্গাব্দ ও ইংরাজির 1759 সালে প্রথম এই বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী প্রতিমার পুজো শুরু হয় এখানে । বেঙ্গল গেজেটের সূত্র মারফত জানা যায় এর তারিখ । এটা মন্দিরের গায়ে আজও খোদিত আছে । সেই থেকে নিয়মনিষ্ঠা মেনে পুজো হয়ে আসছে ।

এই পুজোর মাহাত্ম্য কী ?

স্থানীয় সূত্রে যেটা জানা যায়, পুরনো একই কাঠামোয় আজও পুজো হয়ে আসছে । এখানে দেবী জগদ্ধাত্রী উদয়কালীন সূর্যের লাল রঙে পুজিতা । চার হাত বিশিষ্ট জগদ্ধাত্রী অধিষ্ঠিত হয় এখানে । দেবীর একপাশে বিষ্ণু ও অন্য পাশে শিবের মূর্তি রয়েছে । জগদ্ধাত্রীর ভৈরব যেহেতু নীলকন্ঠ শিব, তার প্রতীক রূপে এখানে শিবকে পুজো করা হয় । বিষ্ণু যেহেতু সবার অধিপতি দেবতা, সেই কারণে বিষ্ণুর মূর্তি থাকে দেবীর সঙ্গেই । ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এক দিনে পুজো হয়ে থাকে । পুজোয় কুমড়ো ও আখ বলি হয় । নবমীর দিন মালসায় ভোগ করা হয় । রাতে আতশবাজি পোড়ানো হয় । এ বছর সবুজ বাজি রোশনাই দেখা যাবে । বহু মানুষ আসেন এই পুজো দেখতে ।

আরও পড়ুন: গান্ধিজির আদলে অসুর ! হিন্দু মহাসভাকে জবাব দিতে কালীমণ্ডপে হাজির 'জীবন্ত গান্ধি'!

বিন্ধ্যবাসিনী পুজোর সম্পাদক তারকনাথ বলেন, কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারকে অবগত করার পরও এই বিন্ধ্যবাসিনীর প্রথম বারোয়ারি কোনও স্বীকৃতি পায়নি । হেরিটেজ দফতর থেকেও কোনওরকম সাহায্য সহযোগিতাও পায়নি আগে । চন্দননগর কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে কিছুটা সহযোগিতা আসত । করোনাকালে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে । বর্তমানে পুজো এবং পরম্পরা বহন করতে খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে আমাদের । আমরা চাই মন্দিরের নিজস্ব জায়গায় নব রূপে মন্দির সংস্কার করুক । সরকারের হেরিটেজ দফতর স্বীকৃতি দিক এই পুজোকে । কালীপুজোর পরদিন থেকেই আমাদের প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয় । নিয়ম নিষ্ঠা মেনে নবমী ও দশমী পুজো হয়ে আসছে । একই কাঠামোয় পুজো হয় দীর্ঘদিন ধরেই ।"

বাংলার প্রথম বারোয়ারি আজও পায়নি হেরিটেজের স্বীকৃতি

স্থানীয় এক অভিজ্ঞ ব্যক্তি সুব্রত মণ্ডল বলেন, "বিন্ধ্যবাসিনীতলা থেকেই প্রথম বারোয়ারির সৃষ্টি হয় । আজ তার 263 বছর । কিন্তু কোনও স্বীকৃতি নেই প্রথম বারোয়ারি হিসেবে । এখন অনেক বারোয়ারিতে মহাসমারহে পুজো হচ্ছে । কলকাতায় কার্নিভাল হচ্ছে । বিদেশি ছোঁয়াও এসেছে বাংলায় । তাই আমাদের গুপ্তিপাড়ার যে ঐতিহ্য, তা বাঁচিয়ে রাখার জন্য স্বীকৃতির দাবি জানাচ্ছি । হেরিটেজ বলে ঘোষণার করা হোক এই প্রথম বারোয়ারিকে । আমরা চাই না ভারতের ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাক । এটাও একটা অন্যতম ইতিহাস ।"

হুগলি, 28 অক্টোবর: অবিভক্ত বাংলার প্রথম বারোয়ারি (Bengal First Barwari puja) আজ জৌলুস হারিয়েছে । দুর্গা পুজোকে ইউনেস্কো হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছে । কিন্তু রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে প্রথম বারোয়ারি হিসাবে স্বীকৃতি পায়নি গুপ্তিপাড়ার বিন্ধ্যবাসিনীর জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja 2022)। স্থানীয় মানুষের দাবি, প্রথম বারোয়ারি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক এই পুজোকে । বেঙ্গল গেজেটে নথিভূক্ত থাকা প্রাচীন বারোয়ারি হিসেবে কেউই স্বীকৃতি পায়নি । বিন্ধ্যবাসিনীর জগদ্ধাত্রীর বারোয়ারির কোনও উন্নতি নেই । দেখভাল ও সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আদি বারোয়ারির অস্তিত্ব ।

কী করে সৃষ্টি হল এই প্রথম বারোয়ারি ?

রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ-বিদেশে নানা জায়গায় বারোয়ারি পুজোর প্রচলন রয়েছে । কিন্তু এই বারোয়ারি ও মূর্তি প্রথম প্রচলন হয় হুগলি জেলাতেই । অতীতে গুপ্তিপাড়ায় দুর্গাপুজোর সময় এক জমিদার বাড়িতে অপমানিত হন গ্রামবাসীরা । ক্ষুব্ধ হয়ে পুজো থেকে বেরিয়ে আসেন তাঁরা । পরে 12 জন ইয়ার বন্ধু মিলে বিন্ধ্যবাসিনী বারোয়ারীর পুজো শুরু করেন । এখানেই মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা করা হয় । রাজা কৃষ্ণচন্দ্র প্রথম ঘট পুজো করেন বিন্ধ্যবাসিনীরূপী জগদ্ধাত্রীর । গুপ্তিপাড়ার (Hooghly news) এক ইতিহাসবিদ সুজিত মুখোপাধ্যায় বিদ্যারত্ন সূত্রে এ কথা জানা গিয়েছে ।

দক্ষিণ ভারতে বিন্ধ্যবাসিনীর পুজো হয় । তা বাংলার জগদ্ধাত্রী রূপ । সেই রূপকে প্রথম ঘটে পুজো করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র । প্রথম বারোয়ারী মূর্তি পূজিত হয় গুপ্তিপাড়ায় । মতান্তর থাকলেও জানা যায়, 1166 বঙ্গাব্দ ও ইংরাজির 1759 সালে প্রথম এই বারোয়ারি জগদ্ধাত্রী প্রতিমার পুজো শুরু হয় এখানে । বেঙ্গল গেজেটের সূত্র মারফত জানা যায় এর তারিখ । এটা মন্দিরের গায়ে আজও খোদিত আছে । সেই থেকে নিয়মনিষ্ঠা মেনে পুজো হয়ে আসছে ।

এই পুজোর মাহাত্ম্য কী ?

স্থানীয় সূত্রে যেটা জানা যায়, পুরনো একই কাঠামোয় আজও পুজো হয়ে আসছে । এখানে দেবী জগদ্ধাত্রী উদয়কালীন সূর্যের লাল রঙে পুজিতা । চার হাত বিশিষ্ট জগদ্ধাত্রী অধিষ্ঠিত হয় এখানে । দেবীর একপাশে বিষ্ণু ও অন্য পাশে শিবের মূর্তি রয়েছে । জগদ্ধাত্রীর ভৈরব যেহেতু নীলকন্ঠ শিব, তার প্রতীক রূপে এখানে শিবকে পুজো করা হয় । বিষ্ণু যেহেতু সবার অধিপতি দেবতা, সেই কারণে বিষ্ণুর মূর্তি থাকে দেবীর সঙ্গেই । ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী এক দিনে পুজো হয়ে থাকে । পুজোয় কুমড়ো ও আখ বলি হয় । নবমীর দিন মালসায় ভোগ করা হয় । রাতে আতশবাজি পোড়ানো হয় । এ বছর সবুজ বাজি রোশনাই দেখা যাবে । বহু মানুষ আসেন এই পুজো দেখতে ।

আরও পড়ুন: গান্ধিজির আদলে অসুর ! হিন্দু মহাসভাকে জবাব দিতে কালীমণ্ডপে হাজির 'জীবন্ত গান্ধি'!

বিন্ধ্যবাসিনী পুজোর সম্পাদক তারকনাথ বলেন, কেন্দ্র সরকার এবং রাজ্য সরকারকে অবগত করার পরও এই বিন্ধ্যবাসিনীর প্রথম বারোয়ারি কোনও স্বীকৃতি পায়নি । হেরিটেজ দফতর থেকেও কোনওরকম সাহায্য সহযোগিতাও পায়নি আগে । চন্দননগর কেন্দ্রীয় কমিটির তরফে কিছুটা সহযোগিতা আসত । করোনাকালে সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে । বর্তমানে পুজো এবং পরম্পরা বহন করতে খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে আমাদের । আমরা চাই মন্দিরের নিজস্ব জায়গায় নব রূপে মন্দির সংস্কার করুক । সরকারের হেরিটেজ দফতর স্বীকৃতি দিক এই পুজোকে । কালীপুজোর পরদিন থেকেই আমাদের প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয় । নিয়ম নিষ্ঠা মেনে নবমী ও দশমী পুজো হয়ে আসছে । একই কাঠামোয় পুজো হয় দীর্ঘদিন ধরেই ।"

বাংলার প্রথম বারোয়ারি আজও পায়নি হেরিটেজের স্বীকৃতি

স্থানীয় এক অভিজ্ঞ ব্যক্তি সুব্রত মণ্ডল বলেন, "বিন্ধ্যবাসিনীতলা থেকেই প্রথম বারোয়ারির সৃষ্টি হয় । আজ তার 263 বছর । কিন্তু কোনও স্বীকৃতি নেই প্রথম বারোয়ারি হিসেবে । এখন অনেক বারোয়ারিতে মহাসমারহে পুজো হচ্ছে । কলকাতায় কার্নিভাল হচ্ছে । বিদেশি ছোঁয়াও এসেছে বাংলায় । তাই আমাদের গুপ্তিপাড়ার যে ঐতিহ্য, তা বাঁচিয়ে রাখার জন্য স্বীকৃতির দাবি জানাচ্ছি । হেরিটেজ বলে ঘোষণার করা হোক এই প্রথম বারোয়ারিকে । আমরা চাই না ভারতের ঐতিহ্য নষ্ট হয়ে যাক । এটাও একটা অন্যতম ইতিহাস ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.