মল্লারপুর, 26 অগস্ট: শুক্রবার সকালে বীরভূমের মল্লারপুর থানার বাসিন্দা শঙ্করী লেট মেয়ে অল্পনা লেটকে সঙ্গে নিয়ে রামপুরহাটে এসেছিল ডাক্তার দেখাতে। বেলা দু'টো নাগাদ অটো করে বাড়ি ফিরার সময় তারাপীঠের কাছে বেলার মোড়ে একটি চার চাকা গাড়ির সঙ্গে অটোটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বলে খবর। আহত অবস্থায় মা ও মেয়ে দু'জনকেই রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে গ্রাম থেকে ছুটে আসে ছেলে মিলন লেটও।
ওইদিন মাঝ রাতে হাসপাতালেই মারা যান শঙ্করী লেট। ভোরের দিকে ছেলে মিলন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চলে যায়। এরপর সকালে স্থানীয় মানুষরা দেখতে পায় একটি কাঁদরের ধারে গাছে গলায় দঁড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে শঙ্করী লেটের ছেলে মিলন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃত শঙ্করী লেটের তিন মেয়ে ও এক ছেলে মিলন লেট। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গেলেও প্রায় 50 বছর ছুঁই ছুঁই মিলন লেট কিন্তু বিয়ে করেনি। মা'কে নিয়ে চাষ বাস করেই দিন কাটাতেন। এক মাত্র সঙ্গী মায়ের মৃত্যুর ঘটনা সহ্য করতে পারেননি তিনি। স্থানীয়দের দাবি, অবসাদে মৃত্যুর পথই বেছে নেয় মিলন।
মিলনের কাকার ছেলে প্রশান্ত লেট বলেন, "রাতে পথ দূর্ঘটনায় বড় মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গলায় দঁড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে দাদা মিলন। বড় মা ও দাদা ছিল বাড়িতে। দাদা বিয়ে করেনি। তার মা-ছেলের সঙ্গে হাসি-খুশিতেই দিন কাটত তাদের। এমন দুর্ঘটনা ঘটল সব শেষ হয়ে গেল। মায়ের মৃত্যুতে গভীর দুঃখ পেয়েই গলায় দঁড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে দাদা।"
আরও পড়ুন: শাশুড়িকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার বড়জামাই
মিলনের মৃতদেহ উদ্ধার করে তার মায়ের মৃতদেহ একসঙ্গে ময়নাতদন্তের জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে মল্লারপুর থানার পুলিশ। মা ও ছেলের একসঙ্গে মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ বীরচন্দ্রপুর গ্রাম ও তাঁদের আত্মীয় স্বজন। ছেলের মৃত্যুতে মায়ের আত্মঘাতীর ঘটনা শোনা গেলেও, মাতৃ প্রেমে ছেলের আত্মহত্যা এমন ঘটনা বিরল বলে মনে করছে অনেকেই।