দুবরাজপুর, 1 জানুয়ারি : লাভপুরে একই পরিবারের তিন ভাইকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় BJP নেতা মুকুল রায়কে জেরা করল পুলিশ । বীরভূমের দুবরাজপুর থানায় ডেকে তাঁকে প্রায় 2 ঘণ্টা ধরে আজ জেরা করা হয় ৷ 2010 সালের 4 জুন লাভপুরে মণিরুল ইসলামের বাড়ির উঠানে 3 জনকে পিটিয়ে মেরে দেওয়ার ঘটনায় চার্জশিটে নাম রয়েছে মুকুলবাবুর ৷ তৎকালীন লাভপুর থানার OC তথা তদন্তকারী অফিসার সর্বজিৎ বোস জিজ্ঞাসাবাদ করেন ৷
জেরা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুকুলবাবু বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বারাসতে 302 এর মামলা আজও রয়েছে ৷ মামলার পেপারটাই লোপাট করে দিয়েছে ৷ আর আমাকে এমন মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যার বিন্দুবিসর্গ পর্যন্ত জানি না ।" দুবরাজপুরের আদালতে হাজিরা দিতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জানা আছে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিতে কী করতে হয় । সুতরাং আমাকেও এখানে একটি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । তবে তদন্তের জন্য আমাকে একবার কেন 100 বার ডাকলে আমি যাব । আমি আমার তরফে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করব ৷ " এরপরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে বলেন, "তদন্তকারী সংস্থা জিজ্ঞাসাবাদ করতে এলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে পড়েন, বলেন তদন্তকারী সংস্থাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেবে না ।"
আজ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে মুকুলবাবু বলেন, "মানুষকে ভুল বোঝানো হচ্ছে । এই ভুল থেকে বের করতে আমরা সবার বাড়ি বাড়ি যাব । এই আইন কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয় ৷ এই আইন আনা হয়েছে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের ভারতে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য । কিন্তু এই আইনে তো কোথাও বলা হয়নি মানুষের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হবে । "
উল্লেখ্য, 2010 সালের 4 জুন লাভপুরের নবগ্রামে তিন ভাই কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখ খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় মুকুলবাবুর ৷ ঘটনায় মণিরুল ইসলামসহ 52 জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয় লাভপুর থানায় । প্রথম চার্জশিটে ৪২ জনের নাম দেয় পুলিশ । নাম বাদ যায় মণিরুল ইসলামের । যা নিয়ে রীতিমত বিতর্ক তৈরি হয়েছিল । কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনার পুনরায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ । সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম দেওয়া হয় মণিরুল ইসলামের । এমনকী, ঘটনায় প্ররোচনায় দেওয়ার অভিযোগে নাম জড়ায় মুকুলবাবুর ।