কোচবিহার,26 জুলাই: নির্যাতিতা নাবালিকার মৃত্যু ঘিরে কোচবিহারের রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে। নাবালিকার মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের বাইরে তার মৃতদেহ আটকে চলে বিক্ষোভ । তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে শুরু হয় বচসা। হাসপাতালের বাইরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। নাবালিকার মৃত্যুর জন্য দুই রাজনৈতিক দলই একে অপরকে দোষারোপ করে চলে। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয় যে পুলিশও দিশেহারা হয়ে যায় ।
বিজেপি মহিলা মোর্চার সভাপতি মিনতি ঈশোরা দাবি করেন, পরিবারের মতামত না-নিয়েই নাবালিকা নির্যাতিতার মৃতদেহ আটকে রেখেছে তৃণমূল কংগ্রেস । বিজেপির মহিলা মোর্চার সদস্যদের সঙ্গেও অভব্য আচরণের অভিযোগ তোলেন তিনি । এদিকে মৃতদেহ আটকে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক । যিনি প্রথম থেকেই নাবালিকা নির্যাতনের ঘটনায় বিজেপিকে নিশানা করেন । বুধবার নাবালিকার মৃত্যুর পর পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয় । জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার বাবাকে নিয়ে রীতিমতো টানা-হ্যাঁচড়া চলে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে । ঘটনায় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি ।
এখনও পর্যন্ত নাবালিকা নির্যাতনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত বিপ্লব বর্মণ সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । বুধবার সকালে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় নাবালিকার । সাতদিন আগে নাবালিকাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় । 18 জুলাই স্কুলে যাওয়ার জন্য নাবালিকা বেরোয়, আর ফেরে না । চিন্তিত পরিবার পুুন্ডিবাড়ি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে । এরপরই পরিবারের কাছে কোচবিহার একটি নার্সিংহোম থেকে ফোন আসে । জানা যায়, নাবালিকা আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখানে ভর্তি । হাসপাতালে এসে পরিবার জানতে পারে, নাবালিকার উপর যৌন নির্যাতন চলেছে । অবস্থার অবনতি হওয়ায় নাবালিকাকে কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজে আনা হয় । এরপরই শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা । তদন্তে নেমে পুলিশ মূল অভিযুক্ত বাপ্পা বর্মন সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে । মঙ্গলবারও হাসপাতালে যান বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা, তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক ।
আরও পড়ুন: স্কুলে বদলি দুর্নীতিতে মানিকের বিরুদ্ধে এফআইআর সিবিআইয়ের
বুধবার রাহুল সিনহা হাসপাতালে এলে তাঁকে 'গো ব্যাক' স্লোগান দেয় তৃণমূল নেতৃত্ব । কোচবিহার জেলা তৃনমুল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিকের দাবি, বিজেপি এই ঘটনায় অভিযুক্ত। অভিযুক্তদের আড়াল করতে বিজেপি মৃতদেহ হাইজ্যাক করতে চেয়েছিল। এদিকে কোচবিহার জেলা বিজেপির মহিলা মোর্চার সভাপতি মিনতি ঈশোর বলেন, 'যেভাবে মারধর করে মৃতদেহ হাইজ্যাক করে নিয়ে গেল, নির্যাতিতার বাবাকেও মানা হল না, তা মেনে নেওয়া যায়না।' জানা গিয়েছে, মৃত নাবালিকার কাকিমা তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য । বুধবার সকাল থেকে রাজনৈতিক তরজা এতটাই মারাত্মক হয়ে ওঠে যে, নাবালিকার দেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া যায়নি । পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারলেও নির্যাতিতা নাবালিকার মৃত্যু ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক উত্তাপ ।