হুগলি, 4 মে: প্রাথমিকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগে ইডির তলব আরামবাগের দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গুণধর খাঁড়াকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দেন তিনি। বিষয়টি সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মহকুমাজুড়ে।
আরামবাগ তৃণমূল নেতাদের অন্যতম প্রবীন নেতা গুণধর খাঁড়া। জানা গিয়েছে, আরামবাগে বামেদের পতনের পরই তাঁর রাজনৈতিক উত্থান চরমে ওঠে। ইডির ডাকার পরেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সামান্য একজন সেলুনের মালিক থেকে মাত্র 10 বছরের কোটিপতি কীভাবে হলেন তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা ! ফলে তাঁর উত্থানের পিছনে সরাসরি দুর্নীতির গন্ধ দেখছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। যেভাবে হুগলিতে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম উঠে এসেছে তাতে গুণধর খাঁড়াও জড়িত বলে মনে করছেন অনেকে ৷
লাগামহীন বেনামি সম্পত্তির হিসাব মিলেছে গুণধরের নামে ৷ এরপরেই ইডির ডাক পান আরামবাগের তৃণমূলের এই দাপুটে নেতা। অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম রয়েছে এই তৃণমূল নেতার। স্থানীয় সূত্রে খবর, আরামবাগের কাপসীটে আরামবাগ বন্দর রাস্তার পাশে একটি সেলুনের দোকান চালাতেন গুণধর। তখন থেকেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর রাতারাতি বদল হতে থাকে গুণধরের অর্থনৈতিক অবস্থা। প্রথমে 2013 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সালেপুর 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হন গুণধর। তারপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে প্রশ্নের মুখে সিবিআই
কার্যত রকেটের গতিতে উত্থান হতে থাকে তাঁর। 2018 সালে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ পান তিনি। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তিও। সেলুনের দোকান থেকে কাপসীটে রাস্তার পাশেই ধানবীজ ফার্মের মালিক হয়ে যান তিনি। পাশেই তাঁর বিলাসবহুল বাড়িও তৈরি হয়েছে কার্যত রাতারাতিই। গুণধরের চার মেয়েই প্রাথমিকে শিক্ষিকার চাকরিও পান। তবে সম্প্রতি তাঁদের মধ্যে দু'জনের চাকরি বাতিল হয়েছে হাইকোর্টের নির্দেশে।
বিরোধীদের দাবি, প্রভাব খাটিয়ে প্রাথমিকে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা আত্মস্মাৎ করেছেন গুণধর খাঁড়া। সেই টাকাতেই বেড়েছে তাঁর প্রভাব প্রতিপত্তি। এমনকি তাঁর এক ঘনিষ্ঠর মেয়েকেও চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ফলে ইডির জালে আর কার কার নাম উঠে আসে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ আরামবাগ তৃণমূলের একাংশ নেতাদের মধ্যে।