কলকাতা, 3এপ্রিল : পেটে ব্যথা হত। আর পাঁচজনের মতো গ্যাস হয়েছে ভেবে ওষুধ খেতেন। কিন্তু, তাতে কোনও ফল হয়নি। উলটে ক্রমশ ব্যথা বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের দ্বারস্থ হন তপতী ভৌমিক। পরীক্ষা করে জানা যায়, গলব্লাডার স্টোন হয়েছে। শেষপর্যন্ত অস্ত্রোপচার করে 9সেন্টিমিটারের একটি স্টোন বের করা হয়। চিকিৎসকদের দাবি, পূর্ব ভারতে এত বড় গলব্লাডার স্টোনের ঘটনা এই প্রথম।
16 মার্চ অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তিনদিন পরে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান প্রবীণ মহিলা। গতকাল স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিনি হাসপাতালে আসেন। সেখানে তিনি বলেন, "পেটে চিন চিন করে ব্যথা হত। ভাবতাম গ্যাস হয়েছে। সেজন্য ওষুধ খেতাম। পেটও ফুলতে শুরু করেছিল। তারপর চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। প্রাথমিকভাবে এক চিকিৎসক বলেছিলেন, আমার লিভার বড় হয়ে গেছে। পরে আলট্রাসোনোগ্রাফিতে গলব্লাডার স্টোনের বিষয়টি ধরা পড়ে।" আপাতত পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন বছর 63-র ওই মহিলা।
চিকিৎসক সঞ্জয় মণ্ডল বলেন, "সাধারণত স্টোনের দৈর্ঘ্য এক সেন্টিমিটার হয়। কখনও কখনও সেটি দুই থেকে আড়াই সেন্টিমিটারে দাঁড়ায়। কিন্তু, ওই মহিলার ক্ষেত্রে তা বেড়ে 9সেন্টিমিটার হয়েছিল।" আর সেজন্যই গলব্লাডারের দৈর্ঘ্যও বেড়ে গেছিল। সেটির দৈর্ঘ্য কত ছিল? সে প্রসঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালটির চিকিৎসক বলেন, "গলব্লাডারের দৈর্ঘ্য চার থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। খুব বড় হলে 6ইঞ্চি হয়। কিন্তু, এক্ষেত্রে গলব্লাডার বেড়ে 11.6ইঞ্চি হয়েছিল। গিনেস বুকে 11.8 ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের গলব্লাডারের রেকর্ড রয়েছে। সেটি জয়পুরে হয়েছিল।" তাঁর বক্তব্য, "পূর্ব ভারতে সম্ভবত এটাই সবচেয়ে বড় মাপের গলব্লাডার।"
কিন্তু, আচমকা স্টোনটি এত বড় হল কীভাবে? সে প্রসঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক বলেন, "সেরকম বিশেষ কোনও কারণ নেই। অনেকদিন ধরে স্টোনটি থাকার ফলে তা এতটা বেড়ে গেছিল।" এক্ষেত্রে কতটা ঝুঁকি ছিল? ওই চিকিৎসক বলেন, "পাথরটি পিত্তনালীর উপর থাকায় জন্ডিস ও সংক্রমণের সম্ভাবনা ছিল।"