মেখলিগঞ্জ, 16 জুন: কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ সীমান্তের ফুলকাডাবরিতে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হল এক যুবকের । মৃত যুবকের নাম গৌতম বর্মন (28) । জানা গিয়েছে, মৃতের মাথায় গভীর ক্ষত মিলেছে । প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান বিএসএফের ছোড়া গুলি লাগার জেরেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের । অন্যদিকে, বিএসএফের দাবি, বাংলাদেশে গরু পাচার সন্দেহে প্রতিরোধ করে বাহিনী । তার জেরেই মৃত্যু হয় ওই যুবকের ।
মৃত যুবকের পরিবারের দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে ওই সে বাড়ির পাশে শৌচকার্য করতে গেলে সেখানে তাকে বিএসএফ আটক করে । এরপরই তাকে গুলি করা হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। তাদের আরও অভিযোগ, ঘটনার পর রাতেই ওই যুবকের দেহ বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে সীমান্তে রেখে আসা হয়। শুক্রবার সকালে পরিবারের লোকরা জানতে পারেন তাদের ছেলেকে পাচারকারী সন্দেহে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে পৌঁছয় কুচলিবাড়ি থানার পুলিশ।
অন্যদিকে, কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানান, এদিন সকাল পৌনে ছ'টা নাগাদ কুচলিবাড়ি থানার পুলিশ বিএসএফ কর্মীদের কাছ থেকে লিখিত তথ্য পায় । সেখানে বিএসএফের তরফে দাবি করা হয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে একটা নাগাদ কর্তব্যরত বিএসএফ কর্মীদের সন্দেহ হয়, বাংলাদেশে পশু পাচারের উদ্দেশে কিছু দুষ্কৃতী জড়ো হয়েছে । এরপরই তাদের গতিবিধি অনুসরণ করে সন্দেহ দৃঢ় হয় বিএসএফ কর্মীদের। সেই অনুযায়ী, বিএসএফ কর্মীরা দুষ্কৃতীদের চ্যালেঞ্জ জানালে তারা পালটা ধারালো অস্ত্র দিয়ে বিএসএফ জওয়ানদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ । এমনকী বাহিনীর অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ বিএসএফের ।
পুলিশের কাছে দেওয়া বিএসএফের লিখিত তথ্য অনুযায়ী, বিএসএফ সদস্যরা তাদের ছত্রভঙ্গ করতে এক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। পরে এলাকায় তল্লাশি চালাতে গিয়ে বিএসএফ জওয়ানরা বেড়িবাঁধ সীমান্তের কাছে ফুলকাডাবরিতে মাথায় আঘাত-সহ একটি অজ্ঞাত লাশ দেখতে পায় । ঘটনাস্থল থেকে বাঁশের লাঠি, একটি লোহার কাটারি-সহ দুটি গবাদি পশুও উদ্ধার করা হয় বলে দাবি বিএসএফের। এরপর বিএসএফের চিকিৎসকই দেহ পরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । এই প্রসঙ্গে, মৃতের ভাই শ্যামল রায় জানান, মৃত গৌতম বর্মন ভোট দেওয়ার জন্য সাতদিন আগেই বাড়ি ফিরেছিলেন । সে ভিন রাজ্যে কাজ করে। রাতে তারা গুলির আওয়াজ শুনতে পান। পরে খোঁজ করতে জানতে পারেন বিএসফের গুলিতে গৌতমের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: পটনায় বিরোধী বৈঠকের আগেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ঝাঁঝ বাড়ালেন মমতা
মৃত যুবকের পরিবার অবশ্য দাবি করেছে, সে কোনও পাচার কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল না । বিএসএফই তাঁকে মেরে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে গিয়ে দেহের পাশে গরু রেখে দিয়েছিল । কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা জানান, দেহ উদ্ধার হয়েছে । দেহ এমজেএন হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে । তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।