দার্জিলিং, কালিম্পং, 26 অগস্ট: 2017 সালের পর ফের বনধ পাহাড়ে ৷ মাটিগাড়ায় নাবালিকাকে খুনের ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার এই বনধ ডাকা হয় ৷ তাতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে পাহাড়জুড়ে ৷ রাস্তাঘাট ফাঁকা। বন্ধ বিভিন্ন দোকান ৷ চলছে না কোনও বেসরকারি গাড়ি। রাস্তায় লোক সংখ্যাও বেশ কম ৷ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই বাড়ি বেরোননি ৷ শনিবার গোর্খা সেবা সেনার ডাকা ওই বনধে সমর্থন করেছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টি, জিএনএলএফের মতো রাজনৈতিকদল। বিরোধিতা করেছে তৃণমূল।
গোর্খা সেবা সেনার সদস্য কালিম্পংয়ের উজ্জ্বল রাই বলেন, "মাটিগাড়ার ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় । তার প্রতিবাদে এই বনধ করা হচ্ছে ৷ পাহাড়বাসী খুব ভালো এই বনধে সাড়া দিয়েছেন। এরকম ঘটনা যেন আর না ঘটে ৷ বনধের মাধ্যমে অপরাধীদের কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমরা ৷" অন্যদিকে, বনধকে সমর্থন করেনি শাসদকদল ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা গৌতম দেব বলেন, "বনধ করলে মানুষের সমস্যা আরও বাড়ে। বনধ ছাড়াও এই ঘটনার প্রতিবাদ করা যেত। সামনে ভরা পর্যটন মরশুম। পাহাড়ে এখন পর্যটকদেরও আনাগোনা হবে ৷ এই পরিস্থিতিতে বনধ হওয়াটা ঠিক নয় । পাহাড়কে শান্ত রাখতে হবে ।"
দিন কয়েক আগে মাটিগাড়ায় স্কুল ইউনিফর্ম পরিহিত নাবালিকার দেহ উদ্ধার হয়েছে ৷ এই ঘটনায় পাহাড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে । পোস্টার লাগিয়ে ও মোমবাতি মিছিল করে প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা থেকে রাজনৈতিক দল। এরপর সবাই একত্রিত হয়ে এ দিন পাহাড়ে বনধের ডাক দেয় । আর সেই বনধে পাহাড়ে ব্যাপক সাড়া পরতে দেখা গিয়েছে । সকাল থেকে দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে কোন দোকানপাট খোলেনি । চলছে না শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পংয়ে কোনও বেসরকারি গাড়ি । রাস্তাঘাটে লোকের সংখ্যাও কম । তবে সরকারি বাস চললেও তাতে যাত্রী সংখ্যা হাতেগোনা । এ দিন বন্ধ রয়েছে সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি । পাশাপাশি সরকারি কার্যালয়গুলিতেও উপস্থিতির হার কম বলে জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: নাবালিকা খুনে উত্তপ্ত মাটিগাড়ায় অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর, বনধের ডাক বিজেপির
এর আগে 2017 সালে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলনে নেমেছিল বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা । সেই সময় টানা 103 দিনের বনধ হয় পাহাড়ে । সেই বনধ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করেছিলেন বিনয় তামাং নিজে । তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত পাহাড়ে কোনও বনধ হয়নি । এ দিন ছ'বছর পর ফের পাহাড়ে বনধ হল ৷