জয়নগর, 14 নভেম্বর: উত্তপ্ত জয়নগর ৷ তৃণমূল নেতা খুনে এখনও সেখানে পরিস্থিতি থমথমে ৷ তার মধ্যেই এ দিন সেখানকার দলুয়াখাকি গ্রাম বামেদের প্রতিনিধি দল যাওয়ার চেষ্টা করে ৷ কিন্তু তাদের বাধা দেয় পুলিশ ৷ এর জেরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে ৷ পরে ওই এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেন ভাঙড়ের বিধায়ক আইএসএফ-এর নওশাদ সিদ্দিকীও ৷ তাঁকে পুলিশ বাধা দেয় ৷ তার সঙ্গে পুলিশ আধিকারিকদের বচসা হয় ৷
এ দিন দক্ষিণ 24 পরগনার বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঢোকার মুখেই পুলিশ বাধা দেয় বামেদের প্রতিনিধিদলকে । ঘটনাস্থলে ছিল বারুইপুর পুলিশ জেলার এসডিপিও, কুলতলির আইসির নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী৷ বাম প্রতিনিধিদলের গাড়ি বামনগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ঢোকার মুখে পথ আটকান পুলিশকর্মীরা । ফলে বাধার পান সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, কান্তি গঙ্গোপাধ্য়ায়-সহ একাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক । এরপরই বর্ষীয়ান বাম নেতাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় পুলিশের ।
পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ঠেলাঠেলি শুরু হয় সুজন চক্রবর্তীদের । সুজন চক্রবর্তীকে পুলিশের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘কেন আটকাচ্ছেন ? সবকিছুর একটা সীমা থাকা দরকার ।’’ পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সুজন চক্রবর্তীরা । কিন্তু তারপর আবার ব্য়ারিকেড করে আটকে দেওয়া হয় তাঁদের । দফায় দফায় পুলিশকর্মীদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বাম নেতৃত্বের প্রতিনিধিরা ।
পরে সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী ৷ কিন্তু তাঁকেও আটকানো হয়৷ নওশাদ সিদ্দিকী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশের বাধার সম্মুখীন হলে গাড়ি থেকে নেমে পুলিশের সঙ্গে কথা বলেন এবং পুলিশের উচ্চ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন । তিনি বলেন, ‘‘কী কারণে আমাকে ওই এলাকায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না । আমি একজন জনপ্রতিনিধি মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর অধিকার আমার আছে । আমাকে লিখিত অর্ডার দিন, তাহলে আমি ওই এলাকায় যাব না ।’’
উল্লেখ্য, সোমবার ভোরে দলুয়াখাকিতে সইফুদ্দিন লস্কর নামে এক তৃণমূল নেতাকে খুন করা হয় ৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ওই এলাকা ৷ ইতিমধ্যে জনরোষের শিকার হয়েছেন স্থানীয় শাহাবুদ্দিন লস্কর ৷ তাঁকে খুনে জড়িত সন্দেহে পিটিয়ে মারে এলাকার লোক ৷ একজনকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছে ৷ এই খুনে বিরোধীদের জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন তৃণমূল ৷ অন্যদিকে বিরোধীদের দাবি, শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই এই ঘটনা ঘটেছে ৷
তবে তৃণমূল নেতা খুনের পর স্থানীয় একটি গ্রামে 20-25টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ৷ অভিযোগ, বেছে বেছে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতেই আগুন লাগানো হয়েছে ৷ সেই কারণেই ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন সিপিএম নেতারা ৷ কিন্তু তাঁদের পুলিশি বাধার মুখে পড়তে হয় ৷
আরও পড়ুন:
জয়নগরকাণ্ডে প্রকাশ্যে সিসিটিভি ফুটেজ, নজরে সন্দেহভাজন বাইক আরোহীরা
বড় ভাইয়ের নির্দেশে সুপারি, গুলি চালায় সাহাবুদ্দিনের; দাবি শাহরুলের