দেউচা-পাচামি (বীরভূম), 1 অক্টোবর: খোলামুখ কয়লা খনির জন্য জমি অধিগ্রহণ ও উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সরব হল সেখানকার আদিবাসী মানুষজন ৷ বেআইনি জমি অধিগ্রহণ বন্ধ করার দাবিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দেউচা-পাচামির হরিণশিঙা এলাকায় মিছিল করলেন তাঁরা ৷ হাতে বাঁশ ও লাঠি নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে মিছিলে সামিল হন আদিবাসী মহিলারা ৷ তাঁদের অনেককে কোলে দুধের শিশু নিয়েও দেখা গিয়েছে প্রতিবাদে সামিল হতে ৷
ক্রিটেশিয়াস যুগে ভূমিকম্পের কারণে ছোটনাগপুর প্রান্তিয় অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ভূগর্ভে চলে যায় ৷ বর্তমানে সেই ছোটনাগপুর অঞ্চল অর্থাৎ, ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানা-সহ বীরভূমের দেউচা-পাচামি এলাকা খনিজ সম্পদে ভরপুর ৷ দেউচা-পাচামির কমপক্ষে 3 হাজার 400 একর জমিজুড়ে 1 হাজার 179 মিলিয়ন হেক্টর কয়লা ব্লক রয়েছে ৷ যা তোলা সম্ভব হলে, এটিই হবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খোলা মুখ কয়লা খনি ৷ এছাড়াও, কয়লার স্তরের উপর 1 হাজার 138 মিলিয়ন হেক্টর ব্যাসল্ট শিলাস্তর রয়েছে ৷ তাই এখানে কয়লা খনি প্রকল্পের জন্য এখনও পর্যন্ত 35 হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে ৷ যার মধ্যে 10 হাজার কোটি টাকা পুনর্বাসন প্যাকেজে খরচ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
কিন্তু, এই এলাকায় কয়লা খনি করতে কমপক্ষে 21 হাজার মানুষের বসতি অন্যত্র সরাতে হবে ৷ যাঁদের অধিকাংশই আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম ৷ শুধু বসতি নয়, ধ্বংস হবে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি, চারণভূমি, চাষ জমি ৷ সেই সঙ্গে নষ্ট হবে পরিবেশের ভারসাম্য ৷ তাই জল, জঙ্গল, জমি না ছাড়ার দাবিতে প্রথম থেকেই খনি বিরোধী আন্দোলন করে আসছেন দেউচা-পাচামির অধিকাংশ মানুষ ৷ বিশেষত, আদিবাসীরা ৷
আরও পড়ুন: জমি অধিগ্রহণে ক্ষতিপূরণের নিয়ম কী ? রাজ্যের হলফনামা তলব হাইকোর্টের
এদিন, হরিণশিঙা এলাকা থেকে খনি বিরোধী মিছিল করেন দেওয়ানগঞ্জ-হরিণশিঙা এলাকার আদিবাসীরা ৷ হাতে বাঁশ, লাঠি, তরোয়াল নিয়ে বেআইনি জমি অধিগ্রহণ ও আদিবাসী উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবি তুলেছেন তাঁরা ৷ তাঁদের অভিযোগ প্রশাসন ভয় দেখিয়ে এই এলাকায় জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করছে ৷