কোচবিহার, 3 মে: তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলার দু'টি আসনে হেরে গেলেন কাকা-ভাইপো । নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বিজেপি প্রার্থী মিহির গোস্বামীর কাছে 23 হাজার 440 ভোটে পরাজিত হলেন । অপরদিকে শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায় বিজেপির বরেনচন্দ্র বর্মনের কাছে 17 হাজার 815 ভোটে পরাজিত হলেন ।
দলীয় দুই নেতার হারে কিন্তু খুশি তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা । তাঁদের বক্তব্য, যেভাবে দুই নেতা একে অপরকে অপদস্থ করতে গত কয়েক বছর ধরে কলকাঠি নাড়ছিলেন তাতেই দুই নেতা হেরেছেন । এবার ঠিক হয়েছে । যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি কেউই ।
কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কাকা-ভাইপো বলে পরিচিত । রবীন্দ্রনাথের হাত ধরেই পার্থপ্রতিম রাজনীতিতে প্রবেশ করেন । পরবর্তীতে পার্থপ্রতিম সাংসদ হন । এরপর দলের ক্ষমতা কার হাতে থাকবে এনিয়ে দু'জনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয় । পরবর্তীতে 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে দল তৎকালীন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়কে প্রার্থী না করে পরেশচন্দ্র অধিকারীকে প্রার্থী করে দল।
রাজনৈতিক মহলের অভিমত, পার্থপ্রতিম রায়কে প্রার্থী না করার পিছনে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ছিল । এরপর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী পরেশচন্দ্র অধিকারী পরাজিত হন । জেলা সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে । জেলা সভাপতি করা হয় পার্থপ্রতিম রায়কে ।
এরপর এবারের বিধানসভা নির্বাচনে শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় পার্থপ্রতিম রায়কে । যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের প্রভাব রয়েছে । অপরদিকে নাটাবাড়িতে প্রার্থী করা হয় রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে । এখানে পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়ি । সূত্রের খবর, দুই নেতাই চেষ্টা করছিলেন নির্বাচনে একে অপরকে হারাতে । রবিবার বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোলে দেখা যায় শীতলকুচিতে পার্থপ্রতিম রায় এবং নাটাবাড়িতে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দু'জনেই হেরেছেন । এই পরাজয়ে খুশি নীচুতলার তৃণমূল কর্মীরা । তাঁদের বক্তব্য, এবার দুই নেতার শিক্ষা হবে ।
আরও পড়ুন: "দলত্যাগীরা তৃণমূলে ফিরতে চাইলে স্বাগত", হ্যাট্রিকের পর মমতা