শিলিগুড়ি, ১১ মার্চ : তিন সন্তানের বাবা তো কী হয়েছে। পাত্র তো সৎ। তাই কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানার অন্তত দুই পাত্রীর জন্য পছন্দ করা হয়েছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কের স্নেহাশিসকে। আগামী সপ্তাহে শিলিগুড়ি আসছেন আলিপুরের কর্তারা। সব ঠিক থাকলে মার্চের শেষ সপ্তাহে কলকাতায় পাড়ি দেবে স্নেহাশিস।
শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার শিলার সঙ্গে সংসার পেতেছিল বছর সাতেকের রয়েল বেঙ্গল টাইগার স্নেহাশিস। দু'জনের সঙ্গমে সন্তান প্রসব করে শিলা। এক সন্তানের মৃত্যু হলেও বাকি সন্তানদের নিয়ে দিব্যি রয়েছে তারা।
এবার স্নেহাশিসের ডাক পড়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানায়। আলিপুর চিড়িয়াখানার দুই বাঘিনি পায়েল ও রূপার মধ্যে কোনও একজনের সঙ্গে স্নেহাশিসের প্রজনন ঘটাতেই এই তোড়জোড় বলে জানিয়েছেন আলিপুর চিড়িয়াখানার কর্তারা।
আলিপুর চিড়িয়াখানার অধিকর্তা আশিস সামন্ত বলেন, " আমাদের কাছে পুরুষ বাঘ আছে। কিন্তু, প্রজননের ক্ষেত্রে সন্তানের জিনগত বৈচিত্র ধরে রাখতেই অন্য পুরুষ বাঘের খোঁজ করতে গিয়ে স্নেহশিসের কথা আমাদের মাথায় আসে। আপাতত কলকাতা চিড়িয়াখানায় রয়েছে সাদা বাঘ বিশাল। এছাড়া রয়েছে উড়িষ্যার ঋষি। রয়েছে সুন্দরবন থেকে উদ্ধার হওয়া রাজা। এছাড়াও আরও একটি পুরুষ বাঘ আছে। কিন্তু, পায়েলকে মনে ধরেনি বিশালের। রূপার কাছেই ঘুরঘুর করত সে। কিন্তু, জিনগত বৈচিত্র এই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রূপার জন্য ঋষিকে আনা হলেও রূপাকে ঋষি পছন্দ করেনি। অন্য এক বাঘিনি রানির জন্য সুন্দরবন থেকে আটক রাজাকে ভাবা হলেও তাদের প্রেম জমে ওঠেনি। অন্য পুরুষ বাঘেরও প্রেমে মন নেই। "
আশিসবাবু আরও বলেন, "পায়েলের বয়স মাত্র নয় বছর। রূপার একটু বেশি। আমাদের কাছে থাকা পুরুষ বাঘ দিয়ে প্রজনন ঘটাতে পারছি না। তাই স্নেহাসিশকে পছন্দ করেছি আমরা। এবার ওদের নিজেদের মধ্যে ভালোবাসা জন্মাবে বলেই আশা করছি আমরা।"
এজন্য প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। ঠিক হয়েছে কলকাতায় নিয়ে গিয়ে আপাতত পাশাপাশি দুই খাঁচায় স্নেহশিষ ও পায়েল অথবা স্নেহশিষ ও রুপাকে রাখা হবে। তাদের মধ্যে ভালোবাসা হলে দু'জনকে রাখা হবে এক খাঁচায়। সঙ্গমের পর ফের আলাদা করে দেওয়া হবে।"
বেঙ্গল সাফারি পার্কের এক কর্তা বলেন, "প্রতিনিধি দল এলেই সব চূড়ান্ত করে খুব তাড়াতাড়ি স্নেহশিসকে পাঠাব আমরা।"