চন্দননগর, 9 জুন : 14 মাসের বেতন না পেয়ে কাজ বন্ধ রেখে অবস্থান-বিক্ষোভ BSNL ঠিকা শ্রমিকদের । তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না । লকডাউন মধ্যে কাজও করেছেন । তারপরও মেলেনি বেতন । ঠিকাদার, BSNL কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েও লাভ হয়নি ।
হুগলি জেলায় BSNL-এর প্রায় 424 ঠিকা শ্রমিক কাজ করেন । BSNL শ্রীরামপুর এলাকায় শ্রীরামপুর, উত্তরপাড়া, ডানকুনি, সিঙ্গুর, ত্রিবেণী ও চন্দননগরসহ বিস্তীর্ণ টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা সচল রাখতে কাজ করেন এই শ্রমিকরা । এই পরিস্থিতিতেও কোরোনা আতঙ্ককে দূরে রেখে পরিষেবা জারি রেছেছিলেন তাঁরা । ঠিকা শ্রমিকরা জানান, তাঁরা গত শুক্রবার চন্দননগর টেলিফোন দপ্তরে বেতনের দাবিতে আবেদন করেন ৷ তাতে কোনও কাজ হয়নি । এরপর টেলিফোন অফিসের সামনে তাঁরা বেতনের দাবিতে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন । বিক্ষোভ চললেও চন্দননগরের টেলিফোন অফিসে দরজায় তালা ঝুলিয়ে চলে যান আধিকারিকরা । সেই থেকে বন্ধই রয়েছে অফিস । একই অবস্থা চুঁচুড়া, চন্দননগর, শ্রীরামপুরসহ একাধিক অফিসের ।
এর জেরে সমস্যায় পড়েছেন গ্রাহকরা । তাঁদের একাংশের অভিযোগ, অফিস বন্ধ থাকার কারণে তাঁরা সমস্যায় পড়ছেন । পরিষেবা না পেয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে । এই বিষয়ে শ্রীরামপুর এলাকার ম্যানেজারসহ বিভিন্ন আধিকারিকদের ফোন করলেও তাঁদের সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ।
হুগলিতে 424 জন শ্রমিকের মধ্যে 246 জন ঠিকা শ্রমিক BSNL এর লাইন মেরামতের কাজ করেন । 136 জন সিকিউরিটি গার্ড ও সাফাইকর্মী 42 জন । তাঁরা জানিয়েছেন, 2019 সালের এপ্রিল মাসের পর থেকে তাঁদের বেতন বন্ধ । প্রধামমন্ত্রী, রাজ্যপাল ও BSNL - এর আধিকারিকদের কাছে আবেদন করেছেন । তবে সমস্যার সমাধান হয়নি । ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা অবস্থান-বিক্ষোভে নেমেছেন ৷
শুধু হুগলিতে নয়, ক্যালকাটা টেলিফোনে প্রায় 4 হাজার 825 জন ঠিকা শ্রমিক কাজ করেন । তাঁদের পরিস্থিতিও একইরকম বলে অভিযোগ ।
চন্দননগরে এক ঠিকা শ্রমিক পার্থপ্রতিম অধিকারী বলেন, "রাজ্যজুড়ে ঠিকা শ্রমিকরা 14 মাসের বেতন পাচ্ছেন না ৷ একারণে আমরা আন্দোলন নেমেছি ৷ বিভিন্ন জায়গায় জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ৷ সেই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আমাদের আমরণ অনশন ছাড়া কোনও উপায় নেই ৷ দীর্ঘ 25 বছর ধরে এই কম্পানিতে কাজ করেছি ৷ এই পরিস্থিতিতে কোথায় যাব ৷ মরতে হলে এখানেই মরব । ঠিকা শ্রমিকদের অবস্থান-বিক্ষোভ সেইসঙ্গে BSNL অফিস বন্ধ ৷ নাজেহাল গ্রাহকরাও।"
এবিষয়ে BSNL - এর এক গ্রাহক দেবজিৎ ঘোষ বলেন, "অত্যাধিক বিলের জন্য আজ চন্দননগর অফিসে অভিযোগ জানাতে আসি । কিন্তু দেখি তালা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে অফিস । ফলে সমস্যায় পড়ছি আমরা । টাকা না দিলে লাইন কেটে দেওয়া হয়, অথচ আমরা পরিষেবা পাচ্ছি না । অবিলম্বে এমারজেন্সি পরিষেবা খুলে দেওয়া হোক । "