শিলিগুড়ি, 18 মার্চ: চা বাগানে ইতিহাস ! এই প্রথম চা শ্রমিকদের মালিকানাধীন জমি ব্যবহারের সম্পূর্ণ ব্যবহার ও অধিকারে ছাড়পত্র দিল মালিকপক্ষ ৷ জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউজে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ স্বভাবত, এই সিদ্ধান্তে খুশি শ্রমিকমহল ৷ এছাড়া শ্রমিকদের 18 দফা দাবি মেনে ফের সচল হতে চলেছে দার্জিলিংয়ে রঙ্গিতের কাঞ্চনভিউ চা বাগান (Tea Garden labours can use the Garden land for their own use) ৷
শুক্রবার কাঞ্চনভিউ চা বাগানের (Kanchaan View Tea Estate) মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সমস্যা সমাধানে শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউজে একটি বৈঠক হয় ৷ প্রশাসনের তরফে জেলাশাসক এস পুন্নমবলম, পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ, দার্জিলিং সদর মহকুমাশাসক দুলেন রায়, মালিকপক্ষের তরফে অজিতকুমার আগরওয়াল, জিটিএ প্রধান এগজিকিউটিভ অনিত থাপা, হামরো পার্টির সভাপতি তথা জিটিএ সভাসদ অজয় এডওয়ার্ডস, জিতেন রায়, রোশন লামা, গ্রাম উন্নয়ন কমিটির সচিব আদিত্য রাই-সহ দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন ৷ অনেক রাত পর্যন্ত এই বৈঠক চলে ৷ চা বাগানের বাসিন্দাদের 18টি দাবি মেনে নিয়েছে মালিকপক্ষ ৷
সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামবাসীদের বাগানের পাকা রাস্তা ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিল চা বাগানের মালিকপক্ষ ৷ সেটি খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ রঙ্গিত চা বাগানে বসবাসকারীদের জমির অধিকার এবং জমি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ৷ পাশাপাশি বাগানে থাকা রঙ্গিত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনায় হস্তক্ষেপ না-করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ৷ এছাড়াও মালিকপক্ষ ও শ্রমিকপক্ষের বিরুদ্ধে থাকা সব মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে ৷ চা বাগানে যে হোটেলটি তৈরি হতে চলেছে সেখানে চা বাগানের শ্রমিকদের এবং গ্রামবাসীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷
2022 সাল থেকে ওই কাঞ্চনভিউ চা বাগানে অচলাবস্থা চলছিল ৷ অনশনে বসেছিল শ্রমিকপক্ষ ৷ মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে শোষণের অভিযোগ উঠেছিল ৷ এই পরিস্থিতিতে অজয় এডওয়ার্ডস চা বাগানে এক ঘণ্টা অনশন করেছিলেন ৷ পরে মালিকপক্ষ অজয় এডওয়ার্ডয়ের বিরুদ্ধে 100 কোটি টাকার মানহানির মামলাও করে ৷ এদিনের বৈঠকে সেই মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে ৷ বৈঠকের পর অজয় এডওয়ার্ডস বলেন, "আমরা খুশি ৷ মালিকপক্ষ শ্রমিকদের 18 দফা দাবি মেনে নিয়েছে ৷ সব থেকে বড় বিষয়, চাবাগানের ইতিহাসে এই প্রথম চা শ্রমিকদের চা বাগানের জমি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে ৷ শ্রমিকরাও চা বাগান যাতে সুষ্ঠভাবে চলে সেদিকে গুরুত্ব দেবে ৷"
আরও পড়ুন: দার্জিলিং পৌরসভায় হামরো পার্টির ঘর ভাঙতে প্রলোভন অনিতের, অভিযোগ অজয় এডওয়ার্ডের