বিষ্ণুপুর ও আসানসোল, 22 ডিসেম্বর: আইনি জটিলতা কাটিয়ে 7 বছর পর গণধর্ষণে 2 দোষী সাব্যস্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আলিপুর আদালত । পাশাপাশি 20 হাজার টাকা জরিমানা ।
2016 সালের 13 অক্টোবর, দক্ষিণ 24 পরগণা জেলার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার ঘটনা ৷ দুর্গাপুজোর বিসর্জন দেখে রাত 11টা নাগাদ বাড়ি ফেরার সময় প্রতিবেশী দুই যুবকের গণধর্ষণের শিকার হয় যুবতি । থানায় অভিযোগ দায়ের হতেই তদন্তে নেমে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । যদিও পরে জামিনে মুক্ত হয় দুই অভিযুক্ত ৷ তারপর থেকেই নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিতে শুরু করে । ভয়ে এবং অপমান সহ্য করতে না পেরে বছর বাইশের যুবতি সে বছরই 26 ডিসেম্বর অবসাদে আত্মঘাতী হয় ৷ এভাবে মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়ে বাবা-মা-ভাই থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা ।
এই ঘটনার পর ফের একবার তদন্তে নেমে বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত সুধেন্দু পাল ও কার্তিক জানাকে গ্রেফতার করে । দীর্ঘদিন সংশোধনাগারে থাকার পাশাপাশি আদালতে তাদের বিচার চলতে থাকে । অবশেষে আলিপুর আদালত 2023 সালের 20 ডিসেম্বর দোষীদের সাজা ঘোষণা করে । সেখানে দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও 20 হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ।
তবে এই ঘটনায় এত বছর ধরে আদালতের দোরে দোরে ঘুরে আত্মঘাতী নির্যাতিতার পরিবার সুবিচার পেলেও এতে আংশিক খুশি মৃতার ভাই, প্রতিবেশী দাদা বৌদি ও খুড়তুতো ভাই । এই ঘটনায় তাদের দাবি, যদি এই নিয়ে অভিযুক্তরা দেশের শীর্ষ আদালতে যায়, সেক্ষেত্রে মৃতার পরিবারের সদস্যরা কেউই পিছু হটবে না । যদি ফাঁসির নির্দেশ দিত আদালত তাহলে আরও খুশি হত পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা ।
অন্যদিকে, নিষিদ্ধ ফেনসিডিল পাচার মামলায় এক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে 14 বছরের কারাদণ্ডের সাজা শোনালো আসানসোল আদালত । বৃহস্পতিবার আসানসোল আদালতে ওই মামলায় দোষী আবদুল রহমান রুবেলকে 14 বছরের সাজার পাশাপাশি 1 লক্ষ 20 হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়েছে । জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড ৷
এই মামলার সরকারি আইনজীবী সোমনাথ চট্টরাজ জানান, 2021 সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ কুলটি থানার অন্তর্গত কল্যাণেশ্বরী এলাকায় একটি লরিকে আটক করে । ওই লরিতে 5 হাজার বোতল নিষিদ্ধ ফেনসিডিল সিরাপ ছিল । ঘটনার তদন্ত নেমে পুলিশ ওই লরির মালিক আবদুল রহমান রুবেলকে গ্রেফতার করে । তার বাড়ি ছিল মুর্শিদাবাদে । পুলিশ জানতে পারে নিষিদ্ধ ফেনসিডিল রুবেলই পাচার করছিল । এরপর দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চলার পর পুলিশ চার্জশিট দেয় । প্রচুর সাক্ষ্যপ্রমাণে এই মামলার ট্রায়াল চলতে থাকে । গত মঙ্গলবার আসানসোল আদালত সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ দেখে রুবেলকে দোষী সাব্যস্ত করে । বৃহস্পতিবার তার সাজা ঘোষণা হয় । এই বিচারে রুবেলের পরিবার আগামী দিনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন ।
আরও পড়ুন :
1 কিশোরীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় দোষীর 20 বছরের সশ্রম কারাদণ্ড
2 নাবালিকার যৌন নির্যাতনে দোষী সাব্যস্ত সৎ বাবার 20 বছরের কারাদণ্ড
3 নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা, অভিযুক্তকে দশ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ