শ্রীরামপুর, 30 জুলাই: দুর্মূল্য ওষুধ গবেষণার নতুন মডেল আবিষ্কার করল বাঙালি গবেষক। ইঁদুর ও গিনিপিগের পরিবর্তে মলি মাছকে মডেল করে গবেষণায় সাফল্য পেলেন শ্রীরামপুরের গবেষক ডঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার। তিনি ছাড়াও চাকদায় নেতাজি সুভাষ বোস ইন্সটিটিউট অফ ফার্মাসিসের একটি টিম ছিল। ইতিমধ্যেই মলি মাছের উপর গবেষণায় সফল হয়েছে তারা। তাদের গবেষণার বিষয় পেটেন্ট জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণা চার বছর পর পেটেন্টের স্বীকৃতি পাবে। এর ফলে গবেষণার খরচ কমবে, ওষুধের অতিরিক্ত দামও কমবে। এতে নতুন দিশা পাবেন অন্যান্য গবেষকরা ৷
শ্রীরামপুর হাউসিং এস্টেটের বাসিন্দা ডঃ মৃত্যুঞ্জয় মজুমদার ছোটো থেকেই পশু ও পাখিপ্রেমী। নিজের বাড়িতে রয়েছে বিভিন্ন বিদেশি পাখি, পায়রা ও অ্যাকোয়ারিয়াম। যেখানে চলে নানা গবেষণা। প্রথমে হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি থেকে ফার্মোকলজিতে পিএইচডি করেন তিনি। বর্তমানে চাকদায় নেতাজি সুভাষ বোস ইন্সটিটিউট অফ ফার্মাসিতে প্রফেসার ও বিভাগীয় প্রধান হিসাবে কর্মরত। সেই কলেজেরই কয়েকজন সহকর্মীকে নিয়ে রিপ্রোডাক্টিভ মেডিসিনের উপর গবেষণা শুরু করেন।
আরও পড়ুন: মাছ শিকারি পাখিরা নিজেরাই 'শিকার' ফাঁসজালে! বিলুপ্তির আশঙ্কা পাখিপ্রেমীদের
মহিলা প্রজনন সম্পর্কিত ওষুধের ব্যবহারের জন্য মলি মাছকে (বিজ্ঞান সম্মত নাম পয়োসিলিয়া স্পিন্ফস) ব্যবহার করা হয়। সাড়ে ছয় বছর গবেষণার পর এই মাছের উপর সফলতা পায়। চলতি বছরের 26 মে ইন্টেলেকচুয়ার প্রপার্টি অ্যাক্ট ইন্ডিয়া জার্নালে প্রকাশিত হয় সেই বিষয়। তাঁকে গবেষণায় সাহায্য করেন এনএসবিআইএফ-এর প্রিন্সিপাল ডঃ অর্ণব সামন্ত যিনি গবেষণার স্ট্যাটিস্টিক ডিজাইন করেছেন। এছাড়া প্রদীপ রায়, সৌরভ রায়, নীলেন্দু শেখর রায় ও ঐন্দ্রিলা বৈশ্য।
হঠাৎ মলি মাছের উপর কেন গবেষণা ? সে বিষয়ে গবেষক মৃত্যুঞ্জয় বলেন, "আমি ছোটবেলা থেকেই পশু ও পাখিপ্রেমী। ইঁদুর হ্যামস্টার বা গিনিপিগের মডেল খুঁজে পেতে সমস্যা হয়। আর যে প্রাণীর উপর গবেষণা করা হয় তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী থাকে এক্ষেত্রে। আমি এদের চেয়ে ছোট মডেলের সন্ধানে ছিলাম। ইঁদুরের মতো প্রাণীর একটি মডেলে গবেষণা খুবই খরচের। মলি মাছের ক্ষেত্রে সেই সমস্যা নেই। পয়োসিলিয়া স্পিন্ফস বা মলি মাছ সহজলভ্য। ভিভি পোরাস প্রজাতির হওয়ায় এই মাছে গবেষণা করা যায় অনায়াসে।
আরও পড়ুন: বাড়িতে পাখি পুষলেই শাস্তি! আসছে কড়া আইন