কোচবিহার, 5 সেপ্টেম্বর : কোচবিহারে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে ফের একবার সামনে এল জেলা তৃণমূলে কাকা-ভাইপোর গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি । আজ জেলায় আয়োজিত "কাকার" (উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ) অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন "ভাইপো" (কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি) । অপরদিকে ভাইপোর অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন কাকা । কোনও অনুষ্ঠানেই জেলা তৃণমূলের বর্তমান সভাপতি তথা প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় এবং তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে একসঙ্গে দেখা গেল না । বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনায় জেলার নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন পড়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের ।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সঙ্গে পার্থপ্রতিম রায়ের বংশগত কাকা-ভাইপোর সম্পর্ক না থাকলেও, উত্তরবঙ্গে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কাছে তাঁরা কাকা-ভাইপো হিসেবেই পরিচিত । উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর হাত ধরেই রাজনীতিতে প্রবেশ পার্থবাবুর । রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সুপারিশেই পার্থবাবু টিকিট পান এবং সাংসদ হন । পরবর্তীকালে ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে দু'জনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় । 2019 সালে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে পার্থবাবুকে টিকিট দেয়নি তৃণমূল । আর পার্থবাবুর টিকিট না পাওয়ার পিছনে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।
গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী পরাজয় হন । এরপরই জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে । ধীরে ধীরে জেলায় ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠেন পার্থপ্রতিম রায় । বর্তমানে পার্থবাবু জেলা তৃণমূল সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন । আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব যখন গোষ্ঠী কোন্দল কমাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন, তখন শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানেই দেখা গেল অন্য ছবি । জেলার বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বড় অনুষ্ঠান হলেও, কোনও কর্মসূচিতে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং পার্থপ্রতিম রায়কে এক মঞ্চে দেখা যায়নি ।
আজ সকালে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কার্যালয়ের সামনে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে পার্থপ্রতিম রায়, মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মণসহ জেলার ছোটো-বড় সব নেতা হাজির থাকলেও, গরহাজির ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । অপরদিকে কোচবিহার-2 ব্লকের বাণেশ্বরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামী তথা কোচবিহার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পরিমল বর্মণের উদ্যোগে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, মন্ত্রী বিনয় কৃষ্ণ বর্মণসহ জেলার ছোটো-বড় সব নেতা হাজির থাকলেও, গরহাজির ছিলেন পার্থপ্রতিম রায় । যদিও পার্থবাবু বলেন, "এদিন একাধিক কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান থাকায় সব অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি ।"
বিষয়টি নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ মুখ খুলতে চাননি ।