ভাঙড়, 10 জুন: ফের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে সরকারি কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। ভাঙড় 2 পঞ্চায়েত সমিতির হিসাবরক্ষক বিদ্যুৎ ঘোষকে মেরে নাক ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায় দক্ষিণ 24 পরগনার ভাঙড় 2 ব্লক চত্বরে। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী ৷
অভিযোগ, তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা ও আরাবুল ইসলামের উপস্থিতিতে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, শনিবার সকাল থেকে ভাঙড় 2 ব্লক প্রশাসনের কার্যালয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হয়েছিল। তৃণমূল নেতৃত্বের নিষেধ থাকায় কোনও তৃণমূল প্রার্থী মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি। তবে এরই মাঝে চালতাবেড়িয়া এলাকার আইএসপ্রার্থী সাহিন কাদির ব্লকে গিয়ে ডিসিআর কাটেন এবং মনোনয়ন জমা দেন। তাঁর কাছ থেকে মনোনয়ন সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা নেন বিদ্যুৎ ঘোষ।
তারপরেই ঘটে বিপত্তি ৷ আইএসএফ নেতার মনোনয়ন কেন জমা নিয়েছেন, সেই প্রশ্ন তুলে বিদ্যুৎ বাবুর ওপর চড়াও হন চালতাবেড়িয়া এলাকার তৃণমূল নেতা রাজ্জাক মোল্লা। অভিযোগ, অফিসের মধ্যে সবার সামনেই তিনি ওই অফিসারের শার্ট ধরে টানা হেঁচড়া করেন, তাঁকে এলোপাথাড়ি কিল, চড়, ঘুষি মারেন। ঘটনার সময় অফিস চত্বরেই উপস্থিত ছিলেন কাশীপুর থানার বড়বাবু, মেজবাবু, বিডিও, শওকত ও আরাবুল। রাজ্জাকের মারের চোটে বিদ্যুৎ বাবুর গেঞ্জি ছিঁড়ে যায়, নাক ফেটে যায় বলে অভিযোগ। এরপরেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছেন অভিযুক্ত রাজ্জাক মোল্লা ৷
ঘটনার নিন্দা করেছেন আইএসএফ নেতা সাহিন কাদির। তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নেওয়ার জন্য সরকারি কর্মীরা বসে আছেন। এ ভাবে মারধর করা উচিত হয়নি। ভাঙড়ের সিপিএম নেতা তুষার ঘোষ, বিজেপি নেতা অবনী মণ্ডল এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। অবনী বলেন, "যেভাবে সরকারি অফিসে তৃণমূল নেতারা প্রতিদিন দলীয় বৈঠক করছেন, প্রার্থী বাছাই করছেন তা ঠিক নয়। বিডিও অফিসটা শওকত সাহেব, আরাবুল সাহেবরা দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছেন।"
মারধরের কথা অস্বীকার করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা শওকত মোল্লা। তিনি বলেন, "বিষয়টি আমার জানা নেই। এরকম কোনও ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা অত্যন্ত অন্যায়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।"
আরও পড়ুন: ঢোক গিলল নির্বাচন কমিশন, রাজ্যপালের বার্তা পেয়ে সর্বদল বৈঠক ডাকলেন রাজীবা !
সরকারী কর্মীর ওপর মারধরের ঘটনা স্বীকার করে ভাঙড় 2 ব্লকের রিটার্নিং অফিসার তথা বিডিও কার্তিকচন্দ্র রায় বলেন, "অফিসের এক কর্মীকে মারধর করা হয়েছে এটা ঠিক। কে বা কারা মেরেছেন তার তদন্ত করছে পুলিশ। আমি পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।"