শিলিগুড়ি, 13 ফেব্রুয়ারি: শিলিগুড়ি পৌরনিগমের (Siliguri Municipal Corporation) ক্ষমতায় আসার পরবর্তী এক বছরে 'টক টু মেয়র' পরিষেবা কতটা সফল ? আমজনতাকে সেকথা জানাতেই 'টক টু মেয়র'-এর একবছরের 'রিপোর্ট কার্ড' প্রকাশ করল বর্তমান পৌরবোর্ড (Talk to Mayor Report Card) ৷ সোমবার শহরের তৃণমূল কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে এই রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেন মেয়র গৌতম দেব (Goutam Deb) ৷ উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, পৌরনিগমের কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া-সহ মেয়র পারিষদ ও বরো চেয়ারম্যানরা ৷
পৌরনিগমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামিদিনে এই রিপোর্ট কার্ড সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে ৷ তবে, এদিনের অনুষ্ঠানে বিরোধী দলের কাউন্সিলাররা অনুপস্থিত ছিলেন ৷ মেয়র জানিয়েছেন, আগামী 22 ফেব্রুয়ারি আরও একটি খতিয়ান প্রকাশ করা হবে ৷ তাতে 'টক টু মেয়র'-এর এক বছরের 'রিপোর্ট কার্ড'-এর মতোই সামগ্রিকভাবে বর্তমান পৌরবোর্ডের গত এক বছরের সাফল্য তুলে ধরা হবে ৷ যদিও এই রিপোর্ট কার্ড সম্পূর্ণ লোক দেখানো ও মনগড়া বলে সমালোচনা শুরু করেছেন বিরোধীরা ৷
আরও পড়ুন: পথ দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যুতে উত্তপ্ত শিলিগুড়ি, জনতার ছোড়া ইটে জখম 2 পুলিশ কর্মী
এদিন সংশ্লিষ্ট রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করে মেয়র গৌতম দেব বলেন, "একবছরের কিছুটা কম সময় আমরা হাতে পেয়েছি ৷ 'টক টু মেয়র' অনুষ্ঠানে যেসব অভাব, অভিযোগ, দাবি ও প্রস্তাব এসেছিল, সেগুলির যতটা সম্ভব সমাধান করা হয়েছে ৷ এই রিপোর্ট কার্ড নিয়ে মানুষের কাছে যাব ৷ বিরোধীদেরও পাঠাব ৷ অনেকে 'মন কি বাত' বলে যাচ্ছেন ! কিন্তু শোনার কেউ নেই ! আদতে সেটি 'ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক' ৷ আমরা এমন করি না ৷" অন্যদিকে, শিলিগুড়ি পৌরনিগমের বিরোধী দলনেতা অমিত জৈন বলেন, "এইসব রিপোর্ট কার্ডের কোনও ভিত্তি নেই ৷ নিজেরাই তৈরি করছে ! অথচ, মানুষ কোনও উন্নয়ন পেলেন না !"
পৌরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, 2021 সালের মে মাসে প্রশাসনিক বোর্ড আটমাস কাজ করেছিল ৷ সেই সময় 'টক টু চেয়ারম্যান' চালু করেছিলেন গৌতম দেব ৷ পরে ক্ষমতায় আসার পর 'টক টু মেয়র' পরিষেবা চালু করেন তিনি ৷ ওই অনুষ্ঠানে উঠে আসা বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগের সমাধান করার জন্য আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ 'টিম' ও 'ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট'-এর ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷ এই কাজ করা হয়েছিল কলকাতা থেকে ৷
এই অনুষ্ঠানে মোটে 580টি সমস্যা ও অভিযোগ উঠে আসে ৷ মোট 522 জন মেয়রকে ফোন করেন ৷ মোট সমস্যার 60.51 শতাংশ সমাধান করা হয়েছে ৷ এখনও 146টি সমস্য়া নিয়ে কাজ চলছে ৷ যা মোট সমস্যার প্রায় 25 শতাংশ ৷ সব মিলিয়ে 85.51 শতাংশ সমস্যা সমাধানের পথে ৷ তবে কিছু সমস্যার সমাধান আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে ৷ মেয়রের কাছে সবথেকে বেশি ফোন আসে পূর্ত বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন বিষয় এবং জঞ্জাল পরিষ্কার করা নিয়ে ৷ এর মধ্য়ে পূর্ত বিভাগের আওতাধীন বিষয় ছিল 152টি এবং জঞ্জাল অপসারণের বিষয় ছিল 101টি ৷ এছাড়াও, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে 112টি অভিযোগ এসেছিল ৷ তার মধ্যে সমাধান হয়েছে 84টির ৷ আরও 28টি নিয়ে কাজ চলছে ৷ এর পাশাপাশি, 'রাইট টু মেয়র' পরিষেবার মাধ্যমে 24টি অভিযোগ এসেছিল ৷ যার মধ্যে সমাধান হয়েছে সাতটির ৷ আরও 14টি নিয়ে কাজ চলছে ৷